কেপিএম-মিশন সড়কের বেহাল অবস্থা : জনদুর্ভোগ চরমে
রাঙামাটির কাপ্তাইয়ের ১ নং চন্দ্রঘোনা ইউনিয়নের কেপিএম গেট থেকে শুরু করে খ্রীস্টিয়ান মিশন হাসপাতাল সড়ক পর্যন্ত অধিকাংশ স্থানই বেহাল দশা। ছোট বড় খানাখন্দে ভরাসহ সড়কটি যান চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। শুধু যান চলাচল নয়, জনসাধারণকে পায়ে হেঁটে চলাচল করতেও চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
সড়কের বিভিন্ন স্থানে এইসব গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমে থাকে। তাছাড়া এসব গর্তের উপর দিয়ে অটোরিকশা, মোটর সাইকেল, মালবাহী গাড়ি, কিংবা যাত্রীবাহী ছোট ছোট যানবাহন চলাচলে ব্যাপক ভোগান্তি লেগেই আছে। বর্তমানে সড়কের বিভিন্ন স্থানে লোহার রড বেরিয়ে পড়ায় অনেকটা হতাহতের ঝুঁকি নিয়েই জনসাধারণ ও যানবাহন চলাচল করছে।
গত মঙ্গলবার ওই সড়কে গিয়ে দেখা যায়, কেপিএম আবাসিক এলাকার থানাঘাট গেট থেকে খ্রীষ্টিয়ান মিশন হাসপাতাল পর্যন্ত রাস্তাটির বিভিন্ন স্থানের অবস্থা আরো ভয়াবহ হয়েছে। বিশেষ করে সড়কটির অধিকাংশ স্থানে সৃষ্টি হওয়া গর্ত গুলো দিন দিন আরো বড় হয়ে ভয়াবহ হচ্ছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি জমে কাদায় একাকার হয়ে যায় সড়কটি। এমতাবস্তায় ওই জলাবদ্ধতার পানি ও কাদামাখা সড়কটি দিয়েই জনসাধারণ ও যানবাহন চলাচল করতে হিমসিম খেতে হচ্ছে।
এছাড়া, সড়কের পাশে নদী ভাঙ্গন রোধে ধারক দেয়াল নির্মাণ করা হলেও বর্তমানে সড়কের বেহাল দশায় মারাত্বক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে দেয়ালটি। যেকোন সময় সড়কের কিনারা ধসে পুরো সড়ক ভেঙ্গে যেতে পারে বলে আশংকা করছে স্থানীয়রা।
উক্ত সড়ক দিয়ে নিয়মিত চলাচল করা স্থানীয় বাসিন্দা স্বপন দাশ, বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দীন’সহ কয়েকজন বলেন, এই সড়কটি দিয়ে প্রায় সময় তাদের চন্দ্রঘোনা পোস্ট অফিস, সোনালী ব্যাংক এবং কর্ণফুলী পেপার মিল এলাকা, লিচু বাগান, খ্রীষ্টিয়ান হাসপাতালসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় আসা যাওয়া করতে হয়। কিন্তু সড়কের এমন বেহাল অবস্থায় তাদের অনেক দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। বিশেষ করে বর্ষার সময় অনেকের জামা কাপড় নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি গাড়ি নিয়ে আসলে গাড়ির ঝাঁকুনিতে শরীরে আঘাত সহ্য করতে হচ্ছে। এছাড়া এই সড়ক দিয়ে গাড়ি চালকেরা সহজে আসতে চায়না বলে তারা জানান। অনেক সময় দ্বিগুন ভাড়ায় গাড়ী আনতে হচ্ছে। তাই তারা সকলেই এই সড়কটি দ্রুত সংস্কার করার জোর দাবি জানান।
সিএনজি চালক জলিল, খোকন জানান, ঝুঁকি নিয়ে এই সড়কে সিএনজি চলাচল করতে হয়। কখন দূর্ঘটনা ঘটে যায় কে জানে।
সড়কটির পাশে অবস্থিত চন্দ্রঘোনা খ্রীষ্টিয়ান হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ প্রবীর খিয়াং জানান, প্রথমত এই সড়কের পাশে রয়েছে খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ের কবরস্থান, দ্বিতীয়ত একটি হাইস্কুল ও একটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, এবং সড়কের মিশন গেট এলাকায় প্রতিদিন সকালে পাহাড়ী-বাঙ্গালীদের বাজার বসে, তৃতীয়ত কেপিএম এলাকায় এই হাসপাতালের অনেক রোগী রয়েছে। এমতাবস্থায় কবরস্থানে, বিদ্যালয়ে এবং নিরাপদে রোগীদের আসা-যাওয়ার জন্য সড়কটি দ্রুত সংস্কার করা প্রয়োজন।
চন্দ্রঘোনা ইউপি চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন মিলন বলেন, এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন অসংখ্য যানবাহনসহ লোকজনের চলাচল রয়েছে। এর গুরুত্ব অনুধাবন করে সম্প্রতি সড়কটি সংস্কারের জন্য রাঙামাটি জেলা পরিষদে একটি প্রকল্প জমা দেওয়া হয়েছে। এবং সহসাই সড়কের সংস্কার কাজটি শুরু করা হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এবিষয়ে কাপ্তাই উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ মফিজুল হক জানান, কেপিএম গেট-মিশন সড়ক সংস্কারের জন্য রাঙামাটি জেলা পরিষদে একটি প্রকল্প জমা দেওয়া হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে জেলা পরিষদ থেকে ওই সড়ক সংস্কারের জন্য ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। শীঘ্রই ওই সড়কের সংস্কার কাজ শুরু হবে বলে তিনি জানান।