আলীকদমের ৩ ইটভাটা গিলে খাচ্ছে পাহাড় ও ফসলি জমি

প্রশাসন নিরব !

NewsDetails_01

বান্দরবানের আলীকদম উপজেলায় পাহাড় ও ফসলি জমির মাটি কেটে নিচ্ছে ৩ ইটভাটায়। বন ও পরিবেশ আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দিনের পর দিন অবৈধভাবে পাহাড় ও ফসলি জমির মাটি কাটলেও নেওয়া হচ্ছে না আইনি কোন ব্যবস্থা। ইট ভাটাগুলোর কারণে বিলুপ্ত হচ্ছে শত শত একর সবুজ পাহাড় ও ফসলি জমি। স্থানীয় প্রশাসন মাঝে মাঝে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে জরিমানা করলেও লাগাম টানতে পারছে না ইটভাটার মালিকদের।

তারাবুনিয়ার এবিএম,আমতলী এলাকায় ইউবিএম,আলীবাজার এলাকায় এফবিএম এই তিনটি ইটভাটা আশেপাশের তিন/চার কিলোমিটার এলাকায় নির্বিচারে মাটি কাটচ্ছে। ফসলি জমি ও পাহাড়ের মাটি কেটে ইট তৈরীর জন্য জমা করা হচ্ছে ইটভাটায়।

এসব এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, এস্কেলেটর (ভ্যাকু) দিয়ে মাটি কেটে ডাম্পার ট্রাক ভর্তি করে ইটভাটায় নিয়ে যাচ্ছে। তারাবুনিয়া এলাকায় একটি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে ফসলি জমি ও আমতলী ম্রো পাড়াস্থ রাস্তার পাশে পাহাড় কাটছেন এবিএম ও ইউবিএম ইটভাটার মালিকরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গাড়ী চালক বলেন,এবিএম ইটভাটার ম্যানেজার আব্দুল কাদেরের নির্দেশে মাটি কাটছি।মাটি গুলো এবিএম ইটভাটায় সরবরাহ করা হচ্ছে।

NewsDetails_03

স্থানীয় গিয়াসউদ্দিন ও গফুর আহম্মেদ বলেন, দিনের বেলায় মাটি কাটা কিছুটা সীমিত হলেও রাতে মাটি কাটা ও মাটি পরিবহন বেপরোয়া হয়ে যায়। এভাবে মাটি কাটার ফলে একসময় পাহাড় ও ফসলি জমি বিলীন হয়ে যাবে।সরকারি সড়ক গুলো ইটভাটার মালিকদের দখলে চলে গেছে। ইট ও মাটির গাড়ী চলাচলে সড়কগুলো দিয়ে পায়ে হাঁটাও দুস্কর।

এই ব্যাপারে এবিএম ইটভাটার ম্যানেজার আব্দুল কাদের বলেন,জমির মালিক বিক্রি করছে আমরা কিনেছি। জমির মালিক কাটা অনুমতি দিয়েছে। মালিকানা জমির মাটি কাটতে অনুমতি লাগে কিনা জানা নেই।

ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইনে (২০১৩) রয়েছে, কোনো ব্যক্তি ইট প্রস্তুত করার উদ্দেশ্যে কৃষিজমি বা পাহাড় বা টিলা থেকে মাটি কেটে বা সংগ্রহ করে ইটের কাঁচামাল হিসেবে তা ব্যবহার করতে পারবে না। এ আইন লঙ্ঘনের জন্য সর্বোচ্চ দুই বছর কারাদণ্ড বা দুই লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।

জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শরুপ মজুমদার জানান, লকডাউন শেষ হলে আলীকদমের ইটভাটাগুলোয় অভিযান পরিচালনা করা হবে। পাহাড়ে ইটভাটার অনুমতি দেওয়ার সুযোগ নেই।

আলীকদম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.সায়েদ ইকবাল জানান,মাটি কাটার অভিযোগ পেলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করা হচ্ছে। স্থানীয়রা সচেতন হলে পাহাড় ও ফসলী জমি কাটা বন্ধ করা আরও সহজ হবে।

আরও পড়ুন