ফেব্রুয়ারী মাসেই মূলত আম গাছে মুকুল আসা শুরু হয়। কৃষক এবং কৃষি কর্মকর্তারা জানান, ভরা শীতে যদি আমের মুকুল আসে ঘণ কুয়াশার কারনে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে আমের মুকুল। তবে এই বছর
রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলাধীন বিভিন্ন ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি আম বাগানে গিয়ে কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, চলতি ফেব্রুয়ারী মাসে তাদের বাগানে আমের মুকুল এসেছে।
মুকুলের সুগন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে চারপাশ। যেদিকে দু’চোখ যায়, সেদিকেই দেখা যাচ্ছে সারি সারি আম বাগানের গাছে গাছে সোনালী রং ধারণ করতে শুরু করেছে পরিস্ফুটিত মুকুল। শীতের বিদায় বেলায় আম চাষীরাও গাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছে। এবার আমগাছে ভালো মুকুল আসাতে আমের ভালো ফলনের আশা করছেন চাষীরা।
কাপ্তাই উপজেলার ওয়াগ্গা ইউনিয়নের সাফছড়ি এলাকার আমচাষী ১০০ নং ওয়াগ্গা মৌজার হেডম্যান অরুণ তালুকদার, আপাই মারমা, সুজন তঞ্চঙ্গা সহ বেশ কয়েকজন চাষীর সাথে কথা হলে তারা জানান, বিগত বছরের তুলনায় এবার মাস খানেক আগে থেকেই আমের মুকুলের দেখা মিলেছে। এছাড়া আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবছর গাছে ব্যাপক পরিমাণ মুকুল এসেছে। তবে আবহাওয়া পরিস্থিতি যদি এরকম ভালো থাকে তবে আমের ফলন অন্যান্য বারের তুলনায় অনেক ভালো হবে বলে তারা আশা করছেন। চাষীরা আরো জানান, দেশের অনান্য জায়গার তুলনায় পার্বত্য অঞ্চলে আমপ্রালি ও রূপালী জাতের চাহিদা অনেক বেশি।
তবে কয়েকজন চাষী জানান, গত বছরের তুলনায় এবার পরিচর্যা খরচ তাদের অনেক বেশি বহন করতে হচ্ছে। বিশেষ করে কীটনাশক, সেচের খরচ আর শ্রমিকদের মজুরী বেড়ে যাওয়াতে আম চাষিদের দুশ্চিন্তা বেড়ে গেছে। এতে আমের দাম অনান্য বছরের তুলনায় বৃদ্ধি পাওয়ার আশংকা করছেন তারা।
শিক্ষকতার পাশাপাশি বেশ কয়েকবছর ধরে শখের বসে আমবাগান করে আসছেন মধু মঙ্গল তঞ্চঙ্গা। তিনি জানান, তার বাগানে রাইখালী কৃষি গবেষনা ইনস্টিটিউট থেকে সংগ্রহ করা দেশীয় বারি-১, বারি-২, বারি-৩, বারি-৪ এবং বারি-৮ জাতের আম গাছ রয়েছে। যেই গাছগুলোতে বর্তমানে ভালোই আমের মুকুল দেখা দিয়েছে। তবে গতবছর তিনি ভালো ফলন না পেলেও এবার মুকুল অনুযায়ী ভালো ফলনের আশা করছেন। এদিকে তাঁর বাগানে দেশীয় জাতের পাশাপাশি বিদেশী জাপানী জাতের বিখ্যাত এবং মূল্যবান মিয়াজাকি আম গাছের চারাও রোপণ করেছেন বলে জানান। এছাড়া আমেরিকান রেড আইভরী জাতের আম গাছের চারাও তাঁর বাগানে রয়েছে বলে জানান। সবকিছু ঠিক থাকলে এইবছর তিনি প্রতিটি আম গাছে ভালো ফলন পাবেন বলে আশা করছেন।
এদিকে কাপ্তাই কৃষি বিভাগের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা বাপ্পা মল্লিক জানান, প্রতিবছরই দেশের বিভিন্ন জেলায় কাপ্তাই হতে ব্যাপক পরিমাণ আম বিক্রয় করা হয়। তবে এইবছর শীতের প্রভাব আর আবহাওয়া অনুকুলে থাকার ফলে জানুয়ারী শেষের থেকেই বিভিন্ন আম বাগানের গাছে গাছে মুকুল দেখা দিয়েছে। তবে কিছু বাগানের কোন কোন আম গাছে পরিপূর্ণ মুকুল আসতে আরো কিছু সময় লাগতে পারে।