কাপ্তাইয়ে আম্রপালির ফলন কম, হতাশ কৃষক ও বিক্রেতারা
রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলার উপজেলা সদরের মৌসুমি ফল বিক্রেতা মো: দুলাল মিয়া। টানা ১৬ বছর ধরে উপজেলায় ফলের ব্যবসা করেন তিনি। বিশেষ করে জৈষ্ঠ মাস অথাৎ মধুমাসে তার দম ফেলার সময় থাকেনা। আম, লিচু, কাঁঠাল, আনারস এইসব মৌসুমী ফল কেনার জন্য ক্রেতার উপচে পড়া ভীড় থাকে তার দোকানের সামনে। প্রতিদিন কয়েক হাজার টাকার ফল বিক্রি হয় তাঁর। কাপ্তাইয়ের বাহির হতে প্রচুর পর্যটক এসে এইসব ফল নিয়ে যেতো বিভিন্ন প্রান্তে। বিশেষ করে কাপ্তাইয়ের আম্রপালি সারাদেশে বেশ সমাদৃত। বছরের জুন জুলাই মাসে প্রচুর আম্রপালি কাপ্তাই হতে জেলার বাহিরে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্ত এইবার কাপ্তাইয়ে সেই আম্রপালির ফলন কম হওয়ায় হতাশ প্রান্তিক কৃষক এবং মৌসুমি ফল বিক্রেতারা। তাদের মুখে নেই হাসি।
গত রবিবার (১২ জুন) কাপ্তাই বড়ইছড়িতে মৌসুমী ফল বিক্রেতা মো: দুলাল মিয়া সহ কথা হয় অনেকের সাথে। তারা সকলে জানালেন, এই বছর কাপ্তাইয়ে আম্রপালির ফলন অনেক কম হয়েছে। তবে রুপালী, রাংঙ্গু এবং মল্লিকা জাতের আমের মোটামুটি ফলন হয়েছে কাপ্তাইয়ে। এছাড়া আনারস, কাঠাল, লিচুসহ নানা মৌসুমী ফলে ভরপুর হয়ে আছে কাপ্তাইয়ের বিভিন্ন হাটবাজার। তবে গতবছরের তুলনায় দাম কম হওয়ায় তারা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।
তারা জানান, গতবছর যেখানে যেই আম্রপালি ১০০ টাকা ছিল এবার তার দাম ৬০-৭০ টাকা। আবার যেইগুলোর দাম ৫০ টাকা ছিল এবার তা ৩৫-৪০ টাকায় বিক্রি করছেন তারা। তাঁরা জানান, অত্যন্ত সু-স্বাদু হওয়ায় আম্রপালির চাহিদা ক্রেতাদের কাছে বেশী থাকে।
এদিকে কাপ্তাইয়ের তালুকদার সবুজ খামারের প্রোপাইটার ওয়াগ্গা মৌজার হেডম্যান অরুন তালুকদার জানান, প্রতিবছরের মতো এইবছরও তার বাগানে প্রায় ২০ একর জমিতে আম্রপালি এবং রাঙ্গু জাতের আমের চাষ করা হয়েছে। বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এইবছর তাঁর বাগানে আম্রপালি জাতের আমের ফলন কম হলেও এইবছর রাঙ্গু জাতের আমের ফলন মোটামুটি হয়েছে বলে তিনি জানান।
কৃষক আপাই মারমা, অজিত তালুকদার সহ অনেক কৃষক জানান, এই বছর তাদের বাগানে আম্রপালির ফলন কম হয়েছে।
এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে কাপ্তাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সামসুল আলম চৌধুরী জানান, আবহাওয়া পরিবর্তন হবার কারনে বিশেষ করে অত্যধিক গরমের ফলে এই বছর কাপ্তাইয়ে আম্রপালির ফলন কম হয়েছে। তবে এইবছর রাঙ্গু জাতের আমের ফলন ভালো হয়েছে।
এই কৃষি কর্মকর্তা আরোও জানান, উপজেলা কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে উপজেলার প্রত্যেকটি ইউনিয়নে এই বছর কাপ্তাইয়ে মৌসুমী ফলের আশানুরুপ উৎপাদন হয়েছে। প্রত্যেকটি গাছে পোকা মাকড়ের আক্রমন ছাড়া কৃষকরা আম, কাঠাল, আনারস, লিচু ঘরে তুলতে পেরেছে।