উ চ হ্লা ভান্তে করোনায় মারা যায়নি : বান্দরবানের সিভিল সার্জন

NewsDetails_01

চট্টগ্রামের ম্যাক্স হাসপাতাল লকডাউন ও সেখানের চিকিৎসক ও নার্সদের হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো, অন্যদিকে একই সময়ে উক্ত হাসপাতালে বান্দরবানের খিয়ং ওয়া কিয়ং এর বিহারের অধ্যক্ষ ও বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরু উপঞঞাজোত মহাথেরো ওরফে উ চ হ্লা ভান্তে চিকিৎসাধীন থাকার কারনে ভান্তের পরিবারের পক্ষ থেকে মৃত্যু নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টির কারনে অনেকে ভান্তে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বলে মনে করেন। আর এই বিষয়টি নিয়ে পাহাড়বার্তা’র নির্বাহী সম্পাদক এস বাসু দাশ’কে ফোনে বান্দরবানের সিভিল সার্জন অং সুই প্রু নিশ্চিত করেন “তিনি করোনায় মারা যায়নি”।

বান্দরবানের সিভিল সার্জন অং সুই প্রু পাহাড়বার্তাকে বলেন, ভান্তে করোনায় মারা যাননি, যেদিন নিয়ে গেছে (শুক্রবার) সেদিন মারা গেছে। ভান্তের করোনা টেস্ট করা হয়েছে কিনা এই ব্যাপারে বলেন, সেটা আমরা চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন অফিসে খোঁজ নিচ্ছি। উনার করোনা নিয়ে ডাক্তাররা কোন ধরণের সন্দেহ করছেনা। ওনার আসলে ছিলো, হার্ট অরজিন ছিলো। আমি মানুষের কথায় বিশ্বাস করছিনা, সিভিল সার্জন অফিসের কথা বিশ্বাস করছি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার সারোয়াতলী ইউনিয়নের পূর্ব খিতাপচরের বাসিন্দা ৭০ বয়সী ওই ব্যক্তি গত শনিবার হৃদরোগ নিয়ে ভর্তি হন। চিকিৎসকদের সন্দেহ হওয়ায় ওইদিন বিকালেই তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়। তার নমুনা পরীক্ষার ফল নেগেটিভ এসেছে এমন খবর রোববার সন্ধ্যার পর ম্যাক্স হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। দুইদিন বাদে এর মধ্যে মঙ্গলবার সকালে সুস্থ বোধ করায় ওই রোগী হাসপাতাল ছেড়ে যান। পরে সেদিন রাতেই ওই রোগীর নমুনা পরীক্ষার ফলাফল ‘পজিটিভ’ আসে। ঐসময় বান্দরবানের বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরু উ চ হ্লা ভান্তে একই হাসপাতালে (সোমবার) চিকিৎসাধীন ছিলেন এবং সোমবার সকালে (১৩ এপ্রিল) চট্টগ্রামের ম্যাক্স হাসপাতালে তার লাইফ সাপোর্ট খুলে ফেলা হয়, তাই অনেকে মনে করছেন তিনিও করোনায় আক্রান্ত।

NewsDetails_03

ম্যাক্স হাসপাতালের পরিচালক ডা. লিয়াকত আলী বলেন যারা চিকিৎসা করেছিলেন তাদের পিপিই ছিল। সরাসরি সংস্পর্শে আসা চারজন ডাক্তারসহ মোট ২৪ জন আমাদের হাসপাতালেই প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছেন।

জানা যায়, উপঞঞাজোত মহাথেরো ১৯৫৫ সালে ২২শে ডিসেম্বর বান্দরবান পার্বত্য জেলার রাজপরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯০ সালে ৭ই জুন চিংম্রং বৌদ্ধ বিহারের বিহারাধ্যক্ষ উপন্ডিত মহাথের কাছে প্রব্রজ্যা গ্রহণ (গৃহজীবন ত্যাগ) করে সমাজ ও মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত হন । এর ৬ মাস পরই পবিত্র মাঘী পূর্ণিমার দিনে তিনি উপসম্পদা (ভিক্ষুত্ব) গ্রহণ করেন ।

১৯৮১ সালে ঢাকা ইউনিভার্সিটি থেকে L.L.B(Hons), ১৯৮২ সালে L.L.M এবং ১৯৮৩ সালে B.C.S পাশ করেন। B.C.S পাশের পর তিনি সিনিয়র ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে যোগদান করেন। যোগদানের পর মাত্র ১২ বছর তিনি কর্মজীবনে ছিলেন । ২০০২ সালে জুলাই মাসে অনাথ ও গরীব ছেলেদের জন্য বি হ্যাপী লার্নিং সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেন।

এছাড়াও বান্দরবানের পর্যটন কেন্দ্র বুদ্ধ ধাতু জাদি (স্বর্ণ মন্দির) এবং রাম জাদির প্রতিষ্ঠাতাও তিনি । এছাড়া তিনি ভারতের বুদ্ধগয়া, মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে বৌদ্ধ মন্দির স্থাপন করেন।

আরও পড়ুন