কাপ্তাই আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সভাপতি -সম্পাদক পদে একাধিক প্রার্থী

NewsDetails_01

রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দীর্ঘ ৭ বছর পর আগামী ২৮ অক্টোবর এই সম্মেলন হবে বলে জানান উপজেলা আ’লীগ সভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অংসুইছাইন চৌধুরী।

রাঙামাটি পার্বত্য জেলা হতে নির্বাচিত সাংসদ সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা আ’লীগ এর সাধারণ সম্পাদক জেলা পরিষদ সদস্য প্রকৌশলী থোয়াইচিং মং মারমা।
এদিকে নেতাকর্মীদের আগ্রহ আসন্ন কাউন্সিলে কে হচ্ছেন দলের পরবর্তী সভাপতি এবং সম্পাদক। তবে তৃনমূল পর্যায়ে আলাপকালে সবাই অভিমত ব্যক্ত করেছেন দলের দূর্দিন ও সুদিনে যারা কর্মীদের পাশে ছিলেন তাঁরাই যেন দলের মূল দায়িত্বে আছেন।

ইতিমধ্যে সভাপতি হিসাবে যাদের নাম শুনা যাচ্ছেন তাঁরা হলেন, বর্তমান কমিটির সভাপতি অংসুইছাইন চৌধুরী,সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী থোয়াইচিং মং মারমা এবং উপজেলা আ’লীগের সদস্য রাঙামাটি জেলা কৃষকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নুর উল্ল্যাহ ভুইঁয়া। আর সাধারণ সম্পাদক হিসাবে যাদের নাম শুনা যাচ্ছেন তাঁরা হলেন, ১ নং চন্দ্রঘোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী বেবী,উপজেলা আ’লীগের যুগ্ম সম্পাদক ইব্রাহিম খলিল, উপজেলা আ’লীগের সদস্য আক্তার হোসেন মিলন এবং ১নং চন্দ্রঘোনা ইউনিয়ন আ’লীগের সম্পাদক কামরুল হোসেন।

এই বিষয়ে বর্তমান সভাপতি অংসুইছাইন চৌধুরী এই প্রতিবেদককে জানান, সেই ছাত্র রাজনীতি হতে দলের দূর্দিন ও সুদিনে আমি সবসময় নেতাকর্মীদের পাশে ছিলাম। জেলা পরিষদের সদস্য এবং উপজেলা চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে সরকারি দায়িত্বে পালনের পাশাপাশি দল গঠনে সবসময় নেতাকর্মীদের পাশে ছিলাম।

তিনি আরো জানান, রাঙামাটি থেকে নির্বাচিত সাংসদ জননেতা দীপংকর তালুকদার এবং তৃনমূল এর নেতাকর্মীরা যদি চাই তাহলে আমি আবারোও সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে দলকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে চাই।

এই বিষয়ে বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী থোয়াইচিং মং মারমা জানান, আমি সবসময় জনগণ এর রাজনীতি করে আসতেছি, দলের নেতাকর্মীদের পাশে আমি ছিলাম তাদের সুখে দু: খে। আমি সবসময় দলের প্রয়োজনে উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের উন্নয়নে কাজ করে গেছি। আগামীতে যদি জননেতা দীপংকর তালুকদার এমপি এবং তৃনমূল নেতাকর্মীরা চান তাহলে আমি দলের সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে আ’লীগকে আরোও সুসংগঠিত করতে চাই।

দলের আর এক সভাপতি প্রার্থী নুর উল্ল্যাহ ভুইঁয়া জানান, ছাত্রজীবন হতে বঙ্গবন্ধুর আর্দশের রাজনীতি করে আসছি, চন্দ্রঘোনা ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক এর দায়িত্ব পালন করেছি দক্ষতার সাথে, এছাড়া বর্তমানে উপজেলা আ’লীগ সদস্য এবং জেলা কৃষকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসছি সততার সাথে, তাই আশা করি আগামী কাউন্সিলে দলের তৃনমূল নেতাকর্মীদের মতামত আমার পক্ষে যাবে বলে বিশ্বাস করি।

