খাগড়াছড়ির দীঘিনালা ও সদর উপজেলায় পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ১৭ জন। তাদের মধ্যে চারজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে, তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম রেঞ্জ পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আহসান হাবিব পলাশ গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহতরা হলেন, ধনঞ্জয় চাকমা (৫০), রুবেল ত্রিপুরা (২৫) ও জুনান চাকমা (২০)।
ডিআইজি পলাশ জানান, ধনঞ্জয় গত রাত সাড়ে ১০টায় এবং রুবেল ও জুনান রাত দেড়টায় মারা গেছেন। এদের মধ্যে ধনঞ্জয় দীঘিনালায় এবং রুবেল ও জুনান সদরে আহত হয়েছিলেন। খাগড়াছড়ি আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়।
পলাশ বলেন, আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ স্ব স্ব পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যৌথভাবে টহল দিচ্ছে।
খাগড়াছড়ি আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) রিপাল বাপ্পী চাকমা বলেন, দীঘিনালা ও সদর উপজেলা থেকে আসা নয়জন বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এর বাইরে উন্নত চিকিৎসার জন্য চারজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
খাগড়াছড়ি হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন চারজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাদের পায়ে, কোমরে ও পেটে গুলি লেগেছে।
স্থানীয় সূত্র অনুসারে, গত রাতেও খাগড়াছড়ি সদর এলাকায় টানা গুলির শব্দ শোনা গেছে, পরিস্থিতি ছিল থমথমে। দীঘিনালায় এই ঘটনার পর অনেকে নিজ বাসাবাড়ি ছেড়ে গত রাতেই নিরাপদ স্থানে অবস্থান নিয়েছেন। সেখানে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী টহল দিচ্ছে।
প্রসঙ্গত : বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) খাগড়াছড়ি শহরের নোয়াপাড়া (নিউজিল্যান্ড) এলাকায় মো.মামুন নামে এক যুবককে মোটর সাইকেল চুরির অভিযোগে পিটিয়ে হত্যার ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা কলেজ এলাকা থেকে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। বিক্ষোভ মিছিল লারমা স্কয়ার অতিক্রম করার সময় কিছু পাহাড়ি শিক্ষার্থীর সঙ্গে বাঙ্গালীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। এই নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে দীর্ঘ সময় ধরে উত্তেজনা বিরাজ করে। এতে উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়। পরে বিকেলে একদল উত্তেজিত জনতা লারমা স্কয়ার এলাকার বাজারে আগুন দেয়। এতে ৫০টির বেশি দোকান পুড়ে যায়, এই ঘটনায় অন্তত ১০জন আহত হয়। বর্তমানে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তিন পার্বত্য এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে আর পরিস্থিতি মোকাবেলায় আইনশৃংঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন রয়েছে।
এদিকে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলায় পাহাড়ীদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগে ও সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে আজ শুক্রবার সকালে বান্দরবান ও রাঙামাটি শহরে বিভিন্ন ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে পাহাড়ী ছাত্রছাত্রীরা, এসময় সংঘাত এড়াতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয় ##