বান্দরবানের কর্মরত সাংবাদিকরা আমরা অত্যন্ত উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র রফিকুল আলম ও তাঁর পালিত ক্যাডার বাহিনী উপর্যুপরি সেখানকার সাংবাদিকদের হামলা এবং প্রকাশ্যে প্রাণ নাশের হুমকি দিচ্ছেন। এ অবস্থায় সাংবাদিকরা জীবনের চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন।
স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের মত সরকারি পদে দায়িত্বরত থাকা অবস্থায় একজন মেয়রের এ রকম অপরাধমূলক কাজে লিপ্ত হওয়া একদিকে তাঁর চরমভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার, অপরদিকে সরকারি প্রশাসন ও আইন-কানুন তোয়াক্কা না করে সরকারকে চ্যালেঞ্জ করার শামিল। তাঁর বেপরোয়া ও সরকারি প্রশাসনসহ কাউকে তোয়াক্কা না করার আচরণই প্রমাণ করে খাগড়াছড়িতে শুধু সাংবাদিকরা নয়, সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ জিম্মি হয়ে পড়েছেন।
নিশ্চিতভাবে আমরা জানতে পেরেছি, গত ১৮ ডিসেম্বর মেয়র রফিকুল আলমের ক্যাডার বাহিনী প্রথম আলোর খাগড়াছড়ির ফটো সাংবাদিক নীরব চৌধুরীকে পৌরসভার কার্যালয়ে তুলে নিয়ে আসে। নীরব চৌধুরী অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ছবি তুলছিলেন। পৌরসভার কার্যালয়ে মেয়র নিজে ও তাঁর ক্যাডার বাহিনী দিয়ে নীরব চৌধুরীকে অমানুষিক নির্যাতন চালিয়েছেন।
পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে গত মঙ্গলবার কর্মরত সাংবাদিকরা মানববন্ধন নামেন। সেখানেও মেয়রের ক্যাডার বাহিনী বাধা দেয় এবং মানববন্ধনের মাইক কেড়ে নিয়ে ওই মাইকে প্রকাশ্যে সাংবাদিকদের প্রাণ নাশের হুমকি প্রদান করে। সাংবাদিকরা সবাই জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে বাধ্য হন এবং এখন তাঁরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন।
খাগড়াছড়ির পৌর মেয়র রফিকুল আলমের সন্ত্রাসী বাহিনী পালন ও নিজে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে লিপ্ত হওয়ার এ রকম ঘটনায় আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একই সঙ্গে খাগড়াছড়ির সাংবাদিকদের জীবনের নিরাপত্তা বিধানে অবিলম্বে ব্যবস্থাগ্রহনের জন্য দাবি জানাচ্ছি –
১. অবিলম্বে মেয়র রফিকুল আলম ও তাঁর পালিত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হোক
২. ক্ষমতার অপব্যবহার ও অপরাধমূলক কাজে লিপ্ত থাকার দায়ে মেয়রের পদ থেকে রফিকুল আলমকে অপসারণ করা হোক।
৩. অবৈধভাবে বালু উত্তোলনসহ তাঁর সকল বেআইনি কর্মকান্ড, অনিয়ম-দুর্নীতির তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
আমরা আশাবাদি সরকার ও পুলিশসহ সরকারি প্রশাসন উপরোক্ত দাবি গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করে অবনতিশীল খাগড়াছড়ির পরিস্থিতি উন্নয়নে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।