বান্দরবানের আলীকদম উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কালামের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রদান করেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানসহ ৪ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, এই ব্যাপারে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার বরাবরে উপজেলাটির চেয়ারম্যানরা অনাস্থা প্রস্তাব পাঠিয়েছে।
পাহাড়বার্তার কাছে আসা অনাস্থা প্রস্তাব অনুসারে জানা যায়, গত ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীর (এডিপি) আওতায় উক্ত উপজেলায় সাধারণ ও বিশেষ কিস্তিতে ১ কোটি প্রায় ১১ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া যায়। উপজেলা পরিষদ উন্নয়ন সহায়তা তহবিল ব্যবহার নির্দেশিকার ৭নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রকল্প বাছাই, প্রস্তুতকরণ ও অনুমোদন পদ্ধতিতে উপজেলা পরিষদে ১০ (দশ) সদস্য বিশিষ্ট প্রকল্প বাছাই কমিটির আনুষ্ঠানিক কোন সভা হয়নি। চার ইউপি চেয়ারম্যানকে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রাখা হয়।
সরকারের ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় ও বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীর (এডিপি) বরাদ্দ থেকে ২০% বরাদ্দকৃত অর্থে উপজেলা পরিষদ কর্তৃক প্রকল্প গ্রহণের নিয়ম রয়েছে। বিগত কয়েকটি অর্থবছরে চেয়ারম্যান কালাম নিজের সুবিধা ও খেয়ালখুশিমত মনগড়া প্রকল্প গ্রহণ করছেন। এসব প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নের মানা হয়নি সংশ্লিষ্ট নীতিমালা।
‘রেপারপাড়া বাজারস্থ টোল আদায় পয়েন্ট’ ইজারা প্রদানে সংশ্লিষ্ট ইজারাদারের সাথে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গোপন আঁতাতের মাধ্যমে কম রাজস্ব দেখিয়ে ইজারা দিয়ে আসছিলেন। গত ৪ মে ২০১৭ এ টোল পয়েন্টটি মাত্র ১২ লক্ষ ১০ হাজার টাকায় ইজারা দেওয়ার জন্য একক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান। কম রাজস্ব দিয়ে পূর্বের ইজারাদারকে স্বল্পমূল্যে টোল পয়েন্ট ইজারা প্রদান করেন।
আরো জানা গেছে, চেয়ারম্যান আবুল কালাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ১০ ও ৩০ ধারায় বিচারাধীন মামলার আসামী। বর্তমানে এ মামলাটি বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন। একই পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শিরিনা আক্তার বাদী হয়ে বিজ্ঞ বিচারক, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল, বান্দরবান আদালতে এ মামলা দায়ের করেন। গত ০৭/০৭/২০১০ ইং মামলার বাদী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ২৭ (১গ) ধারার বিধানমতে অপরাধ আমলে গ্রহণ করার প্রার্থনা করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন।
আরো জানা গেছে, আলীকদম উপজেলায় সরকারি উন্নয়ন কর্মকান্ডে সার্বিক গতিশীলতা আনয়ন, দুর্নীতিমুক্ত উপজেলা পরিষদের কার্যাবলী বাস্তবায়নের স্বার্থে চেয়ারম্যান কালামের বিরুদ্ধে উপজেলা পরিষদ (সংশোধন) আইন, ২০১১ এর ১৩ক (২) উপ-ধারা (১) মোতাবেক অনাস্থা প্রদান করেন এবং বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণে জন্য আবেদন জানান উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান কাইন থপ ম্রো, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ক্রাত পুং ম্রো, ফোগ্য মার্মা, জামাল উদ্দিন,ফেরদৌস রহমান।
এই ব্যাপারে আলীকদমের উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কালামের সাথে একাধিকবার পাহাড়বার্তা থেকে ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।