কাঁচামাল সংকটে কেপিএম এর উৎপাদন বন্ধ

NewsDetails_01

কাঁচামাল এবং সরকারি অর্ডার না থাকায় গত ২৪ মে হতে উৎপাদন বন্ধ হয়ে আছে একসময়ের দক্ষিন এশিয়ার অন্যতম কাগজ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলার চন্দ্রঘোনা কর্নফুলি পেপার মিলস লিমিটেড। ফলে এখানকার কর্মরত কোম্পানি মাষ্টার রোল, অস্থায়ী শ্রমিক কর্মচারী এবং পে-অফ কর্মকর্তাদের গত ২৪ মে থেকে উৎপাদন শুরু না হওয়া পর্যন্ত কাজে যোগদান না করতে কেপিএম কর্তৃপক্ষ আদেশ করেছেন।

গত ২৩ মে মহাব্যবস্থাপক এর পক্ষে কেপিএম এর ব্যবস্থাপক ( প্রশাসন) মো: মাজহারুল ইসলাম সাক্ষরিত এক দপ্তর আদেশের মাধ্যমে তাদের কাজে যোগদান হতে বিরত থাকার নির্দেশ প্রদান করা হয় বলে অস্থায়ী শ্রমিকরা জানান। দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে এই সমস্ত অস্থায়ী শ্রমিকরা কেপিএম এ কাজ করতো বলে বর্তমানে তারা মানবতার জীবন যাপন করছে বলে তারা জানান।

এদিকে কেপিএম আবাসিক এলাকায় বসবাসরত স্থায়ী শ্রমিক কর্মচারীরা অভিযোগ করে জানান, মিল উৎপাদন বন্ধ বা চালু রাখা সেটা সম্পূর্ণ কর্তৃপক্ষের বিষয়, কিন্ত আবাসিক এলাকায় তারা বিদ্যুৎ এবং তীব্র পানীয় জলের সংকটে ভুগছেন।

তারা জানান, রাতে কয়েক ঘন্টা এবং সকালে কয়েকঘন্টা বিদ্যুৎ থাকে। এই ছাড়া দিনে একবার যে পানি সরবরাহ করা হয়, সেটা নদীর ঘোলা পানি, যা বিশুদ্ধ না করে সাপ্লাই করা হচ্ছে। ফলে এই করোনা ভাইরাস সংকটে এই পানি ব্যবহার তাদের জন্য নিরাপদ নয়।

এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে কেপিএম শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন (সিবিএ) এর সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বাচ্চু এই প্রতিনিধিকে জানান, কাঁচামাল সংকট এবং বিক্রয় সংকটের ফলে কেপিএম এর উৎপাদন বন্ধ আছে। তারা জানান, কেপিএম আবাসিক এলাকায় এখন তীব্র পানীয় জল এবং বিদ্যুৎ এর সংকট চলছে।

এই বিষয়ে কেপিএম এর ব্যবস্থাপক (উৎপাদন) গোলাম সরোয়ার জানান, বর্তমানে কিছু কাঁচামাল সংকট আছে, তাছাড়া কেপিএম হতে কাগজ সরবরাহকারী সরকারি প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল কারিকুলাম ফর টেক্সট বোর্ড (এনসিটিবি) কাগজ না কেনায় গত ২৪ মে হতে কেপিএমে উৎপাদন হচ্ছে না।

NewsDetails_03

তিনি আরো জানান, কেপিএম হতে এনসিটিবি ১০০০ মেট্রিক টন কাগজ কেনার কথা ছিল। এই প্রতিষ্ঠানটি কাগজ কিনলে এই সংকট থাকবে বলে তিনি জানান।

কেপিএম ম্যানেজমেন্ট সুত্রে জানা যায়, এই মিলটি বর্তমানে আমদানিকৃত পাল্প রিসাইকেল পেপার হতে কাগজ উৎপাদন করে আসছে। চলতি অর্থবছরের ৯ মে পর্যন্ত বিসিআইসির এই প্রতিষ্ঠানটি সর্বোচ্চ ৫ হাজার ৭৮৫ মেট্রিকটন পর্যন্ত কাগজ উৎপাদন করেছে। তবে সরকারি কাগজ সরবরাহ প্রতিষ্ঠান এনসিটিবি যদি কেপিএম হতে কাগজ কিনে তাহলে এই সংকট আর থাকবে বলে তারা জানান।

বিসিআইসির এই প্রতিষ্ঠানটির বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা ৩০ হাজার মেট্রিকটন হলেও বর্তমানে বার্ষিক ৫ থেকে ৬ হাজার মেট্রিক টন কাগজ উৎপাদনের ফলে এটি একটি লোকসানে প্রতিষ্ঠানে পরিনত হয়েছে বলে শ্রমিকরা জানান।

মিলে দীর্ঘদিন ধরে কর্মরত কয়েকজন শ্রমিক কর্মকর্তারা জানান,যদি দৈনিক ৪৫ থেকে ৫০ মেট্রিক টন কাগজ উৎপাদন হয় তাহলে এই মিলটির আর লোকসান গুনতে হবে না।

তারা আরোও জানান,বর্তমানে যে যন্ত্রপাতি আছে তা দিয়ে দৈনিক ৭০ থেকে ৮০ মেট্রিকটন কাগজ উৎপাদন করা যেতো। তবে অনেক ক্ষেত্রে নিন্মমানের কাগজ উৎপাদনের ফলে এনসিটিবি সহ সরকারি অনেক প্রতিষ্ঠান এই মিলটি হতে কাগজ কিনতে আগ্রহ হচ্ছে না বলে তারা জানান।

এই বিষয়ে সিবিএ নেতৃবৃন্দের বক্তব্য জানতে চাইলে তারা বিষয়গুলোর সত্যতা স্বীকার করেন।

আরও পড়ুন