করোনা সংকটে আলীকদমে আওয়ামী লীগ নেতাদের কান্ড !

NewsDetails_01

করোনা সংকট নিরসনে যেখানে সবাই পরস্পর হাত রেখে একযোগে কাজ করছে সেখানে কোন্দলে জড়ালো বান্দরবানের আলীকদম উপজেলা আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন। সিনিয়র নেতাদের মত বিরোধ, হেয় প্রতিপন্ন করার কারনে ৬ নেতাকে দলীয় সকল কর্মকান্ড থেকে অবাঞ্চিত ঘোষনা করেছে বান্দরবানের আলীকদম উপজেলা আওয়ামী লীগ।

সংগঠনটির সূত্রে জানা গেছে,গত সোমবার আলীকদম উপজেলা আওয়ামী লীগ এর ৭১ সদস্য বিশিষ্ঠ কমিটির মধ্যে ৬০ জনের স্বাক্ষরিত রেজুলেশন অনুসারে এই তথ্য জানা যায়। উপজেলা আওয়ামী লীগ ছাড়াও সকল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক এই রেজুলেশনে স্বাক্ষর করেন।

অবাঞ্চিত ৬ নেতা হলেন, আলীকদম উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আনোয়ার জিহাদ চৌধুরী, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সৌরভ পাল ডালিম, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি শুভরঞ্জন বড়ুয়া, উপজেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ শামসুল আলম, উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক মংচিংথোয়াই মার্মা, ও কৃষক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজিম উদ্দিন মোঃ এনামুল।

রেজুলেশনের তথ্য অনুসারে জানা যায়, উল্লেখিত নেতারা প্রতিনিয়ত আলীকদম উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাগণকে হেয় প্রতিপন্ন করাসহ সংগঠন ও সরকারী কর্মকান্ডকে বিতর্কিত করতে কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়াও বর্ণিত ওই সব নেতা অসৎ উদ্দেশ্যে, বিপক্ষদলের নেতার সহিত আঁতাত ও লোক দেখানো সাংগঠনিক কাজ কর্মের মাধ্যমে বিগত উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতিক নৌকার প্রার্থীকে পরাজিত করতে কাজ করেন। সহযোগী সংগঠনের এসব নেতারা দেশের ক্রান্তিলগ্নে লকডাউন চলাকালীন কর্মহীন জনসাধারণের মধ্যে সরকার কর্তৃক প্রদত্ত ত্রাণ সামগ্রী বিতরণকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে আওয়ামী বিরোধী জনৈক নেতার সহিত মিলিত হয়ে দল ও সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করাসহ বিভিন্ন প্রকার অবৈধ ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন।

এবিষয়ে আলীকদম যুবলীগের সভাপতি আনোয়ার জিহাদ চৌধুরী বলেন,আমাদের অবাঞ্চিত ঘোষণা করার কোন এখতিয়ার উপজেলা আওয়ামী লীগ রাখে কিনা আমার বোধগম্য নয়। দলীয় জনপ্রতিনিধিরা কোন অনিয়ম করছে কিনা দেখার এখতিয়ার সবার আছে। আমাদের বিরুদ্ধে আনিত সব অভিযোগ মিথ্যা।

NewsDetails_03

জানা যায়, বিগত ২৪ মার্চ সম্প্রতিক সময়ে কোভিট-১৯ এর কারণে আলীকদম উপজেলাকে লক ডাউন ঘোষনা করার পর সারা দেশের ন্যয় কর্মহীন মানুষের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করে আসছে আলীকদম উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও ১নং আলীকদম সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাছির উদ্দিন। এসময় তিনি ব্যক্তিগত তহবিল থেকে প্রায় ৮’শ পরিবারকে খাদ্য সহায়তা প্রদান করেন। এতে তার জনপ্রিয়তা বাড়ায় বর্ণিত নেতারা ঈর্শ্বান্বিত হয়ে বিপক্ষদলীয় নেতার সাথে গোপনে আঁতাত করে দল ও সরকারী বিরোধী কর্মকান্ড পরিচালনা করে যাচ্ছে।

এই ধারাবাহিকতায় গত ২৭ মার্চ ভিজিডি চাল বিতরণের পর বর্ণিত নেতাগণ কয়েকজন উপকারভোগী চাল কম পেয়েছে মর্মে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবরে মৌখিক অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সরেজমিনে তদন্ত করে অভিযোগ মিথ্যা প্রমান পায়। এতে বর্ণিত নেতাগণ ক্ষিপ্ত হয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মানহানিকর স্ট্যাটাস দেন এবং ওই দিনই তারা ফেসবুক থেকে স্ট্যাটাস ডিলিট করে দেন।

পরবর্তী গত ১৯ এপ্রিল ‘আলীকদমের অপরাধ ও নিউজ আলীকদম’ নামক দুটি ফেসবুক আইডি থেকে একইভাবে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে চাল চুরির অভিযোগ এনে স্ট্যাটাস দেয়। এতে চেয়ারম্যান নাছির উদ্দিন তার মান হানি হয়েছে মর্মে আলীকদম থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করে।

এই ব্যাপারে নাছির উদ্দিন জানান, সাম্প্রতিক সময়ে করোনা সংক্রমনের পর সরকারী ত্রাণ ছাড়াও আমি ব্যক্তিগত তহবিল থেকে প্রায় ৮’শ পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দিয়েছি এবং প্রতিনিয়ত সরকার প্রদত্ত ত্রাণ সুষ্ঠ ভাবে বন্টন করে আসছি। করোনা পরিস্থিতির কারণে আলীকদম উপজেলা লক-ডাউন হওয়ার পর ওই সব নেতারা দল ও সরকারের কোন কর্মকান্ড বাস্তবায়ন নাকরে উল্টো সরকার প্রদত্ত ত্রাণ কার্যক্রমকে ব্যহত করার জন্য প্রতিনিয়ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তৎপরতা চালাচ্ছে।

এদিকে আলীকদম উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মংব্রাচিং মার্মা ও সাধারণ সম্পাদক দুংড়িমং মার্মা বলেন অবাঞ্চিত নেতারা বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগ বিরোধী ব্যক্তিদের সাথে সখ্যতা তৈরীর তথ্য ও প্রমাণ আছে। কাদের উদ্দেশ্য তারা দলীয় জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে এটি সবার জানা। বিভিন্ন সময় দলীয় জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের সাথে অসদাচার করতে বিন্দু পরিমাণ দ্বিধাবোধ করে না। তাই তাদের বিরুদ্ধে এ কঠোর অবস্থান। এরই মধ্যে জেলা আওয়ামিলীগকে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে বলে জানান।

আরও পড়ুন