জেলা আওয়ামী লীগ কর্তৃক বহিস্কৃত’কে ফুল দিয়ে বরণ করলো থানচি’র আওয়ামী লীগ নেতারা !

purabi burmese market

বান্দরবানে থানচি উপজেলা আওয়ামী লীগ থেকে ২ মাস আগে বহিস্কৃত ও নব নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান ভাগ্য চন্দ্র ত্রিপুরা এর গলায় মালা ও হাতে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা ও বরন করে নিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা।

গতকাল মঙ্গলবার ৮ ফেব্রুয়ারী দুপুরে বান্দরবান জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের প্রাঙ্গনে ফুল দিয়ে বরন করার এই ঘটনা ঘটে। এসময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, সিমন ত্রিপুরা, সহ সভাপতি মালিরাং ত্রিপুরা, স্বেচ্ছা সেবক লীগের যুগ্ন সম্পাদক বাসিংঅং মারমা, যুব লীগের সহ সভাপতি চহাইনু মারমা, রেমাক্রী ইউপি আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক হ্লাথোয়াইপ্রু মারমাসহ সহযোগী সংগঠনের অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

ফুলেল শুভেচ্ছা ও বরন করার চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে থানচি উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের মাঝে হতাশা ও অসন্তোষ বিরাজ করে। একজন বহিস্কৃত নেতাকে ফুল দিয়ে বরন করা দলীয় নীতির মধ্যে পড়েনা। দলীয় শৃংঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বান্দরবান জেলা আওয়ামীলীগ থেকে বহিস্কারাদেশ দিয়েছিল দুইমাস আগে। কিন্তু উপজেলা নেতারা কিভাবে তাকে ফুল দিয়ে দলীয় শৃংঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি উবামং মারমা,সহ সভাপতি মোহসিন মিঞা ও অনেকের সাথে দেখা হলে তারা প্রতিবেদককে জানান, বহিস্কৃত এক নেতাকে ফুল দিয়ে মালা পড়িয়ে দেওয়া সংগঠন বিরোধী কাজ। অবশ্যই উপজেলা সভাপতি অনুমতি দিয়েছে, অনুমতি না থাকলে কি করে এ কাজ করতে পারে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানে আদর্শের প্রতি শ্রদ্ধা, অনুগত্য থাকলে এ কাজ করতে পারে না। যারা অন্য দল থেকে অনুপ্রবেশ করে তারাই এ কর্মকান্ডের সাথে জড়িত।

জানা যায়, গত ৬ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে বান্দরবান জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন-সাধারন সম্পাদক লক্ষী পদ দাশ স্বাক্ষরিত বহিস্কারাদেশ ভাগ্য চন্দ্র ত্রিপুরাকে দল থেকে বহিস্কার করা হয়। ভাগ্য চন্দ্র ত্রিপুরা ২০১৯ সালে আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পান।

dhaka tribune ad2

জানা যায়, ৪র্থ ধাপে ইউপি নির্বাচনে থানচি উপজেলা ২ নং তিন্দু ইউনিয়নে ভাগ্য চন্দ্র ত্রিপুরা বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে অংশ নেন। বিপুল ভোটের ব্যবধানে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মংপ্রুঅং মারমাকে হারান। গত ২৬ ডিসেম্বর নির্বাচনে উপজেলার ৪ টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ৩টিতে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী জয় হন। ১টিতে বিদ্রোহী প্রার্থী ভাগ্য চন্দ্র ত্রিপুরা জয় হন। গতকাল মঙ্গলবার বান্দরবান জেলা প্রশাসক সভা কক্ষে নব নির্বাচিত চেয়ারম্যানদের শপথ গ্রহন অনুষ্ঠিত হয়। শপথ গ্রহন শেষে জেলা প্রশাসক কার্যালয় প্রাঙ্গনে নৌকা প্রতীকের বিজয়ী চেয়ারম্যান তিনজনকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা ও বরন করার কথা ছিল। কিন্তু বহিস্কার প্রাপ্ত নেতাকে ও ফুল দিয়ে বরন করেন তারা।

এই ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক, নব নির্বাচিত রেমাক্রী ইউপি চেয়ারম্যান মুইশৈথুই মারমা রনি বলেন, আমরা যখন জেলা প্রশাসক কার্যলয় থেকে শপথ শেষে বাহির হচ্ছি, তখন উপজেলা আওয়ামী লীগ আমাদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে, তখন তিনি পাশে দাঁড়ানো ছিল তখন নেতাকমীরা ভুল করে তাকে ফুল দিয়েছেন।

এই ব্যাপারে নব নির্বাচিত তিন্দু ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা ভাগ্য চন্দ্র ত্রিপুরা বলেন, থানচি উপজেলার নব নির্বাচিত ৪ ইউপি চেয়ারম্যানদের জন্য প্রতিজনে ২টি করে ফুলের মালা ও ১টি করে ফুলের তোড়া নেতা কর্মীরা বানিয়ে নিয়ে আসছিল। আমার জন্য ওছিল আমাকে ও দাঁড়াতে বলছে, তাই তাদের সংবর্ধনা গ্রহন করেছি।

আরও পড়ুন
আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশিত হবে না।