বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার পর্যটনকেন্দ্র আলী সুড়ঙ্গের যাতায়াতের জন্য তৈন খালের উপর পিএসসি গার্ডার ব্রীজ নির্মাণে ঠিকাদারী প্রতিষ্টান ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতি করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে, এমন অভিযোগ স্থানীয়দের।
আলীকদম উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অফিস সূত্রে জানা যায়, পিকেএসি-জেভি নামক ঠিকাদারী প্রতিষ্টান ৩ কোটি ৬১ লক্ষ ৬০ হাজার ৫শত ৯২ টাকায় ৭৫ মিটার লম্বা তৈন খালের উপর পিএসসি গার্ডার ব্রীজ নির্মাণের কাজটি পায়।
গত বৃহস্পতিবার পিএসসি ব্রীজের বেইজ ঢালায়ের স্থানে গেলে দেখা যায়,সিলেটি বালির পরিবর্তে স্থানীয় ফাসিয়াখালীর বালি দিয়ে পিএসসি গার্ডার বেইজের ঢালায় কাজ করছে ঠিকাদারী প্রতিষ্টান পিকেএস-জেভি নিয়োজিত শ্রমিকেরা। ঢালায় চলাকালে আলীকদম উপজেলার অতিরিক্তি দায়িত্ব পালনকারী স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী মোঃ নাজিম উদ্দিন আলীর সুড়ঙ্গে ভ্রমনে যান ও বান্দরবান জেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের ল্যাবটারী টেকনিশিয়ান ইফতেখার মাহামুদ খাবার খেতে যান। পরে উক্ত দুই কর্মকর্তা পিএসসি গার্ডার বেইজ ঢালায়ের স্থানে উপস্থিত হলেও স্থানীয় বালি দিয়ে বেইজ ঢালায়ের কাজ করছে দেখেও কোন ধরনের বাধা দেননি।
স্থানীয়রা জানান, যাদের দেখে অনিয়ম বন্ধ হওয়ার কথা,তাদের আশ্রয় প্রশ্রয়ে তাদের উপস্থিতিতেই অনিয়ম চলছে। ঢালায়ের কাজে সময় না দিয়ে উক্ত কর্মকর্তারা আনন্দ ভ্রমনে মেতে উঠেন। কাজের শুরুতে যদি এই অনিয়ম হয়, না জানি ব্রীজ শেষ হতে হতে আরও কত অনিয়ম হবে।
তারা আরো বলেন,সরকারের কোটি কোটি টাকার উন্নয়ন কাজটি অনিয়মের কারণে টেকসই হবে না। সাধারণ মানুষ কাদের ভরসা করবে, যাদের ভরসা করবে তারাইতো অনিয়মের সাথে জড়িত। কাজের শুরু থেকেই স্থানীয় বালি ব্যবহার করছিল ঠিকাদারের লোকজন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে।
পিকেএসি-জেভি ঠিকাদারী প্রতিষ্টানের সত্ত্বাধিকারী মোঃ আবছার জানান,প্রকৌশলীরা উপস্থিতিতে বেইজ ঢালায় হয়েছে,অনিয়ম হলে তাহারা বাধা দিল না কেন,সিডিউলে যেভাবে আছে আমরা সেইভাবে কাজ করছি। নিন্মমানের বালি ব্যবহারের বিষয়ে তিনি আরো বলেন,লোকেল বালির মানও সিলেটি বালির প্রায় কাছাকাছি ,আমি ঠিকাদার, আমি প্রকৌশলীর নির্দেশনায় কাজ করেছি।
আলীকদম উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনকারী প্রকৌশলী মোঃ নাজিম উদ্দিন বলেন,স্থানীয় বালির সাথে সিলেটি বালি মিশ্রণ করে বেইজ ঢালায় দেওয়া যাবে। এটি ল্যাবটারীতে পরীক্ষা করা হয়েছে । রিপোর্ট দেখতে চাইলে উত্তরে প্রকৌশলী জানান, এখনোও বালি পরীক্ষার রিপোর্ট তাহার হাতে আসেনি,রিপোর্টটি ল্যাবটারী টেকনিশিয়ানের নিকট আছে ।
এই ব্যাপারে তিনি আরো বলেন,কাজ বন্ধ করতে বলে তিনি আলীর সুড়ঙ্গে বেড়াতে গিয়েছিলাম, আমার অনুপস্থিতিতে ঢালায়ের নিয়োজিত লোকজন ঢালায় দিয়ে এটি অন্যায় করেছে। বেইজ ঢালায়ের কাজ দেখতে এসে বেড়ানো কি যুক্তিযুক্ত কিনা, জানতে চাইলে তিনি কোন প্রাসঙ্গিক উত্তর না দিয়ে হেসে বলেন, আলীকদমে অনেক উন্নয়ন এখনোও বাকি সেই বিষয়ে পজেটিভ কিছু লিখুন।
বান্দরবান জেলা স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তরের ল্যাবটারী টেশনিশিয়ান ইফতেখার মাহামুদ বলেন ,বালি পরীক্ষা করা হয়েছে, স্থানীয় বালি ও সিলেটি বালি মিশ্রণ করে ঢালায় করা যাবে, কোন ধরণের সিলেটি বালি না মিশিয়ে একক ভাবে স্থানীয় বালি দিয়ে পিএসসি গার্ডার ব্রীজের বেইজ ঢালায়ের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি জানান,সিলেটি বালি হয়তো শেষ হয়ে গেছে ,তাই স্থানীয় বালি ব্যবহার করছে।
অন্যদিকে বান্দরবান জেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু তালেব চৌধুরী সাথে মোবাইলে কথা বলতে চাইলে তিনি মিটিংয়ে আছেন, পরে কথা বলবেন বলে জানান। কিন্তু পরে তিনদিন ধরে চেষ্টা করলেও এই নির্বাহী প্রকৌশলী ফোন