খাগড়াছড়ি জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের বিরুদ্ধে স্মারকলিপি

NewsDetails_01

খাগড়াছড়ি জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের অসৌজন্যমূলক আচরণের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানিয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।

গত রবিবার (৩ এপ্রিল) দুপুরে জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস’র হাতে এ স্মারকলিপি প্রদান করেন দৈনিক মানবজমিন ও বিডি২৪লাইভের খাগড়াছড়ি জেলা প্রতিনিধি মো. আবদুর রউফ। এসময় আবদুর রউফ’র সাথে সংহতি প্রকাশ করেছেন খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সময় টিভির স্টাফ রিপোর্টার জীতেন বড়ুয়া, খাগড়াছড়ি সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও দৈনিক সমকালের জেলা প্রতিনিধি প্রদীপ চৌধুরী, খাগড়াছড়ি টিভি জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি ও জিটিভির জেলা প্রতিনিধি এডভোকেট জসিম উদ্দিন মজুমদার, খাগড়াছড়ি সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও ডিবিসি নিউজের জেলা প্রতিনিধি সৈকত দেওয়ান, ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি সমির মল্লিকসহ বিভিন্ন মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকরা।

স্মারকলিপি সূত্রে জানা যায়, গত ২২ ফেব্রুয়ারী পানছড়ি উপজেলা গুচ্ছগ্রামের খাদ্যশস্য বিতরণ সংক্রান্ত তথ্যের জন্য ২০০৯ এর ৮ ধারায় পানছড়ি উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা কফিল উদ্দিন বরাবর একটি দরখাস্ত দেয় দৈনিক মানবজমিন ও বিডি২৪লাইভের খাগড়াছড়ি জেলা প্রতিনিধি মো. আবদুর রউফ। এতে তথ্য প্রাপ্তির নির্দিষ্ট দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও তথ্য না দিয়ে তথ্য দিচ্ছি দেব বলে উক্ত কর্মকর্তা নির্দিষ্ট সময় পার হওয়ার পর আরও এক সপ্তাহ সময় চেয়ে নেন। সময় পার হলে পানছড়ি উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে পরপর কয়েকদিন কল দেওয়া হলে তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি।

এদিকে তথ্য প্রাপ্তির নির্দিষ্ট দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও কেন তথ্য দেওয়া হচ্ছেনা তা জানতে গত মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) সকাল ১১টায় দৈনিক মানবজমিন ও বিডি২৪লাইভের খাগড়াছড়ি জেলা প্রতিনিধি মো. আবদুর রউফ আরও দুইজন সহকর্মীকে সাথে নিয়ে পানছড়ি উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে যান। সেখানে তথ্য দেওয়া হবে না বলে তাকে মৌখিকভাবে জানানো হয়। তখন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সুমাইয়া নাজনীনকে এ বিষয়ে মুঠোফোনে কল করে জানতে চাওয়া হলে তিনি কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান।

NewsDetails_03

এরপর দৈনিক মানবজমিন ও বিডি২৪লাইভের খাগড়াছড়ি জেলা প্রতিনিধি মো. আবদুর রউফ তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করে তথ্য না পাওয়ার বিষয়টি জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস মহোদয়কে অবহিত করেন। এরপরের দিন ফোনে পানছড়ি উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিসের এক কর্মচারী কেন তথ্য দেওয়া হবেনা এর লিখিত জবাব জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় থেকে নিতে বলেন।

এরপর গত বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) দুপুর ১২টায় দৈনিক মানবজমিন ও বিডি২৪লাইভের খাগড়াছড়ি জেলা প্রতিনিধি মো. আবদুর রউফ অপর এক সহকর্মীকে সাথে নিয়ে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে গেলে খাদ্য নিয়ন্ত্রক সুমাইয়া নাজনীন প্রথমে তথ্য দিতে এবং এ বিষয়ে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এক পর্যায়ে তার সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে তাকে এলাকা ছাড়া করার হুমকি দেন। এবং কেন জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস মহোদয়কে দিয়ে ফোন দেওয়ানো হয়েছে এর কৈফিয়ত চেয়ে জেলা প্রশাসককে কটাক্ষ মূলক কথা বলে তার উপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

এদিকে খাগড়াছড়ি জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সুমাইয়া নাজনীন এর অসৌজন্যমূলক আচরণের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে স্থানীয় সাংবাদিক ও সুশীল ব্যাক্তিগণ তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানিয়েছেন।

খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাব সভাপতি জীতেন বড়ুয়া বলেন, ‘খাগড়াছড়ি জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সাংবাদিকদের সাথে যে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন তা মোটেও সমীচীন নয়। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

খাগড়াছড়ি সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি প্রদীপ চৌধুরী বলেন, ‘তথ্য অধিকার আইন একজন সাংবাদিকের খুঁটি। সাংবাদিক যখন তথ্য অধিকার আইনে তথ্য চাইবেন তখন তাকে অবশ্যই তথ্য দিতে হবে। তা না করে খাগড়াছড়ি জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সাংবাদিককে এলাকা ছাড়া করার যে হুমকি দিয়েছেন তাতে আমরা বিব্রত।’

আরও পড়ুন