খাগড়াছড়িতে ৪৪ পরিবারকে উদ্বাস্তু করার অভিযোগ ইউপিডিএফর বিরুদ্ধে

আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটির বিভিন্ন উপজেলায় ৪৪ পাহাড়ী পরিবারকে উদ্বাস্তু করার অভিযোগ উঠেছে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ) এর বিরুদ্ধে। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি পক্ষের সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস-এমএন লারমা) সমর্থিত ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের সদস্যদের বৈসাবি উৎসব চলাকালীন গত ১৫ এপ্রিল প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে এক কাপড়ে বাড়ি ছাড়তে বাধ্য করার অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। উদ্বাস্তু হওয়ার পর থেকে খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলার মুবাছড়ি ইউনিয়নের খুলারাম পাড়া এলাকার একটি পরিত্যক্ত স্কুল ভবনে আশ্রয় গ্রহণ করেছেন। আশ্রয়গ্রহণকারীদের মাঝে নারী ও শিশুরা নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। শুক্রবার দুপুরে উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় উদ্বাস্তু পরিবারের সদস্যদের মাঝে ত্রাণ ও মশারী বিতরণ করা হয়েছে।
জানা গেছে, পিসিজেএসএস সমর্থন করায় খাগড়াছড়ির মহালছড়ি, লক্ষীছড়ি, মাটিরাঙা, গুইমারা ও রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলার ২৫টির বেশী গ্রামের ৪৪ পরিবারকে বেধে দেয়া সময়ের মধ্যে ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য করা হয়। প্রাণনাশের ভয়ে গত ১৫ এপ্রিল পরিবার পরিজন নিয়ে উদ্বাস্তুর খাতায় নাম লিখাতে হয়েছে অনেককে।
ত্রাণ নিতে আসা আদর্শী তালুকদার বলেন, নিজেদের ঘর বাড়ি রেখে এখন পরিত্যক্ত ভবনের একটি কক্ষে গাদাগাদি করে থাকতে হচ্ছে। বিশুদ্ধ খাবার পানি ও খাবারের সঙ্কটের পাশাপাশি গরমে অতিষ্ট হয়ে শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
সুনয়ন চাকমা নামে আরেকজন বলেন, জেএসএস সমর্থিত যুব সমিতির সাথে কাজ করায় আমাকে ও পরিবারের সদস্যদের জোর করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে ইউপিডিএফর সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। এখন এলাকায় গেলে প্রাণনাশের ভয় আছে।
মহালছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বিমল কান্তি চাকমা বলেন, সন্ত্রাসীদের অস্ত্রের কাছে জনপ্রতিনিধিরাও অসহায়। নিজেদের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে জনগণকে কষ্ট দেয়া হচ্ছে। পাহাড়ের বৃদ্ধমান সমস্যা সমাধানে সরকারের দ্রæত হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপিডিএফ সংগঠক মাইকেল চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি অশান্ত রাখতে একটি পক্ষ পাহাড়ে সার্কাস চালু করেছে। জনপ্রতিনিধিদের ব্যানারে একটি বিশেষ মহল সার্কাস দলের সদস্যদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করে ইউপিডিএফর ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার চেষ্টা চালাচ্ছে।
মহালছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তামান্না নাসরিন ঊর্মি বলেন, পাহাড়ের আঞ্চলিক একটি রাজনৈতিক সংগঠনের সমর্থকদের হুমকিতে কিছু পরিবার উদ্বাস্তু হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তদন্ত করে পরিবারগুলোকে নিজ বাস্তুভিটায় ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পাহাড়ের আঞ্চলিক সংগঠনগুলো চলতি মাসের শুরু থেকে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছে। একজন সমাজকর্মীসহ ৬ জনের প্রাণ গিয়েছে পাহাড়ের সন্ত্রাসীদের হাতে। হত্যাকান্ডের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ রয়েছে সংগঠনগুলোর।

আরও পড়ুন