কাপ্তাইয়ের সীতাদেবী মন্দিরে মহাবারুণী স্নান উপলক্ষে পূর্নার্থীদের ঢল

NewsDetails_01

মহাবারুণী স্নান উপলক্ষে পূর্নার্থীদের ঢল
চট্রগ্রামের জামালখান এলাকা হতে তীর্থ করতে আসা দুই বন্ধু হারাধন দে ও সজীব দে’র সাথে কথা হয় কাপ্তাই সীতাঘাট মন্দিরে। তারা জানান প্রথমবার এর মতো ঐতিহাসিক এই মা সীতাদেবীর মন্দিরে এসে মহাবারুণী স্নানে কর্নফুলি নদীতে স্নান করে নিজেকে ধন্য মনে করছি। কথা হয় বারুণী স্নানে আসা রাংগুনিয়ার শ্যামলী দাশ, বয়োবৃদ্ধ রনজিত চৌধুরী, শান্তিনিকেতন হতে আসা টিটু কুমার দত্ত, অসীম দে, রোমেন সাহা, রাজস্থলী বাংগালহালিয়া হতে আসা খুকি রানী দে, রাউজান এর পাহাড়তলি হতে আসা বাসন্তী বালা দাশ সহ অনেকের সাথে। তারা সকলে এই পূর্ন স্বানে এসে নিজেকে ধন্য মনে করছেন। পাহাড় আর কর্নফুলি নদীর অপরুপ কোল ঘেষে অবস্হিত শ্রীশ্রী মাতা সীতাদেবী মন্দিরের সৌন্দর্য্য সকলকে বিমোহিত করেছেন। “মধুকৃষ্ণ ত্রয়োদশী” তিথিতে মহাবারুণী স্নান উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো কাপ্তাই উপজেলার শীলছড়ি শ্রীশ্রী মাতা সীতাদেবী মন্দির পরিচালনা কমিটির আয়োজনে গতকাল সোমবার (১ লা এপ্রিল) মহানামযজ্ঞের মাধ্যমে শুরু হয় ২ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালা।
আজ মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) মহাবারুণী স্নানে অংশ নিতে সকাল ৭ টা হতে কাপ্তাই, রাংগামাটি, রাংগুনিয়া, রাজস্থলী, রাউজান, হাটহাজারী, চট্রগ্রাম সহ অনেক জায়গা হতে হাজারোও পূর্নাথীদের আগমন ঘটে। অনেকে পরিবার পরিজন নিয়ে আসেন এই মন্দিরে। মন্দিরের পাশে অবস্হিত কর্নফুলি নদীতে মহাবারুণী স্নানের মাধ্যমে ভক্তরা পরমেশ্বর ভগবানের কাছে নিজেকে সপিয়ে দিয়েছেন। এক দিকে বারুণী স্নান আর মন্দির প্রাঙ্গণ এ তারকব্রহ্ম মহানাম আস্বাদনে ভক্তরা মেতে উঠেছেন।
ঐতিহাসিক সীতাদেবী মন্দিরের সভাপতি রতন দাশ, সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দাশ এই প্রতিবেদককে জানান, এই বছর ১২ থেকে ১৫ হাজার ভক্তের আগমন ঘটেছে এই মহাবারুণী স্নান অনুষ্ঠানে। এখানে সীতাদেবীর মূল মন্দির ছাড়াও সীতাঘাট, রামমন্দির, কালি মন্দির এবং ত্রিনাথ বৃক্ষে ভক্তরা ঘুরেফিরে আনন্দ লাভ করেছেন। তারা জানান, উৎসবে আসা সকলের জন্য মহাপ্রসাদ এর ব্যবস্হা করা হয়েছে। সীতাদেবী মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ জ্যৌতির্ময়ানন্দ ব্রক্ষচারী সকলকে এই জাগ্রত মন্দিরকে একটি মহাতীর্থ স্নানে পরিণত করার জন্য আহবায়ন জানান।
উৎসবে আইন শৃংখলা বাহিনী সদস্য চন্দ্রঘোনা থানার এসআই জাহাঙ্গীর আলম জানান, সীতাঘাট সীতাদেবী মন্দিরের বার্ষিক অনুষ্ঠান যাতে সুশৃংখলভাবে সম্পাদন হয় সেইজন্য চন্দ্রঘোনা থানা পুলিশের পোষাকধারী সদস্যরা সকাল হতে শেষ পর্যন্ত মনিটরিং করছে উৎসব অঙ্গন। এদিকে উৎসব অঙ্গনে মহাবারুণী স্নান উপলক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। মন্দির কমিটির সভাপতি রতন কান্তি দাশ এর সভাপতিত্বে সাংস্কৃতিক সম্পাদক কাপ্তাই প্রেস ক্লাব সাধারণ সম্পাদক ঝুলন দত্তের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদ সদস্য স্মৃতি বিকাশ ত্রিপুরা, কাপ্তাই উপজেলা আ’লীগের সভাপতি অংসুছাইন চৌধুরী, রাংগামাটি জেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাদল চন্দ্র দে, সাধারণ সম্পাদক স্বপন মহাজন, অর্থ সম্পাদক খোকন কুমার দে, রাংগামাটি জেলা জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আশীষ দাশ গুপ্ত, কাপ্তাই উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দীপক কান্তি ভট্রাচার্য্য সম্পাদক প্রিয়তোষ ধর পিন্টু, চন্দ্রঘোনা হরিমন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি প্রকৌশলী স্বপন কুমার সরকার, কাপ্তাই উপজেলা পুজা উদযাপন কমিটির সাবেক সম্পাদক প্রীতিষ চন্দ্র দে কাজল, সন্তোষ কুমার দাশ, ব্যাংকার বাবুল চন্দ্র দে, রাইখালী ত্রিপুরা সুন্দরি কালি বাড়ী পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক টিটন দেব প্রমুখ।
আলোচনার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সীতাদেবী মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দাশ। পরে অতিথিরা সীতাঘাট সীতাদেবী মন্দিরের নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন।

আরও পড়ুন