কাপ্তাইয়ে অভিনব কায়দায় অপহরণ মামলার ভিকটিম উদ্ধার

NewsDetails_01

রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলার ৫নং ওয়াগ্গার কুকিমারা এলাকায় ভুক্তভোগী এক পরিবারের দায়ের করা অপহরণ মামলায় কারাবাসে পাঠানো হয় সরকারি চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভনে প্রতারণা করা শুভ্র মারমার কথিত মা অবসরপ্রাপ্ত রাঙামাটি বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মচারী প্রভা দেবী চাকমাকে। পরে পুলিশী তদন্তে বেড়িয়ে আসে প্রেমের টানে সিএনজি ড্রাইভারের হাত ধরেই বাড়ী ছাড়ে ওই যুবতী। কুড়িগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থান ঘুরে খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলার চিংকিনালা পৌঁছালে অপহৃত সুইমাইথুই মারমা’কে উদ্ধার করে পুলিশ। অপহৃত সুইমাইথুই মারমা কাপ্তাই ওয়াগ্গা কুকিমারার বাসিন্দা।

কাপ্তাই থানা অফিসার ইনচার্জ মো. নাসির উদ্দীন জানান, সরকারি চাকরিজীবি’র ভূয়া পরিচয়ে বিভিন্ন স্থানে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা করতো শুভ্র মারমা ও তার কথিত মা প্রভা দেবি চাকমা (৬০)। তারা কাপ্তাইয়ের ওয়াগ্গা ইউনিয়নের কুকিমারা এলাকায়ও বিভিন্ন জনকে চাকরি দেবার কথা বলতো। বিশেষ করে শুভ্র নিজেকে কখনোও গোয়েন্দা কর্মকর্তা পরিচয় দিতো। গত মার্চ মাসে নিঁখোজ হন কুকিমারার সুইমাইথুই মারমা (২৩)। নিখোঁজের পর গত ৭ই জুলাই তার পরিবার শুভ্র ও তার মা প্রভা দেবি চাকমাকে আসামী করে তাদের বিরুদ্ধে কাপ্তাই থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করেন।

এ ঘটনায় আসামী প্রভা দেবি চাকমাকে আটক করার পর প্রভা দেবি জানান, শুভ্র তার ছেলে নন। তারা বিভিন্ন স্থানে সরকারি চাকরিসহ বিভিন্ন ভূয়া পরিচয় প্রদানের মাধ্যমে প্রতারণার ফাঁদ পেতে আসছেন। অপহৃত সুইমাইথুই মারমা’কেও শুভ্র চাকরির প্রলোভন দেখিয়েছেন।

NewsDetails_03

এ বিষয়ে কাপ্তাই সার্কেলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুনায়েত কাউসার আজ বুধবার (২২ জুলাই) জানান, মামলার পর জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে আসামীদেরকে আটক এবং অপহৃত যুবতীকে উদ্ধারে পুলিশী তৎপরতা শুরু করা হয়। আমরা তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে অপহৃত যুবতীর লোকেশন কুড়িগ্রামে এবং শুভ্র মারমার অবস্থান ভিন্ন জেলায় দেখতে পাই। তবে ঘটনার দু’দিন পর থেকে অপহৃত যুবতীর মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।

এ এস পি সার্কেল জুনায়েত কাউসার আরও জানায়, যদিও শুভ্র মারমা ১নং আসামী এবং সন্দেহজনক গতিবিধির মানুষ, তবুও আমরা তদন্ত ভিন্ন আঙ্গিকে পরিচালিত করি। ভিক্টিমের পূর্বের ইতিহাস সংগ্রহ করে এবং তার পরিবার, বন্ধুদের নিবিড় ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করে দু’জন ব্যক্তিকে সন্দেহের তালিকায় নেই। এদের একজনের নাম্বার সচল পাওয়া যায়। অপরজনের নাম্বার ঘটনার পরদিন থেকেই বন্ধ পাওয়া যায়।

তিনি আরও জানান, একজন মহিলা দিয়ে প্রেমের ফাঁদ পেতে সন্দেহভাজন মো. সুমন নামের এক বাঙালী সিএনজি ড্রাইভারকে চট্টগ্রাম থেকে আটক করি। এরপর থেকেই খুলতে থাকে ঘটনার রহস্য। জানা যায়, বন্ধ নাম্বারটি সুমন নামের এই বাঙালী ড্রাইভারের। অপহৃত সুইমাইথুই মারমার সঙ্গে রয়েছে তার প্রেমের সম্পর্ক। তার হাত ধরেই পালিয়ে যায় মেয়েটি। কুড়িগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ঘুরে খাগড়াছড়ির মহালছড়ি পৌঁছালে বুধবার কাপ্তাই থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আতিকুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্সসহ ভুক্তভোগী মেয়েটিকে খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়ি চিংকিনালা হতে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন।

কাপ্তাই থানা পুলিশ পরিদর্শক( তদন্ত) আতিকুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার (২৩ই জুলাই) এদের রাঙামাটি কোর্টে চালান করা হবে।

আরও পড়ুন