খাগড়াছড়িতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সংকট

purabi burmese market

খাগড়াছড়ির রামগড়ের বেশ কিছু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির হার বাড়ছে না। উপজেলার ৪৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২৫টিতেই শিক্ষার্থীর সংখ্যা একশ’র কম। কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে ক্যাচমেন্ট এলাকায় নূরানী মাদরাসা ও কিন্ডার গার্টেন স্কুলসহ দারিদ্র্যতাকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা। উপজেলা শিক্ষা অফিসের সর্বশেষ গত ফেব্রুয়ারির মূল্যায়ন জরিপে এসব তথ্য ওঠে আসে।

উপজেলা শিক্ষা অফিসের ফেব্রুয়ারি মাসের তথ্য থেকে জানা যায়, নুরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা সর্বনিম্ন ৩৭ জন। ছোটখেদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৪৬, সোমাচন্দ্র পাড়ায় ৫০ জন, চান্দপাড়া, ওয়াইফাপাড়া ও বালুখালী আলো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫২ জন করে, দক্ষিণ লাকমুপাড়া, নিতাই বৈষ্ণবপাড়া ও নজিরটিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫৩ জন করে, অংহলা ছিনছড়িপাড়া ৫৪ জন, উত্তর লামকুতে ৫৫ জন, পূর্ব চৌধুরীপাড়ায় ৫৭ জন, তেমরণ কার্বারীপাড়ায় ৬০ জন, মানিকচন্দ্রপাড়ায় ৬০ জন, বুদ্ধধন কার্বারীপাড়ায় ৬৩ জন, দাতারাম কার্বারীপাড়ায় ৬৪ জন, পূর্ব বলিপাড়া ৬৮ জন এবং সোনারখীল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৭০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এ দৃশ্য শুধু রামগড়েই নয়। জেলার অন্যন্য উপজেলাতেও দৃশ্যমান।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সংকটের এই পরিস্থিতির জন্য করোনাকালীন স্কুল বন্ধ থাকা, দুর্গম ও কম ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা, ক্যাচমেন্ট এলাকায় নূরানী মাদরাসা ও কিন্ডার গার্টেনসহ দারিদ্র্যতাকে দায়ী করেছেন কর্মকর্তারা। বিদ্যালয়ের ক্যাচমেন্ট এলাকার শতভাগ শিক্ষার্থী ভর্তিতে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকদের নিয়মিত হোম ভিজিট, পরিদর্শন এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তাদের বাড়তি নজরদারীসহ বেশকিছু কার্যক্রম গ্রহণ করার পরও আশংকাজনক হারে কমে যাচ্ছে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা।

নুরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সজল কুমার দত্ত বলেন, করোনাকালীন বিদ্যালয় বন্ধ থাকা এবং ক্যাচমেন্ট এলাকায় অন্যান্য প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠা ও কম বসতিপূর্ণ হওয়ায় এসব স্কুলে শিক্ষার্থী কম। তবে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়মুখী করতে শিক্ষকরা বাড়ি বাড়ি পরিদর্শন করায় সম্প্রতি বিদ্যালয় খোলার পর শিক্ষার্থী বেড়েছে বলে তিনি জানান।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ ইলিয়াছ জানান, শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয় মুখী করতে সব ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তারপরও সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের আশপাশে নূরানী মাদরাসা ও কিন্ডার গার্টেন থাকায় অভিভাবকরা ওইদিকে ঝুঁকছেন। তবে নতুন করে ক্যাচমেন্ট এলাকায় যেন কোনো প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠতে না পারে সে ব্যাপারে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বলেও তিনি জানান।

dhaka tribune ad2

উপজেলা নির্বাহী অফিসার খোন্দকার মো. ইখতিয়ার উদ্দিন আরাফাত বলেন, করোনাকালীন দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় সাময়িক সংকট তৈরি হয়েছে তাছাড়া দুর্গম এলাকায় বসতি কম থাকাসহ দারিদ্র্যতায় অনেক অভিভাবকের বেখেয়ালিপনায় শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় বিমুখ হয়ে পড়ছে। তবে এ সংকট উত্তোরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথা তিনি জানান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা চেয়ারম্যান বিশ্ব প্রদীপ কুমার কার্বারী বলেন, শিক্ষার্থী যাতে ঝরে না পড়ে বিদ্যালয়মুখী হয় সেজন্য মিড-ডে মিল, শতভাগ উপবৃত্তি প্রদান, বিনামূল্যে বই বিতরণ, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার সহ খেলার মাঠ, পাকা দ্বিতলা ভবন সহ মনোরম পরিবেশে শিক্ষার সব ব্যবস্থা করেছে সরকার।

আরও পড়ুন
আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশিত হবে না।