কক্সবাজার-বান্দরবানে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ৬০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়ক নির্মাণে প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে ২৯৪ কোটি টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। মূলত সীমান্ত সুরক্ষা, চোরাচালান বন্ধ এবং পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে সড়কটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে সীমান্তে বিজিবির টহল ও নিরাপত্তা প্রদান সহজ হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
কক্সবাজার পাউবো সূত্র জানায়, সীমান্ত সড়কটি বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম থেকে শুরু হয়ে কক্সবাজার উখিয়ার বালুখালী ও টেকনাফের নাফ নদীর কূল ঘেঁষে শাহপরীর দ্বীপ গিয়ে শেষ হবে। চলতি বছরের শুরুতে সড়কটি নির্মাণে একটি প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এর ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছিল ২৭৯ কোটি টাকা। কিন্তু কিছু সুপারিশ যোগ করে প্রকল্পটি মন্ত্রণালয় থেকে ফেরত পাঠানো হয়। পরবর্তী সময়ে সুপারিশগুলো গ্রহণ করে প্রকল্পটি নতুন করে সাজানো হয়েছে। এতে ব্যয় বেড়ে যায় ১৫ কোটি টাকা।
২৯৪ কোটি টাকার ওই প্রকল্পের অধীনে ৩ দশমিক ৮ মিটার উচ্চতার সড়কটি নির্মাণ করা হবে। ৬০ মিটার প্রস্থের ৬০ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটি কার্পেটিং করা হবে বিটুমিন দিয়ে। সড়কটির একপাশে থাকা নদীর ১ দশমিক শূন্য ৩ কিলোমিটার শাসন কিংবা নদীভাঙন প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেয়া হবে। সড়ক নির্মাণের জন্য নদীর ৬৭ ও ৬৭/বিতে নির্মাণ করা হবে দুটি পোল্ডার। নদীতে থাকা ৪৬টি পুরনো স্লুইসগেট সংস্কার করা হবে। এছাড়া নতুন করে নির্মাণ করা হবে আটটি স্লুইসগেট।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কক্সবাজার পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সবিবুর রহমান জানান, সীমান্ত সড়কটি মন্ত্রণালয় থেকে ফেরত পাঠানো হয় মূলত নদী খনন বাড়ানোর জন্য। কিন্তু আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইন অনুযায়ী দুই দেশের চুক্তি ছাড়া সীমান্তে নদী খনন সম্ভব নয়। তাই প্রকল্পটিতে সামান্য সংশোধনী আনা হয়েছে।
তিনি বলেন, কক্সবাজারের বাঁকখালী নদী খননের একটি প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। এটি একনেকের সভায় উত্থাপনের জন্য প্রস্তুত হয়ে গেলে সীমান্ত সড়ক প্রকল্পটি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।
কক্সবাজার সদর-রামু আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল জানান, সীমান্ত সুরক্ষা ও পর্যটকদের আকৃষ্ট করার জন্য সীমান্ত সড়কটি গুরুত্বপূর্ণ। এ সড়ক নির্মাণ হলে ইয়াবার আগ্রাসন কমে আসবে। এ সড়ক সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়াকিবহাল রয়েছেন। চলতি বছরে একনেকের সভায় সড়ক নির্মাণ প্রকল্পটি পাস হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
উখিয়া-টেকনাফ আসনের সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি জানান, ২০১০ সালে সংসদ অধিবেশনে সীমান্তে একটি সড়ক নির্মাণের দাবি জানিয়েছিলেন তিনি। সড়কটি নির্মাণ হলে মানব ও ইয়াবা পাচার এবং চোরাচালান ৮০ শতাংশ বন্ধ হয়ে যাবে। এছাড়া সীমান্তের সুরক্ষা বৃদ্ধি পাবে বহুগুণ। বিজিবির টহলদান ও নিরাপত্তা প্রদান সহজ হবে।
তিনি আরো জানান, প্রকল্পটি চলতি বছর একনেকের সভায় অনুমোদন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সূত্র : বণিক বার্তা