আগামী ১৮ মার্চ ২য় ধাপে ৫ম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মোট ১২৯ টি উপজেলার মধ্যে রয়েছে বান্দরবান জেলার আলীকদম উপজেলা ও। এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দ্বিমূখী লড়াইয়ের নেমেছেন হেভিওয়েট দুই প্রার্থী জামাল উদ্দিন ও আবুল কালাম। ইতিমধ্যে আলীকদম উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তে চষে বেড়াচ্ছেন এই দুই প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা।
নির্বাচনে বিরোধী দল অংশ না নেওয়ায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী জামাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন দুই বারের নির্বাচিত বিএনপি সমর্থিত আলীকদম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম। মোঃ আবুল কালাম ও জামাল উদ্দিনের নের্তৃত্বের পাল্লাটিও বেশ ভারী। একদিকে জামাল উদ্দিন দীর্ঘদিন বান্দরবান ৩০০নং আসনের এমপি,পরবর্তী পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী’র প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এবং আলীকদম সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হন জামাল উদ্দিন। অবশেষে মেয়াদ শেষ না হওয়ার আগে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেন এবং আলীকদম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনীত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়েছেন।
অন্যদিকে মোঃ আবুল কালাম ছাত্রদল,যুবদল,আলীকদম উপজেলা বিএনপির সভাপতি, আলীকদম সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও টানা দুইবার আলীকদম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং এবার তৃতীয় বারের মত আলীকদম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে অংশ গ্রহণ করছেন। আলীকদম উপজেলায় ৪টি ইউনিয়নের বিশটি ভোট কেন্দ্রের আলাদা আলাদা কেন্দ্র পরিচালনা কমিটির মাধ্যমে দুই প্রার্থী প্রচারণার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল কালাম জানান, আমি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাস করি। ভোটারদের প্রতি আমার আস্থা আছে। যার কারণে আলীকদমের জনগন আমাকে একবার ইউপি চেয়ারম্যান এবং দুই বার উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেছেন। এবারও যদি নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ হয় তাহলে আমি অনেক বড় ব্যবধানে নির্বাচিত হব।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আবুল কালাম বিএনপির একজন সিনিয়র নেতা হওয়া সত্ত্বেও দল নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন করছেন। মোঃ আবুল কালামের সাধারণ সমর্থক থাকার পর ও দলীয় নির্দেশনা উপেক্ষা করে মাঠে নামতে পারছেনা দীর্ঘদিনের মিত্র ও দলীয় নেতা কর্মীরা। এরমধ্যে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে এই হেভিওয়েট প্রার্থীকে। অনেকটা এককভাবে নিজের নির্বাচন পরিচালনা করছেন স্বতন্ত্র হেভিওয়েট প্রার্থী।
এদিকে জামাল উদ্দিন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিশ্চত হওয়ার আগে প্রকাশ্যে বিভাজন তৈরি হলেও দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত হওয়ার পর দলীয় নেতাদের হস্তক্ষেপে নিরসন হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগের দলীয় নেতাকর্মী ঐক্যবদ্ধ হয়ে আলীকদম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থীকে বিজয়ী করতে কাজ করছেন। এর মধ্যে দুই প্রার্থী দিনরাত এক করে ব্যাপক পথসভা ও গণসংযোগ করছে নিজেদের জয়ী করতে।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সমর্থীত নৌকা মার্কার প্রার্থী জামাল উদ্দিন জানান, আমি বিশ্বাস করি জনগণ স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিকে ভোট দিবে। এখন পর্যন্ত আমরা যা সাড়া পেয়েছি, তা যদি শেষে পর্যন্ত ধরে রাখতে পারি তাহলে আমরা বিজয়ী হব। দীর্ঘদিন আলীকদম উপজেলা অভিভাবকশুণ্য ছিল। জনগন এখন বুঝতে শিখেছে সুতরাং জনগণ সময়মত সঠিক সিদ্ধান্তে নেবে।
উল্লেখ্য, আগামী ১৮ মার্চ আলীকদম উপজেলাসহ জেলার ৭টি উপজেলা পরিষদের ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হবে।