আলীকদম উপজেলা চেয়ারম্যানের গাড়ীতে করে পাচার অবৈধ বিদেশি সিগারেট !

৩৩ লক্ষ টাকার সিগারেট জব্দ

বান্দরবানের আলীকদমে যৌথ অভিযানে ২২ কার্টুন বিদেশি সিগারেট উদ্ধার করেছে বিজিবি ও পুলিশ। এই সময় কাউকে আটক করা না গেলেও ম্রো ন্যাশনাল পার্টির সাবেক কমান্ডার মেনরুম ম্রো দাবি করেন, সিগারেট গুলো উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কালাম এর নিজস্ব গাড়িতে করে পাচার করছিল।

গত মঙ্গলবার ভোর রাতে উপজেলার নয়াপাড়া ইউনিয়নের ঠান্ডা ঝিড়ি এলাকায় মালিকবিহীন ২২ কার্টুন মোট ১১ হাজার প্যাকেট বিদেশী সিগারেট পরিত্যক্ত অবস্থায় ৫৭ ব্যাটালিয়ন ও পুলিশ উদ্ধার করে বলে নিশ্চিত করেন, আলীকদম ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল আকিব জাভেদ।

তিনি আরও জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিজিবি ও পুলিশ সদস্যের সমন্বয়ে টহলদল নয়াপাড়া ইউনিয়নের ঠান্ডার ঝিরি নামক স্থানে মালিকবিহীন অবস্থায় ১১ হাজার প্যাকেট বিদেশী অরিস সিগারেট জব্দ করা হয়। জব্দ করা সিগারেটের বাজার মূল্য ৩৩ লক্ষ টাকা।

তবে উপজেলার ম্রো ন্যাশনাল পার্টির কমান্ডার মেনরুম ম্রো বলেন, পরিত্যক্ত বিদেশি সিগারেটগুলো উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম এর গাড়ীতে করে সদরে আনা হচ্ছে। প্রথম গাড়ীতে উপজেলা চেয়ারম্যান ও দ্বিতীয় গাড়ীতে বিদেশি সিগারেট ছিল। উপজেলা চেয়ারম্যানের সাথে অবৈধ সিগারেট আনায় জড়িত ছিল পানবাজারের সাইফুল।

আলীকদমে পুলিশ ও বিজিবির যৌথ অভিযানে জব্দ করা বিদেশি সিগারেট। ছবি-পাহাড়বার্তা

মেনরুম ম্রো আরও বলেন, চেয়ারম্যানের কাছে ২১ লক্ষ পায় আমরা, তাই সিগারেটসহ দ্বিতীয় গাড়ী আটকানো হয়। পরে উপজেলা চেয়ারম্যান ঘটনাস্থলে আসলে আমার সাথে হাতাহাতি হয়, এমন সময় আমার সাথে থাকা অন্যরা চেয়ারম্যানের গাড়ী থেকে বিদেশি সিগারেট নিয়ে জঙ্গলে ফেলে দেয়। পরে বিজিবি জঙ্গল থেকে সিগারেট গুলো উদ্ধার করে।

২১ লক্ষ টাকা কি বাবদ পাওনা চেয়ারম্যানের কাছে? এমন প্রশ্নের উত্তরে মেনরুম ম্রো বলেন, মায়ানমার সীমান্ত দিয়ে আসা অবৈধ গরু থেকে চেয়ারম্যানের নির্দেশে চাঁদা আদায় করা হত। গরু প্রতি উপজেলা চেয়ারম্যান দেড় হাজার টাকা ধার্য্য করে দেয়। সেই টাকা থেকে গরু আনায় নিয়োজিত শ্রমিকদের ৫ শত টাকা করে ২৭ লক্ষ টাকা পাওনা, এই টাকা না দেওয়ায় আমরা সিগারেটসহ গাড়ি আটক করি।

এই বিষয়ে আলীকদম উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কালাম এর সাথে ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

উল্লেখ্যা, গত বছর আলীকদম উপজেলা সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমার থেকে অবৈধ গরু আনার বিষয়ে মেনরুম ম্রো ও চেয়ারম্যান আবুল কালামের একটি ফোন রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হলে জেলা জুঁড়ে তোলপাড় শুরু হয়।

এবিষয়ে আলীকদম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বলেন, খবর পেয়ে তদন্ত ওসির নেতৃত্বে একটি টইল দল পাঠায়, তবে ঘটনাস্থলে কাউকে পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুন