আলীকদমে জেলা ছাত্রলীগ নয়, উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্দেশে কমিটি বাতিল : নেতাকর্মীদের মানববন্ধন

NewsDetails_01

আলীকদমে কমিটি বাতিলের প্রতিবাদে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মানববন্ধন
আমাদের উপরের নির্দেশ ছিল, তাই বিলুপ্ত করেছি। কে নির্দেশ দিয়েছে? আলীকদম উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্দেশনা পেয়েছি,তাই বিলুপ্ত করেছি। বান্দরবানের আলীকদমে জেলা ছাত্রলীগের নির্দেশনা ছাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের নির্দেশে উপজেলা ছাত্রলীগ কর্তৃক একই উপজেলার ২টি ইউনিয়নে ছাত্রলীগের কমিটি বাতিল করা প্রসঙ্গে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ সোহেল একথা বলেন।
বান্দরবানের আলীকদমের সদর ইউনিয়ন ছাত্রলীগ ও নয়াপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কমিটি বাতিল করায় মানববন্ধন ও প্রতিবাদ মিছিল করেছে আলীকদম সদর ইউনিয়ন ও নয়াপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। আজ শনিবার বিকালে মিছিলটি আলীকদম বাজার প্রদক্ষিণ করে এবং পরে আলীকদম প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে।
মিছিল ও মানববন্ধন শেষে আলীকদম সদর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ কফিল উদ্দিন বলেন,উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অবৈধ ভাবে কোন রেজুলেশন বা মিটিং ব্যাতিত ফেসবুকের মাধ্যমে কমিটি ভেঙ্গে দেয়,যা সম্পূর্ণ গঠনতন্ত্র বিরোধী। এমন আচরণে আমরা খুব লজ্জিত ও মর্মাহত। আলীকদম উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক জমি দখল, রিজার্ভ ফরেস্ট থেকে গাছ চুরিসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত, যা স্থানীয়রা সবাই অবগত। আমরা সক্রিয় থাকার পর ও নিস্ক্রিয়,আর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ সোহেল এক সাথে দুইটি এনজিওর চাকরী ও মাঝে মাঝে বিভিন্ন শুমারীও করেন। দুইটি চাকরী ও শুমারী করে কেউ সক্রিয় থাকতে পারে আমাদের জানা নেই।
তিনি আরও বলেন, আগামী উপজেলা ছাত্রলীগে সৌরভ পাল ডালিমের মনোনীত ব্যক্তিদের আনতে আমাদের সরিয়ে দিচ্ছেন। আমরা বিগত নির্বাচনগুলো দলীয় প্রার্থীর জন্য কঠোর শ্রম দিয়েছি যার মূল্য আমার এভাবে পেলাম ? আমরা এমন কাজের সঠিক বিচার চাই,আমাদের অভিভাবকের নিকট থেকে।
৩ নং নয়াপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি সুইলামং মার্মা বলেন,আমাদের কমিটি গতিশীল করার জন্য নাকি বিলুপ্ত করেছে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। কিন্তু উনারা কি সক্রিয়? কয়জন আছে রাজপথে? আমরা না আসলে, তারা তো কোনকিছু করতে পারেনা। উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ব্যক্তিগত আক্রোশ মেটাতে বারংবার আমাদের কমিটি নিয়ে, এর আগে নয়াপাড়ার ইউনিয়ন কমিটিও টাকা ধার নিয়ে না দিলে, প্রতিবাদ করায় সে কমিটিও ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। তখনও অজুহাত হিসেবে সংগঠন গতিশীল করার কথা প্রচার করা হয়। আসলে কি গতিশীল করার জন্য নাকি আপনাদের স্বার্থের জন্য করেন। আমাদের বললে আমরা নিজেরা সম্মেলনের মাধ্যমে অব্যহতি নিতাম।
এ বিষয়ে আলীকদম উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ সোহেল আরো বলেন, নির্দেশ দেওয়ার পর তাদের সাথে বসছিল কিনা বা বিলুপ্তির সময় উক্ত ইউনিয়ন ছাত্রলীগের অধিকাংশ নেতাকর্মী উপস্থিত ছিল কিনা জানতে চাইলে উত্তরে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো সোহেল বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্দেশনা পেয়েছি,তাই বিলুপ্ত করেছি।
আলীকদম উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ অধিকাংশ নেতাকর্মী নিস্ক্রিয়, বিবাহিত ও ভূমি দখলসহ নানা অনিয়মে জড়িত এমন অভিযোগের উত্তরে সাধারণ সম্পাদক মোঃসোহেল বলেন, উপজেলা নেতারা কি করবে তা ইউনিয়ন নেতাকর্মীদের বলার প্রয়োজন নেই। তাছাড়া উপজেলার বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগ সিদ্ধান্ত নেবে। উপজেলার এখতিয়ার আছে তাই কমিটি বিলুপ্ত করেছে।
এবিষয়ে বান্দরবান জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি কাউসার সোহাগ ফোনে জানান,নিস্ক্রিয় থাকায় দুইটি কমিটি বিলুপ্তির করবে বলে জানিয়েছে। কিন্তু বিলুপ্তির সময় উক্ত কমিটির অধিকাংশ নেতাকর্মী উপস্থিত থাকতে হবে ও তাদের অবগত করতে হবে। তিনি আরও জানান, যদি কমিটি বিলুপ্তি করার সময় গঠনতন্ত্র অনুসরণ না করে এবং কেউ অভিযোগ করলে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখন পর্যন্ত কারও মৌখিক বা লিখিত কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
এদিকে জেলা ছাত্রলীগের নির্দেশনা ছাড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্তি করতে উপজেলা ছাত্রলীগকে উপজেলা আওয়ামীলীগ নির্দেশ দিতে পারে কিনা এই বিষয়ে আলীকদম উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক দুংড়িমং মার্মা পরে জানাবেন বলে কল কেটে দেন এবং পরে দুইবার চেষ্টা করেও কল রিসিভ করেনি।

আরও পড়ুন