খাগড়াছড়ির বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে অজ্ঞাত নারী ধুঁকে ধুঁকে মরছে !

NewsDetails_01

খাগড়াছড়ির রামগড়ে ভারত সীমান্তে ফেনী নদীর মাঝভাগে বালুর চরে রোদবৃষ্টিতে টানা ৪ দিন যাবৎ ভারত থেকে পুশইন করা মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারী ধুঁকে ধুঁকে মরছে। কখনো বসে, কখনো শুয়ে আবার কখনো হামাগুড়ি দিচ্ছেন মরণদশায় পতিত এই নারী।

গত শুক্রবার ভারতে ফেরত পাঠাতে দুদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি-বিএসএফ এর মধ্যে পতাকা বৈঠক হলেও কোন সুরাহা ছাড়াই বৈঠক শেষ হয়। এখন পর্যন্ত কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে না পারায় ঐ নারী পড়ে আছেন নদীতে।

অভিযোগ রয়েছে, ভারতীয় সীমান্ত বাহিনী সুযোগ বুঝে এসব ভারসাম্যহীনদের ফেনী নদীর জিরো পয়েন্টে ঠেলে দেয় যাতে তারা বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে পারে। নারীটি বারবার ভারতের দিকে যেতে চাইলেও বিএসএফ ও স্থানীয় লোকজন তাকে বাধা দিচ্ছেন।

এদিকে বিএসএফ-এর এমন অমানবিক কর্মকান্ডে বাংলাদেশ সীমান্তের লোকজনের মধ্যে দেখা দিয়েছে করোনা ভাইরাসের আতংক। এই আতংকের মাঝেও মানবতার বিবেচনায় তাঁকে খাবার পৌঁছে দিচ্ছে বাংলাদেশের অনেকেই।

NewsDetails_03

গত বৃহস্পতিবার (২ এপ্রিল) দুপুর ভারসাম্যহীন ঐ নারী নদী পার হয়ে বাংলাদেশ আসতে চাইলে বিজিবি বাঁধা দেয়। পরে শুক্রবার সকাল ১০টায় আনন্দপাড়া আবাসিক এলাকার ‘নোম্যান্স ল্যান্ড’-এ দুদেশের সীমান্ত বাহিনীর কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে এবং বিকাল সাড়ে ৫ টার সময় মহামুনি সংলগ্ন বাংলাদেশ ভারত মৈত্রী সেতু ১ এর ‘নোম্যান্স ল্যান্ড’-এ ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও কোন প্রকার সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়েছে।

এই বিষয়ে মুঠো ফোনে জানতে চাইলে রামগড় ৪৩ বিজিবির জোন কমান্ডার লে: কর্ণেল তারিকুল হাকিম জানান, গত বৃহস্পতিবার থেকে ওই নারীকে বাংলাদেশ-ভারতের সীমান্তবর্তী ফেনী নদীর ‘নোম্যান্স ল্যান্ড’-এ দেখা যায়। ওই নারী যখন বাংলাদেশ সীমান্তে প্রবেশ করতে চায় তখন বিজিবি সদস্যরা তাকে বাঁধা দেয়।

অন্যদিকে বিএসএফ’র পক্ষ থেকে দাবী করা হচ্ছে নারীটি বাংলাদেশী। বাংলাদেশের কোন জায়গা থেকে এখনো পর্যন্ত কেউ তাকে দাবী না করায় বাংলাদেশের ভিতরে প্রবেশে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।

এইদিকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভারসাম্যহীন নারীটিকে অমানবিক ভাবে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ বাংলাদেশের দিকে ঠেলে দিলে নারীটি নদীর মাঝখানে টানা ৪দিন পড়ে আছে। প্রথমদিন অর্ধাহারে অনাহারে কাটালেও গত তিনদিন যাবত বাংলাদেশী লোকজন ঐ নারীর কাছে খাদ্য ও পানি পৌঁছে দিচ্ছেন। স্থানীয়রা সীমান্ত নদীতে পড়ে থাকা ঐ নারীকে তার প্রকৃত দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে প্রশাসন ও মানবাধিকার সংগঠনগুলির সহায়তা কামনা করেছেন।

আরও পড়ুন