খাগড়াছড়ি ও সাজেকের পর্যটন ব্যবসায় ধস
বিএনপিসহ সরকারবিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ডাকা হরতাল অবরোধের প্রভাব পড়েছে খাগড়াছড়ির পর্যটন খাতে। সেখানকার পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে নেই পর্যটক। ইতোমধ্যে পর্যটকরা হোটেল বুকিং বাতিল করছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, বছর জুড়ে খাগড়াছড়ির উঁচু-নিচু পাহাড়, সর্পিল সড়ক ও সবুজের সমারোহে পর্যটকরা মুখরিত হলেও এখন ফাঁকা। রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণেই খাগড়াছড়ি পর্যটকশুন্য। অথচ প্রতি বছর শীত মৌসুমের শুরুতে জমজমাট থাকে এই পার্বত্য জেলার আলুটিলা, রিচাং ঝর্ণা, জেলা পরিষদ পার্কসহ দর্শনীয় সব স্পট। এবার সেখানকার কর্মীদের অলস সময় কাটছে।
একই অবস্থা বাংলার দার্জিলিং খ্যাত মেঘের রাজ্য রাঙামাটির সাজেকেরও। এই দুই পর্যটন এলাকায় গত ১৫ দিনের হরতাল ও অবরোধে চলছে সুনসান নীরবতা। পর্যটন ঘিরে এখানে গড়ে ওঠা প্রায় ৩০০ হোটেল-মোটেল, রিসোর্টে অগ্রিম বুকিং নেই। তেমনি পর্যটক বহনকারী শতাধিক গাড়ির চাকাও প্রায় অচল। ফলে এসবের সঙ্গে জড়িত পাঁচ সহস্রাধিক শ্রমিক, দোকান কর্মচারীর অলস সময় পার করলেও মালিক পক্ষ তাঁদের বেতন, ভাতা গুনতে গিয়ে পুঁজিতে পড়ছে টান। এক কথায় পর্যটন খ্যাত খাগড়াছড়ি ও সাজেকে এখন সুনসান নীরবতা ও স্থবিরতা। গড়ে পর্যটক কমেছে ৭০ শতাংশ।
দীঘিনালা-সাজেক সড়কে নিয়মিত পর্যটক পরিবহনকারী জীপ চালক ইয়াসিন আলী জানান, ধাপে ধাপে অবরোধের কারণে খাগড়াছড়ি ও সাজেকে পর্যটক আসা বন্ধ হয়ে গেছে। এখন পর্যটকের ভাড়া বাদ দিয়ে লাকড়ির ভাড়া মারছি।
আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রের দ্বায়িত্বতে থাকা কোকোনাথ ত্রিপুরা বলেন, ভরা মৌসুমে বিপুলসংখ্যক পর্যটকের সমাগম হয়। কিন্তু এবার অবরোধ-হরতালের কারণে পর্যটক নেই বললেই চলে। এভাবে পর্যটক না আসলে আমরা আর্থিকভাবে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হব।
আলুটিলা কফি হাউজ অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের পরিচালক মেহেদি হাসান বলেন, এখানে বর্তমানে স্থানীয় মানুষ ছাড়া কেউ আসে না। অথচ আমাদের নিয়মিত ব্যয় হচ্ছে।
ভরা মৌসুমেও পর্যটক না থাকায় হতাশ ব্যবসায়ীরা। রাজনৈতিক অস্থিরতা দীর্ঘ হলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা তাদের।
খাগড়াছড়ি আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অনন্ত বিকাশ ত্রিপুরা বলেন, ‘এমন রাজনৈকিত অস্থিরতায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি আমরা। এভাবে চলতে থাকলে অনেকেরেই দেউলিয়া হতে হবে, পর্যটন খাত পড়বে বিপর্যয়ে।’