রাঙামাটি শহরে কাপ্তাই লেকে ভবন ধসে নিহতের সংখ্যা বেড়ে চারজনে দাড়িয়েছে। আর এ ঘটনায় কয়েকজন নিখোঁজ আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মঙ্গলবার বিকেল সোয়া পাঁচটায় শহরে কাপ্তাই লেক ঘেসে গড়ে তোলা একটি দোতলা ভবন সরাসরি পানিতে হেলে পড়ে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন পিংকি (১৩) এবং মোহাম্মদ জাহিদ (৪০), উম্মে হাবিবা রুনা আক্তার ও সামাদুল। রুনা রাঙামাটি সরকারী কলেজের অর্নাসের শিক্ষার্থী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,বিকেল সোয়া পাঁচটায় কাপ্তাই লেকে ঘেসে গড়ে উঠা ভবনটি ৭-৮ মিনিটের মধ্যে পুরাই ডেবে যায়, ডেবে যাওয়ার সময় কেউ বের হতে পেরেছে কিনা নিশ্চিত করা যায়নি। ধসে পড়া ভবনের ভেতরে সর্বমোট কতজন মানুষ আটকা পড়েছে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তা জানা না-গেলেও ভেতরে যে আরো মানুষ আছে তা নিশ্চিত করেছে সংশ্লিষ্টরা। ভবনে ৪ টি পরিবার বসবাস করে।
আরো জানা গেছে, এই ঘটনার সাথে সাথে স্থানীয়রা প্রথম দিকে উদ্ধার কাজ চালালেও পরে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক, দমকল বাহিনী, পুলিশসহ প্রশাসনের লোকজন ঘটনাস্থল ঘিরে উদ্ধার তৎপরতায় অংশগ্রহন করে, পরে নৌবাহিনী, সেনাবাহিনী সদস্যরা যোগ দেয়। তবে রাতের অন্ধকার হওয়ার কারণে উদ্ধার তৎপরতা ব্যহত হচ্ছিলো। একে একে নিহত ও আহতদের উদ্ধার করা হচ্ছে। শহরের রিজার্ভ বাজারস্থ সরকারি মহিলা কলেজ এলাকায় অবস্থিত এই ভবনটির মালিক ঠিকাদার নাঈম উদ্দিন টিটু। নিহতদের স্বজনের আহাজারিতে এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে উঠে। নিহত জাহিদের বড় ভাই ফজলুল হকের কান্নায় মানুষ আবেগ-প্রবণ হয়ে উঠে। তিনি বিলাপ করে বলেন, “আমার ভাইরে ফিরিয়ে দে, আমার ভাইরে ফিরিয়ে দে…..ও ভাই………….তুই কই”।
স্থানীয়রা আরো জানায়, বিকেল সোয়া পাঁচটার সময় টিটুর মালিকানাধীন দোতলা ভবনটির নিচের মাটি সরে গিয়ে কাপ্তাই লেকের পানিতে পড়ে যায়। ভবনটির নীচতলার পুরোটি পানির নীচে ডুবে যায়। এসময় ভবনের ভেতরে বাচ্চাসহ বেশ কয়েকজন মানুষ রয়েছে বলে জানা গেছে। লেকের পাড়ের জায়গা দখল করে অবৈধভাবে নির্মান করা হয় এই ভবন। সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, রাত সাড়ে এগারটা নাগাদ চার নিহতের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ মানুষের সন্ধানে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কাজ করছে।
রাঙামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চিত্ত রঞ্জন পাল জানান, দ্বিতল ভবন ধ্বসের ঘটনায় মোট চারজন নিহত হয়েছেন শেষ পর্যন্ত কতজন নিখোঁজ আছেন তা নিশ্চিত করতে পারেননি তিনি।
এদিকে ঘটনাস্থলে রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান,সেনাবাহিনীর জোন কমান্ডার লে:কর্ণেল মালিক শামস উদ্দীন মো: মঈনসহ স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতারা উপস্থিত থেকে জেনারেটর চালিয়ে আলোর ব্যবস্থা করে উদ্ধার প্রক্রিয়া তদারকি করেছেন।