খাগড়াছড়িতে দুই পক্ষের সংঘর্ষে অর্ধ শতাধিক দোকান আগুনে পুড়ে ছাই
খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলায় পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গত বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫ টায় লারমা স্কয়ার এলাকায় এই সংঘর্ষ হয়। এক পর্যায়ে বিক্ষুব্ধ বাঙালিরা পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর দোকান ও ঘরবাড়ি আগুন লাগিয়ে দেয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্র জানা যায়, খাগড়াছড়ি শহরের নোয়াপাড়া (নিউজিল্যান্ড) এলাকায় বুধবার ভোরে মোহাম্মদ মামুন (৩০) নামের এক ব্যক্তিকে মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে মারধর করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে সদর হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মামুন খাগড়াছড়ি সদরের শালবন মধ্যপাড়ার মৃত নূর নবীর ছেলে। এ ঘটনার প্রতিবাদে দীঘিনালায় বিক্ষোভ মিছিল বের করেন বাঙালিরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাঙালিরা বিকেল ৫ টার দিকে জামতলি ও বোয়ালখালী বাজারের দিক থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। তাঁরা লারমা স্কয়ারের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে এ সময় পাহাড়িরা বাধা দিলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এই ঘটনায় লেনিন চাকমা নামের একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আহত হয়েছে। দুই পক্ষের সংঘর্ষের এক পর্যায়ে লারমা স্কয়ার ও দীঘিনালা কলেজের পাশের প্রায় ৪৭টি ঘরবাড়ি ও দোকানপাট জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।
দীঘিনালা বাজারের মো. লোকমান হোসেন বলেন, মামুন হত্যার বিচারের দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে তাঁরা মিছিল বের করেছিলেন। পরে পাহাড়িরা এসে বাধা দিয়েছেন। এ জন্য ঝামেলার সৃষ্টি হয়েছে। লোকমান বলেন, ‘এভাবে ঘরবাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হবে, এটা ভাবিনি।’
লারমা স্কয়ার এলাকার বাসিন্দা সন্তোষ চাকমা বলেন, মিছিলে পাহাড়িরা কেউ বাধা দেননি। মিছিল থেকেই অতর্কিত ভাবে হামলা চালিয়ে আগুন দেওয়া হয়েছে।
খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান বলেন, পানখাইয়াপাড়া প্রাইমারি স্কুলে শান্তি–শৃঙ্খলা সভার আয়োজন করা হয়েছিল। মূলত গতকালের ঘটনার বিষয়ে ওই সভা ডাকা হয়। সভা চলাকালেই দীঘিনালায় সংঘর্ষের বিষয়ের জানতে পারি। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা টহল দিচ্ছেন।
এদিকে, এই ঘটনার প্রতিবাদে গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে বান্দরবান শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে শত শত পাহাড়ী ছাত্রছাত্রীরা।