এনজিও কাজে স্বচ্ছতা না থাকলে, গাট্টিগুট্টা বেঁধে চলে যান : পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর

এনজিও এর কর্মকান্ডে অসন্তোষ প্রকাশ

purabi burmese market

পাহাড়ী প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানোন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি তিন পার্বত্য জেলায় কর্মরত এনজিওগুলোর কর্মকান্ডে চরম অসন্তোষ প্রকাশ করতে দেখা গেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে টেকসই পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক সেমিনারে অংশ নেয়া শীর্ষ কর্মকর্তাদের। অসন্তোষ প্রকাশ করতে ভুল করেননি স্বয়ং পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুরও। একেবারে সোজা সাপ্টা বাংলায় তিনি বক্তব্যের এক পর্যায়ে এনজিও গুলোর উদ্দেশ্যে বলেন, কাজে স্বচ্ছতা না থাকলে, গাট্টিগুট্টা বেঁধে চলে যান। লোক দেখানো কর্মকান্ড এ অঞ্চলে দেখানোর প্রয়োজন মনে করছি না আমরা।

আজ শনিবার (১৭ আগস্ট) রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের হলরুমে উন্নয়ন বোর্ডের আয়োজনে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে টেকসই পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক সেমিনারে পার্বত্য চট্টগ্রামে এনজিও প্রসঙ্গে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, তিন পার্বত্য জেলায় এত এনজিও, কারো কর্মকান্ড দৃশ্যমান নয়। কি কাজ করে? ফান্ডের শতভাগ ব্যবহার হচ্ছে কিনা? কোন কিছুই তো আমরা জানতে পারছি না। এত এনজিও এখানে কাজ করছে, এখানে তো আর কোন সমস্যা থাকার কথা না। তাহলে তারা করে কি? তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কোন কোন এনজিও মাসিক সমন্বয় মিটিং এ উপস্থিত থাকে না, তাদের তালিকা আমাকে দেন, ব্যবস্থা নিয়েই ছাড়ব।

রাঙ্গামাটির সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার বলেন,এখানকার এনজিওগুলোর কাছে জবাবদিহীতা চাইতে গেলে, তারা এনজিও কাজে বাঁধা প্রদান করছে বলে অভিযোগ করেন। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর মানোন্নয়নে পার্বত্যাঞ্চলে এনজিওগুলোকে কাজ করার অনুমতি দেয়া হয়েছিল। কিন্তু সুফল আসছে বলে মনে হচ্ছে না। এনজিওগুলোকে জবাবদিহীতার আওতায় আনতে হবে। ফান্ড কোনখাতে ব্যয় করা হচ্ছে সেটারও হিসাব নেওয়া দরকার।

পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব কবির বিন আনোয়ার বলেন,এনজিও কর্মকান্ড হতাশাজনক। আমি বরকল উপজেলার ইউএনও হিসেবে কাজ করতে গিয়ে এনজিওদের সাথে কাজ করার সুযোগ হয়েছিল। মুলতঃ যেটা দেখেছি তাদের কাগজে কলমের সাথে বাস্তবের বিস্তার ফারাক। প্রতিমাসে মনগড়া একটা রিপোর্ট দিয়েই দায়িত্ব শেষ করে এসব এনজিও।

dhaka tribune ad2

রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমা বলেন, মাসিক সমন্বয় মিটিং এ এনজিওদের উপস্থিতি হতাশাজনক,কর্মকান্ড তো চোখেই পড়ে না।

রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক একে এম মামুনুর রশিদ বলেন, আমার জেলায় এ পর্যন্ত ১০০টির মত এনজিও কাজ করছে। ইউএনডিপি থেকে শুরু করে এসব এনজিও, এ জেলায় কি করছে, তা আমি জানি না। শুনেছি, আমার জেলায় বনায়নের বড় বড় প্রকল্পের কাজ করছে কোন কোন এনজিও। কোথায় করছে, কিভাবে করছে কোন জবাবদিহীতা নেই। যে যার মত করে কর্মকান্ড পরিচালনা করছে। মাসিক সমন্বয় সভায় কোনরকম একটি রিপোর্ট পেশ করা ছাড়া আর কোন কর্মকান্ড জেলা প্রশাসক হিসেবে আমি জানি না।

উক্ত সেমিনারে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছাড়াও জনপ্রতিনিধি, মিডিয়াকর্মী, এনজিও প্রতিনিধি ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি উপস্থিতি ছিলেন।

আরও পড়ুন
আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশিত হবে না।