পাহাড়ে যেন বৃষ্টি থামছে না। এক টানা চলছে অবিরাম বৃষ্টি। কখনো ভারি, কখনো মাঝারি, আবার কখনো গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। তাতে বেড়েছে পাহাড় ধসের শঙ্কা। তাই উৎকন্ঠায় পাহাড়ের বাসিন্দারা।
বান্দরবান টানা বর্ষণের ফলে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামীণ সড়কগুলোর দু’পাশে মাটি সরে ও পাহাড়ের মাটি পড়ে যোগাযোগ ব্যাঘাত ঘটছে। বর্ষন অব্যাহত থাকলে যেকোন সময় ধসে পড়তে পারে পাহাড়, এমন আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।
অন্যদিকে আবহাওয়া অফিস বলছে, সক্রিয় মৌসূমি বায়ু অব্যাহত থাকার কারণে এ বৃষ্টি চলমান থাকবে আরো দুই-তিনদিন।পাহাড় ধসে প্রাণহানি বন্ধে পাহাড়ের পাদদেশে মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে বসবাসকারী লোকজনদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে বলা হচ্ছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। তবে আজ রবিবার বিকাল পাঁচটায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান, সংস্থার পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয়নি।
তবে সকালের পর থেকে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। অবিরাম বর্ষণে বান্দরবানে সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে আগের চেয়ে।
পরিবেশ নিয়ে কাজ করে এমন কয়েকটি বেসরকারি সংস্থার জরিপ থেকে জানা গেছে, সদর উপজেলার কালাঘাটা, কাসেমপাড়া, ইসলামপুর, বনরূপা পাড়া, হাফেজঘোনা, বাসস্টেশন এলাকা, স্টেডিয়াম এলাকা, নোয়াপাড়া, কসাইপাড়া, লামা উপজেলার হরিনমারা, তেলুমিয়া পাড়া, ইসলামপুর, গজালিয়া, মুসলিম পাড়া, চেয়ারম্যানপাড়া, হরিণঝিড়ি, টিঅ্যান্ডটি এলাকা, সরই, রুপসীপাড়া, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার উত্তরপাড়া, বাইশফাঁড়ি, আমতলী, রেজু, তুমব্রু, হেডম্যানপাড়া, মনজয় পাড়া, দৌছড়ি, বাইশারী, রুমা উপজেলার হোস্টেলপাড়া, রনিনপাড়াসহ ৭টি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পাহাড়ের পাদদেশে অপরিকল্পিতভাবে বসতি গড়ে তুলেছে প্রায় ৩০ হাজারেরও বেশি পরিবার। এবছরও পাহাড়ের পাদদেশে নতুন নতুন বসতি গড়ে ওঠায় গত বছরের তুলনায় ঝুঁকিপূর্ণ পরিবারের সংখ্যা আরও অনেক বেড়ে গেছে।
এ ব্যাপারে বান্দরবানের মৃত্তিকা কর্মকর্তা মাহাবুব আলম বলেন, পাহাড়ের মাটিগুলো অম্ল প্রকৃতির অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারনে মাটির উপরের অংশ ক্ষয়ে যায়। পানি মাটির গভীরে প্রবেশ করে, ড্রেনের সৃষ্টি করে এতে মাটির বন্ডিংস সরে যায়। ফলে পাহাড় ধ্বস হয়, এছাড়াও পাহাড় কাটা জুম চাষ পাথর উত্তোলন, নির্বিচারে বৃক্ষ কর্তন ইত্যাদি কারনে পাহাড়ের মাটি দূর্বল হয়ে যায়। অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারনে একসময় মাটি ধ্বসে হয়ে পড়ে।