কাল থেকে খুলছে বান্দরবানের সব পর্যটন স্পট ও হোটেল মোটেল
কক্সবাজার ও রাঙামাটির পর এবার বান্দরবানের পর্যটনস্পটগুলো পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, শর্তসাপেক্ষে কাল শুক্রবার থেকে বান্দরবানের পর্যটন স্পটগুলো খুলে দেয়া হবে বলে নিশ্চিত করেছে জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার সকালে জেলা প্রশাসনে এক মিটিংয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শামীম হোসেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মহামারী দূর্যোগ করোনা মোকাবেলায় জন্য প্রায় পাঁচ মাস ধরে পর্যটন বন্ধ রয়েছে, তাতেই বিরাট ক্ষতির মুখে পরেছে পর্যটন সংশ্লিষ্টরা। অবশেষে জেলার পর্যটন শিল্পের কথা ভেবে ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে আগামী শীত মৌসুমকে সামনে রেখে স্বাস্থ্যবিধি শুক্রবার থেকে বান্দরবানে সব সরকারি-বেসরকারি পর্যটনকেন্দ্র ও আবাসিক হোটেল-মোটেল খুলে দেওয়া হবে।
দীর্ঘ টানা বন্ধের কারনে এসময়ে পর্যটন স্পটগুলোর বৃক্ষে এসেছে নতুন কলি, প্রকৃতিতে এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন। বান্দরবানের পর্যটন স্পট গুলোতে চারদিকে শুধু সবুজেরই সমারোহ, সতেজতা পরিপূর্ণ পরিবেশ আর বিশুদ্ধ বাতাসে স্পটগুলো সেজেছে যেন প্রাকৃতিক নিয়মে। পাহাড়ের প্রকৃতি ফিরেছে সেই আগের রূপে, সবুজ হয়েছে নানা প্রান্তর।
পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য ও পর্যটন ব্যবসায়ী কাজল কান্তি দাশ বলেন, স্পট খুলে দেওয়াতে পর্যটনের কর্মচারীরা বেকার জীবনের অবসান হবে।

মানব অত্যাচার থেকে ক্ষতি কাটিয়ে উঠেছে প্রাকৃতি, করোনার কলো ছায়ায় পৃথিবী যখন স্থবির। ঠিক তখনি পাহাড়ে প্রকৃতি আপন মহিমায় মেলে ধরেছে নিজেকে। দূষণের বেড়া জাল থেকে মুক্ত হয়েছে জীব বৈচিত্র। প্রকৃতির এ রূপ বৈচিত্র দেখে আবারও আশার আলো দেখছে পর্যটনের সাথে সংশ্লিষ্টসহ স্থানীয়রা।
জেলার হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন,
করোনার কারণে স্থবির হয়ে পরে পর্যটন। বন্ধ হয়ে যায় পার্বত্যাঞ্চলে পর্যটক আগমন। কর্মহীন হয়ে পরে হাজারো মানুষ। জেলায় কর্মসংস্থান ও আয়ের বড় খাত হচ্ছে পর্যটন। পর্যটন খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তে আমরা খুশি।
সবুজ অরণ্যে ঘেরা প্রাকৃতির অপার সৌন্দর্যের জেলা বান্দরবান। যেখানে রয়েছে মেঘলা, নীলাচল, নীলগিরি, বৌদ্ধ জাদি, চিম্বুক, শুভ্রনীলা, থানচির রেমাক্রি, নাফাকুম, রুমার বগালেক, কেউক্রাডং, লামার মিরিঞ্জা, আলীকদমের আলীর সুড়ঙ্গসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পট। পর্যটন স্পটগুলো খুলে দেওয়ার পর স্পটগুলোতে বাড়বে পর্যটকের সংখ্যা, এমন মত সংশ্লিষ্টদের।
এই ব্যাপারে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শামীম হোসেন বলেন, যেহেতু করোনা ভাইরাস আছে, সেহেতু স্বাস্থ্যবিধি বান্দরবানের পর্যটন স্পটে পর্যটকদের প্রবেশ করতে হবে। তিনি আরো বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ব্যাপারে কড়া নজরদারি থাকবে, মাস্ক ছাড়া কাউকে পর্যটন কেন্দ্র ঢুকতে দেওয়া হবে না।
প্রসঙ্গত, করোনা সংক্রামন প্রতিরোধে গত ১৮মার্চ থেকে জেলার সব পর্যটন কেন্দ্র অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ করে দেয় জেলা প্রশাসন। জেলায় ৬০টি হোটেল মোটেল রয়েছে, আর পর্যটকবাহী যান রয়েছে প্রায় ৪ শতাধিক। এই পর্যটন শিল্পের সাথে জড়িত জেলার প্রায় ২০ হাজার মানুষ।