আলীকদমে পানি শোধনাগারের অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে পেরিয়ে গেল ১০ বছর
দূর্নীতির কারনে সমালোচনার মুখে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর
বান্দরবান জেলার বিভিন্ন উপজেলায় পানির সংকটে হাহাকার অবস্থা বিরাজ করলেও সংকট নিরসনে প্রতিবছর নিত্যনতুন প্রকল্প গ্রহন করা হলেও দূর্নীতির কারনে এসব প্রকল্প বছরের পর বছর আলোর মুখ দেখেনা, ফলে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে বান্দরবান জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বান্দরবানের আলীকদম উপজেলায় পানি শোধনাগারের কাজ ১০ বছরেও শেষ করা যায়নি। উপজেলায় বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দেওয়ায় তৎসময় মহা আয়োজনে উপজেলার থানাপাড়ায় পানি শোধনাগার প্রকল্পটির কাজ শুরু হলেও মাত্র ৬ মাস পার হতেই অর্থ সংকটের অজুহাতে প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এর পর অনেক বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত করতে পারেনি উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।
জানা গেছে,২০১১ সালের ১১ জুনে প্রকল্পটি উদ্ধোধন করেন তৎকালীন পার্বত্য উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান ও বর্তমান পার্বত্য বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং।
সরজমিনে দেখা গেছে,পানি শোধনাগারটি পরির্চযার অভাবে ময়লার স্তুপ ও আশেপাশের লোকের মল ত্যাগের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। পানি শোধনাগারে পাশ দিয়ে হেটে যাওয়া বর্তমানে দুস্কর। জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর বর্ষা মৌসুমে অগভীর রিংওয়েল স্থাপন ও পানি শোধনাগারটি না হওয়ায় খাবার পানি ও ব্যবহারের পানির তীব্র সংকট পুরো উপজেলায়। মানুষের পানি কষ্ট কমাতে সেনাবাহিনী ও স্থানীয় অনেকে গাড়ীতে করে পানি সরবরাহ করছেন বিভিন্ন পাড়ায়।
স্থানীয় বাসিন্দা রাসেল মজুমদার ও মোহাম্মদ রফিক বলেন,বর্ষা মৌসুমে ও অপরিকল্পিত রিংওয়েল স্থাপনের ফলে শুষ্ক মৌসুমে পানি সংকট দেখা দেয় রিংওয়েল গুলোতে। অনেক রিংওয়েল স্থাপনের কিছুদিন পর ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। পানি সংকট নিরসনের আশা করলেও দীর্ঘদিন ধরে পানি শোধনাগারটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। কবে নাগাদ প্রকল্পটির কাজ শেষ হবে? কখন পুরো উপজেলা পানির সুবিধা পাবে জানি না।
উপজেলায় স্বেচ্ছায় পানি সরবরাহকারী মো.ফারুক বলেন,পান বাজার,পূর্বপালং পাড়া, দানু সর্দার পাড়া,উত্তর পালং পাড়াসহ উপজেলার অনেকগুলো এলাকায় তীব্র পানির সংকট চলছে। এ সংকট নিরসনের জন্য প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও দৈনিক ৪০-৫০ হাজার লিটার পানি দিচ্ছি বিভিন্ন পাড়ায়।
আলীকদম সদর ইউপি চেয়ারম্যান নাছির উদ্দিন বলেন, সদরে কোথাও পানির সংকট ছাড়া এলাকা নেই,পানির এমন সমস্যা আর কোথাও আছে কিনা জানা নেই। পানি শোধনাগারটি হলে উপজেলার পানি সংকট লাঘব হবে। এটি করা এখন খুবই জরুরী।
উপজেলা ভারপ্রাপ্ত জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মনির আহম্মেদের সাথে মুঠোফোনে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।
কবে নাগাদ পানি শোধনাগার জনগণের জন্য উম্মুক্ত হবে জানতে চাইলে জেলা জনস্বাস্থ্যের নিবার্হী প্রকৌশলী শর্মিষ্ঠা আচার্য্য জানান, পানি শোধনাগারের অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে ৯ কোটি ৪৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। এবিষয়ে কাজ চলছে, দ্রুত পানি শোধনাগারের কাজ শুরু হবে।