করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত পুলিশের সংখ্যা দু’শ ছাড়িয়ে গেল

purabi burmese market

প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস বাংলাদেশে সংক্রমনের পর থেকেই বাংলাদেশ পুলিশ নানাবিধ কাজ করে যাচ্ছে। তারা জীবনের ঝুকি নিয়েই প্রতিনিয়ত নিয়মিত কাজের পাশাপাশি মানুষ কে ঘরে থাকার জন্য বিভিন্ন ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সারা দেশব্যাপী সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে পুলিশ দিন রাত কাজ করছে। দেশের সর্বত্র যেইসব এলাকায় লকডাউন করা আছে সেইসব এলাকায় লক ডাউন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষনের জন্য সর্বদাই মাঠে টহলসহ নানা মুখী কাযর্ক্রম করে চলেছে।

বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যরা সংক্রমণ যাতে সারা দেশে ছড়িয়ে না পড়ে সেই জন্য বহু পরিশ্রম করে ও মানুষ কে ঘরে ফেড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে। তাছাড়াও ত্রাণ বিতরণ করছে বিভিন্ন জায়গায় নিজেদের ব্যক্তিগত তহবিল থেকেও অনেকে। কোয়ারেন্টাইন থেকে পালানো ব্যক্তি কে খুঁজে বের করার কাজটি ও পুলিশ ই করছে। অসহায় মানুষদের, শ্রমিকদের, নিম্ন মধ্য বিত্তদের ত্রাণ বিতরণে সহযোগিতা করে যাচ্ছে। চিকিৎসকদের ও হাসপাতালে আনা নেওয়ার কাজও করছে। তাছাড়া ট্রাফিক ডিউটি ও করে যাচ্ছে। সারা দিন বাইরে ট্রাফিক ডিউটি করার ফলে এমনিতেই অনেকের স্বাস কষ্ট লেগে থাকে। আর এখন এই মহামারীর সময়ে তারাই বেশী আক্রান্ত হচ্ছে। কারণ তারা রাস্তায় ডিউটি করার ফলে অনেক লোকের সংস্পর্শে এসে থাকে। চেকপোস্ট সহ অনেক গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা করার দরুন বিভিন্ন জনের কাছে গিয়ে কথা বলতে হয়।

করোনা আক্রান্ত রোগীদেরকে হাসপাতালে আনা নেওয়ার কাজও করছে পুলিশ। সব চেয়ে অবাক বিষয় হচ্ছে করোনা সন্দেহে মৃত ব্যক্তির বা করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত ব্যক্তির লাশ কেউ দাফন না করলে একমাত্র পুলিশ ই জীবনের ঝুঁকি নিয়েই দাফন সম্পূর্ণ করছে। কোন রুপ পিছপা হচ্ছে না। যেখানে মৃতের আত্বীয় স্বজন লাশ দেখতে বা গ্রহণ করতে আপত্তি করছে সেখানে একমাত্র পুলিশই জীবন বাজী রেখে লাশ দাফন করছে।

আর এতসব কাজ করতে গিয়েই কোন রকম সুরক্ষাসামগ্রী ছাড়াই দায়িত্ব পালনের সময় সাধারণ মানুষের সংস্পর্শে এসে তাদের মধ্যে এই সংক্রমণ হচ্ছে। ইতোমধ্যেই পেশা জীবি হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশ সবচেয়ে বেশী সংখ্যক সদস্য আক্রান্ত হয়ে গেছে। ২১৭ জন পুলিশ সদস্য করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। তার মধ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সংখ্যাই হলো ১১৭ জন। বাকী গুলো সারা বাংলাদেশের বিভিন্ন ইউনিটে তথা বিভিন্ন জেলায় কর্মরত। যা আমাদের জন্য খুবই উদ্বেগের। কারণ পুলিশ সদস্য এভাবে আক্রান্ত হলে তাদের মনোবল ভেঙে যেতে পারে।

দেশের যে কোন দুর্যোগে পুলিশই সবার আগে এগিয়ে আসে। তারা দেশ মার্তৃকার সেবায় নিজেকে বিলিয়ে দিতে ও কার্পন্য করে না। যেটা আমরা ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিসংগ্রামে দেখেছি। পাকিস্তানি শত্রুদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের প্রথম বুলেটটি রাজারবাগ পুলিশ লাইন থেকেই হয়েছিল। আর এখন ২০২০ সালে এই মহামারী করোনা ভাইরাস কোভিড ১৯ এর বিরুদ্ধে ও নিশ্চিত ঝুঁকি জেনেও দিনরাত কোন রকম প্রনোদনার আশা ছাড়াই নিরলস ভাবে উজাড় করে নিজেদের জীবন বিলিয়ে দিচ্ছে।

dhaka tribune ad2

এই যুদ্ধেও আমাদের জয় হবে ইনশাআল্লাহ, তবে আপনাদেরকে সরকার নির্দেশিত বিধি নিষেধ গুলো কঠোর ভাবে মেনে চলতে হবে। আপনারা অযথা বাইরে বের হয়ে নিজের বিপদ ডেকে আনবেন না পাশাপাশি পুলিশ, প্রশাসন, আর্মি তাদেরকে ও বিপদে ফেলবেন না। কারণ এই কোভিড ১৯ এর এক মাত্র প্রতিষেধকই হচ্ছে জনসমাগম এড়িয়ে চলা। কারো সংস্পর্শে না যাওয়া। অতএব আপনি ঘরে নিজে নিরাপদ থাকুন অন্যকেউ নিরাপদ রাখুন।

লেখক: মো.আলী আশরাফ মোল্লা
কলামিস্ট, সাংস্কৃতিক কর্মী এবং সংগঠক।

প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব। পাহাড়বার্তার -এর সম্পাদকীয় নীতি/মতের সঙ্গে লেখকের মতামতের অমিল থাকতেই পারে। তাই এখানে প্রকাশিত লেখার জন্য পাহাড়বার্তা কর্তৃপক্ষ লেখকের কলামের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে আইনগত বা অন্য কোনও ধরনের কোনও দায় নেবে না

আরও পড়ুন
আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশিত হবে না।