একটি এমপিওভুক্ত কলেজ থেকে সরকারী সকল সুযোগ সুবিধা গ্রহন করে একই সাথে দুই জেলার দুই কলেজে কর্মরত চিজিমুনি চাকমা নামে এক মানুষ গড়ার কারিগর! দুই প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্রেও তিনি নিয়মিত।তড়িঘড়ি করে পাশাপাশি দুই জেলার দুই কলেজে চাকুরী করায় প্রকৃত শিক্ষা লাভ হতে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। অবশ্য সেই শিক্ষকের দাবী, নীতিমালা অনুসরণ করেই একসাথে দুই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন তিনি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৫ সালে স্থাপিত খাগড়াছড়ির দীঘিনালার বাবুছড়া কলেজের (নন এমপিওভুক্ত) অধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত চিজিমুনি চাকমা। একইসাথে তিনি ২০০০ সালে স্থাপিত রাঙামাটির বাঘাইছড়ির শিজক কলেজের (এমপিওভুক্ত) পালি বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে দীর্ঘদিন দ্বায়িত্ব পালন করে আসছেন।মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে দেখা যায়, দুই প্রতিষ্ঠানেই কাগজপত্রে তিনি নিয়মিত। ভোগ করছেন সিজক কলেজের বেতন ভাতা ও সকল সুযোগ সুবিধা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চিজিমুনি চাকমা জানান,তিনি নীতিমালা অনুসরণ করেই দুই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। বাবুছড়া কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে তার নিয়মিত ডিউটি করতে হয়না।তাছাড়া বাবুছড়া কলেজ থেকে তিনি কোন সুযোগ সুবিধাও নেননা। শুধুমাত্র শিজক কলেজ থেকেই বেতন ভাতা ভোগ করছেন।
তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারি করা এমপিও নীতিমালার ১৩ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, বেতন-ভাতাদির সরকারি অংশ প্রাপ্তির জন্য শিক্ষক/কর্মচারীরা একই সঙ্গে একাধিক স্থানে চাকরিতে বা আর্থিক লাভজনক কোনো পদে নিয়োজিত থাকতে পারেন না।
শিজক কলেজের অধ্যক্ষ সুভাষ দত্ত চাকমা মুঠোফোনে জানান, “নীতিমালায় একসাথে দুই প্রতিষ্ঠানের সুযোগ সুবিধা গ্রহণের কোন নীতিমালা নেই। তবে চিজিমুনি চাকমা নামমাত্র বাবুছড়া কলেজের অধ্যক্ষ। তিনি শিজক কলেজে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের পাঠদান করে যাচ্ছেন। আমি তাকে অবগত করেছি কোন চাপ এলে তাকে একটি কলেজে দ্বায়িত্ব নিতে হবে। তারপরও বিষয়টি নিয়ে বাবুছড়া কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি তরুণ কান্তি চাকমা’র সাথে কথা বলতে পারেন।”
এ বিষয়ে জানতে বাবুছড়া কলেজ পরিচালনা কমিটি সভাপতি ও দীঘিনালা সরকারি ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যক্ষ তরুণ কান্তি চাকমার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও কোন সংযোগ পাওয়া যায়নি।
দীঘিনালা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, “আমার জানামতে, একইসাথে দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকরির কোন নীতিমালা নেই। তারপরও এ বিষয়ে বিস্তারিত জেনে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করবো।”
দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আরফাতুল আলম বলেন, “একই ব্যক্তির দুই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করার বিধান নেই। কোনো শিক্ষক এটা করে থাকলে তা চাকরিবিধি পরিপন্থী। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”