NewsDetails_03

এদিকে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে বর্তমান কমিটির সহ সভাপতি ১ নং চন্দ্রঘোনা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী বেবী জানান,বাংলাদেশ ছাত্রলীগ দিয়ে আমার রাজনীতি জীবনের শুরু। পর্যায়ক্রমে কাপ্তাই উপজেলায় যুবলীগকে সুসংগঠিত করে আমি আ’লীগের কমিটিতে নিজের যোগ্যতায় স্থান করে নিয়েছে।

তিনি আরো জানান,সুদীর্ঘ এই রাজনৈতিক জীবনে তিনি বিরোধীদলে থাকাকালীন সময়ে তদান্তিন সরকারি দলের নেতাকর্মী এবং পুলিশ এর কাছ থেকে হয়রানি হয়েছি, কিন্ত দলের আদর্শ হতে কখনোও পিছপা হই নাই। তাই দল এবং নেতাকর্মীরা যদি মনে করে আমি সাধারণ সম্পাদক হিসাবে যোগ্য তাদের সম্মানকে মাথা পেতে নিবো। দলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হিসাবে জোরেশোরে যার নাম শুনা যাচ্ছে তিনি হলেন বর্তমান কমিটির সদস্য আখতার হোসেন মিলন।

এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, ১৯৯৮-৯৯ সালে আমি কর্নফুলি কলেজের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছি,২০০২-২০০৫ সাল পর্যন্ত সেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহবায়ক এর দায়িত্ব পালন করেছি এবং পরবর্তীতে যুবলীগের সভাপতি প্রার্থী হিসাবে বর্তমান সভাপতি নাছির উদ্দিন কাছে হেরে গিয়েছি। ২০১২ সাল হতে অদ্যাবধি আ’লীগের সদস্য হিসাবে দলের সুখে দুখে কাজ করে যাচ্ছি।

তিনি জানান,২০০১ সালে বিএনপি জামাত জোট সরকারের আমলে তখনকার সভাপতি অনিল তনচংগ্যা সহ আমি কারাবরণ করেছি, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়েছে। আগামী দলের কাউন্সিলে যদি তৃনমূল নেতাকর্মীরা আমাকে সাধারণ সম্পাদক হিসাবে মনোনিত করে আমি নিষ্টা ও দক্ষতার সাথে সেই দায়িত্ব পালন করবো।

এদিকে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ইব্রাহিম খলিল জানান, ১৯৯৫ সালে কাপ্তাই যুবলীগের সভাপতি দায়িত্ব নেবার পর কাপ্তাই এ আমার রাজনৈতিক কর্মকান্ড শুরু করি। এর আগে আমি ছাত্রলীগ এর রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলাম। সুদীর্ঘ এই রাজনৈতিক জীবনে আমি কাপ্তাই এর দলের নেতাকর্মীদের সাথে ছিলাম এবং ভবিষ্যৎও থাকবো, তাই তৃনমূল এর নেতাকর্মীরা আমাকে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত করবেন।

সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ১ নং চন্দ্রঘোনা ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুল হোসেন জানান, আমি দুই দুই বার চন্দ্রঘোনা ইউনিয়ন এর আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছি। ফেনী কলেজে ছাত্রলীগ এর রাজনীতি করার সময় ৯০ সালে এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সদস্য হিসাবে রাজপথে কাজ করেছি, পরিচ্ছন্ন, সৎ এবং সততার প্রতিক হিসাবে দলের ম্যান্ডেট পেলে আগামীতে দলকে আরোও সুসংগঠিত করবো।

দীর্ঘ ৭ বছর পর কাপ্তাই উপজেলা আ’লীগের সম্মেলনকে সামনে রেখে ইতিমধ্যে কাপ্তাই উপজেলার ৫ টি ইউনিয়ন এর সম্মেলন শেষ করা হয়েছে। উপজেলা হতে ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড পর্যায়ে তৃনমূল নেতাকর্মীদের উৎসাহ উদ্দীপনায় প্রমান করে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ নেওয়া দেশের বৃহত্তম এই দলটির যেকোন পদে আসীন হওয়া মানে সম্মানের এবং গৌরবের।

আরও পড়ুন