একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেছেন, ২০১৮ সালে এসে বিএনপির ভোট ৩০ শতাংশ আর আওয়ামী লীগের ভোট ৪২ শতাংশ হয়েছে। দেশের এবং জনগণের উন্নয়ন করার কারণে আওয়ামী লীগের ভোট বেড়েছে। এ বিষয়ে সমীক্ষা আছে বলেও দাবি করেন তিনি।
ঢাকার একটি হোটেলে আজ মঙ্গলবার বিকেলে একটি অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে এইচ টি ইমাম এ কথা করেন। ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমাদের উন্নয়ন’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ইয়ুথ বাংলা কালচারাল ফোরাম নামের একটি সংগঠন। অনুষ্ঠান শেষে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ ও তাঁর ওপর নির্মিত একটি তথ্যচিত্র এবং মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সাতটি নাটকের বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
প্রতিপক্ষকে দুর্বল না ভাবার আহ্বান জানিয়ে দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে এইচ টি ইমাম বলেন, প্রতিপক্ষকে দুর্বল ভাবলে চলবে না। তারা মোটেও দুর্বল না। আত্মতুষ্টির কোনো জায়গা নেই। কাউকে জিতিয়ে দেওয়া হবে, এটা ভাবার কোনো কারণ নেই। জেতার মতো, এলাকায় জনপ্রিয় এবং দলের জন্য কাজ করতে পারবেন, এমন লোকদেরই মনোনয়ন দেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, ১৯৯১, ১৯৯৬ এবং ২০০১ সালে বিএনপির ভোট ছিল ৩০ শতাংশ। ২০১৮ সালেও বিএনপির ভোট ৩০ শতাংশ। আওয়ামী লীগ দেশের এবং জনগণের উন্নয়ন করার কারণে ভোট বেড়ে ৪২ শতাংশ হয়েছে। এ বিষয়ে সমীক্ষা আছে।
আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটির চেয়ারম্যান এইচ টি ইমাম বলেন, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে নভেম্বরের প্রথম দিকে। এরপর নির্বাচনী আইনকানুন মানতে হবে, যা কিছু করার এখনই করতে হবে। তিনি বলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর সেভাবে কোনো অনুষ্ঠান করা যাবে না। তখন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের অধীন সবকিছু চলে যাবে। সে অনুযায়ী সভা-সমাবেশ করতে হবে। তখন আর চাইলেই এমন অনুষ্ঠান করা যাবে না। তিনি বলেন, তাই হাতে আর সময় খুব বেশি নেই। আর তিন সপ্তাহ সময় আছে, এই কম সময়ের মধ্যে সবার কাছে সরকারের উন্নয়ন তুলে ধরার জন্য সবাইকে কাজ করতে হবে।
নির্বাচনে জোর-জবরদস্তি না করার কথা জানিয়ে এইচ টি ইমাম বলেন, ‘নির্বাচনে বিজয়ের কোনো বিকল্প নেই। আমরা জোর-জবরদস্তি করব না। ভোট ডাকাতি করে বিজয়ী হব না।’ তিনি বলেন, এবারের নির্বাচনে নবীন ভোটার বেশি। এই নবীন ভোটার বিএনপি-জামায়াতের কুকর্ম সম্পর্কে জানে না। এই বিষয়গুলো নবীনদের কাছে পৌঁছাতে হবে।
এইচ টি ইমাম বলেন, বিএনপি-জামায়াতের একটিই লক্ষ্য, সেটি হলো বাংলাদেশকে আবারও শ্মশানে পরিণত করা। আওয়ামী লীগ দেশকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা একটি ভুল করেছি। আমরা মুক্তিযুদ্ধ ও দেশবিরোধী শক্তিকে সমূলে উৎপাটন করিনি। তারা আজও সক্রিয়, তাদের সমূলে উৎপাটন করতে হবে।’
নির্বাচন সামনে রেখে দলের প্রচারের বিষয়ে এইচ টি ইমাম বলেন, নির্বাচনী প্রচারে আক্রমণাত্মক হতে হবে। শুধু বিরোধী দলের প্রচারের পাল্টা দিলে হবে না। পাল্টা প্রচার করতে হবে আক্রমণাত্মকভাবে। কারণ এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পরাজয় মানে দেশটা পিছিয়ে যাওয়া। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পরাজিত হলে দেশ হোঁচট খাবে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে সাংস্কৃতিক জগতের বেশ কয়েকজন অভিনেতা-অভিনেত্রী আওয়ামী লীগ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আবারও কেন প্রয়োজন, তার ওপর বক্তব্য দেন। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে কুমার বিশ্বজিৎ, শম্পা রেজা, আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, উপদপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, প্রধানমন্ত্রীর উপ প্রেসসচিব আশরাফুল আলম খোকন, সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মো. এ আরাফাত প্রমুখ বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মহিলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক রোকেয়া প্রাচী।