করোনা সংকটে একজন কাজল কান্তি দাশ
চারিদিকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ। সকলের মনে কাজ করছে আতঙ্ক। সেই আতঙ্ক থেকে কেউ পড়ছেন মাস্ক, আবার কেউ ঘণ্টায় হাত ধুচছেন কয়েকবার। আর নিত্য প্রয়োজনীয় কাজের জন্য ঘরের বাহিরের রাস্তায় বের হচ্ছেন কেউ কেউ। কিন্তু সেই রাস্তা কতটুকু নিরাপদ। রাস্তার চারপাশে ছড়িয়ে আছে ময়লা-আবর্জনা । একটু অসচেতনতায় সংক্রমিত হতে পারেন আপনিও । কিন্তু সেই রাস্তাকে নিরাপদ রাখতে এগিয়ে এসেছেন একজন কাজল কান্তি দাশ। যিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য ও বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা। আর এনিয়ে প্রতিবেদন তৈরী করেছেন সৈকত দাশ।
জানা যায়, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে বান্দরবানের শহর জুঁড়ে ছিটানো হচ্ছে তার তরল জীবাণুনাশক। শহরের বাসস্ট্যান্ড, বাজার, ফুটপাতসহ বিভিন্ন স্থানে ওই জীবাণুনাশক ছিটানো হচ্ছে। শুধু কি শহরের বড় সড়ক নয়, বান্দরবান সদরের ৯টি ওয়ার্ডের ছোট ছোট রাস্তাগুলোতেও ছিটানো হচ্ছে কাজল বাবুর জীবাণুনাশক ।
এই সমাজে শুধু টাকা পয়সা থাকলেই হয় না, বিপদের সময় সাধারণ মানুষের পাশে এসে দাঁড়াতে হবে। গতবার ডেঙ্গুর মহামারীর সময় বিভিন্ন সাহায্য নিয়ে উনি এগিয়ে এসেছেন, এবারও এসেছেন। বান্দরবানবাসীর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অন্য ব্যবসায়ীদের চেয়ে সবার আগে আর সবসময় উনিই এগিয়ে আসেন। বান্দরবানে টাকা পয়সাওয়ালা এতো ব্যবসায়ী আছেন, কেউ দুর্যোগময় সময়ে এগিয়ে আসেন না এভাবেই জানালেন বান্দরবান জেলা সিভিল সার্জন ডা: অংসুই প্রু।
আরো জানা যায়, বান্দরবান জেলা সদরের মানুষদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা কথা চিন্তা করে গত ১৯ মার্চ থেকে ছিটানো হচ্ছে এই তরল জীবাণুনাশক । প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত একটি ছোট ও একটি বড় গাড়িতে করে মোট ৪২ হাজার লিটার ব্লেচিং পাউডার মিশ্রিত পানি ছিটানো হয় তারই উদ্যেগে। শুধু ব্লিচিং পাউডার মিশ্রিত পানি ছিটাতেই খরচ হয় প্রতিদিন ১৬ হাজার টাকা । বান্দরবান সিভিল সার্জনের দেয়া নিয়ম অবলম্বন করে এই ব্লিচিং মিশ্রিত পানি তৈরি করা হচ্ছে বলে জানা যায় ।
বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য কাঞ্চন জয় তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, ওনার ব্লিচিং পাউডার মিশ্রিত পানি ছিটানোয় মানুষের মাঝে স্বস্থি এসেছে। এটার উপকারিতা কি আমরা তা বুঝতেছি । সবাই বলছে এই পানিটা অন্তত সড়কের জীবাণুগুলো ধ্বংস করবে -এমনটাই মানুষের মনে বিশ্বাসের মধ্যে স্বস্থি আনছে। ওনার মতো অন্যান্যরাও যেন এই সময়ে এগিয়ে আসে, এটা অব্যহত রাখা প্রয়োজন ।
তিনি আরো জানান, ওনার পাশাপাশি বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ ফায়ার সার্ভিসের মাধ্যমেও জীবাণুনাশক পানি ছিটাচ্ছে ।
করোনার সংকটময় এই সময়ে অনেক ব্যবসায়ি ঘরে বসে থাকলেও তিনি ঘর বসে থাকার মানুষ নন। ইতিমধ্যে তিনি নিজ উদ্যেগে অন্তত ৪শ পরিবারকে চাল, ডালসহ খাদ্য সহায়তা দিয়েছেন। শহরবাসীকে শুধু করোনা ভাইরাসকে মুক্ত রাখতেই নয়, শুরু করেছেন তিনি মশা নিধন কার্যক্রম। ব্যক্তিগত উদ্যেগে কিনেছেন দুটি ফগার মেশিন। বিকালে উড়ন্ত মশা মারার জন্য শহরের ওলিতে গলিতে গিয়ে দুজন কর্মচারী ফগার মেশিন দিয়ে মশা নিধন করছেন । আর এর খরচ পড়ছে প্রতিদিন ১১ হাজার টাকা। সব খরচই বহন করছেন তিনি ।
পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কাজল কান্তি দাশ জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সাধারণ জনগণের পাশে এসে দাঁড়াতে বলেছিলেন । তারই অণুপ্রেরণা পেয়ে আমি সাধারণ জনগণের পাশে এসে দাঁড়িয়েছি। আমার প্রাণপ্রিয় শহরকে যতটা সম্ভব করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে জীবাণুমুক্ত রাখতে চাই ।