তবুও জীবন চলছে যেন জীবনের নিয়মে !

রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার ৫ নং ওয়াগ্গা ত্রিপুরাছড়ির কৃষক যতিন বিকাশ তংচঙ্গ্যা, কৃষি তাঁর একমাত্র পেশা। তার ক্ষেতের উৎপাদিত পণ্য বেগুন, লাউ সাপ্তাহিক হাটে বিক্রি করে সংসার চালায়। কিন্ত করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে কাপ্তাইয়ের হাটবাজার বন্ধ থাকায় এখন নিরুপায় হয়ে সাফছড়ি রাস্তার উপর বিক্রি করতে হচ্ছে তাঁর ক্ষেত্রের পণ্য। মাঝে মাঝে ২/১ জন ক্রেতা আসলেও অধিকাংশ পণ্য পচে যাচ্ছে তাদের। দিনে বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১০০ থেকে ২০০ টাকা। অথচ সাপ্তাহিক বড়ইছড়ি এবং ঘাগড়া বাজারে গড়ে হাজার টাকার উপর বিক্রি হতো তাদের ক্ষেতের উৎপাদিত ফসল।

আজ মঙ্গলবার (৩১ মার্চ) বিকেল ৪ টায় ওয়াগ্গা ইউনিয়নের সাফছড়ি এবং বটতলি পাড়ায় সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সড়কের পাশে ক্ষেত্রের টমেটো, বেগুন, থানকুনি পাতা, রাঙ্গা আলু, নিয়ে বিক্রি করতে এসেছেন ত্রিপুরাছড়ির শচীন তংচঙ্গ্যা, বাবুল তংচঙ্গ্যা সাফছড়ি পাড়ার রুপনা তংচঙ্গ্যা এবং মেনকা তংচঙ্গ্যা। তাদের চোখে মুখে সকলের বিষাদের ছায়া, ক্রেতা কম তবুও মাঝে মাঝে কিছু পাড়ার লোক এসে নিয়ে যাচ্ছে স্বল্প দামে এইসব পণ্য।

তারা জানান,সপ্তাহের মঙ্গলবার ও শুক্রবার তারা এই পথের দ্বারে বিক্রি করতো হাজার টাকা, এখন সড়কে গাড়ী চলাচল কম থাকায়, অফিস বন্ধ থাকায় লোকজনের চলাচল একেবারে নাই। একই চিত্র দেখা যায় ওয়াগ্গার বটতলি পাড়ায়। এখানে কাচা মরিচ বিক্রি করতে এসেছেন মায়ারাম তংচঙ্গ্যা।

তিনি জানান, দুপুর হতে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত তার ক্ষেতের উৎপাদিত কাচা মরিচ বিক্রি হয়েছে মাত্র ১০০ টাকার মতো। কৃষকরা জানান, ক্ষেতার অভাবে উৎপাদিত ফসল বিশেষ করে বেগুন, টমেটো পঁচে যাচ্ছে। তারা সকলে সীমিত আকারে কয়েক ঘন্টার জন্য সাপ্তাহিক বড়ইছড়ি বাজার চালু রাখার দাবি জানান।

৫ নং ওয়াগ্গা ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড এর ইউপি সদস্য মায়ারাম তংচঙ্গ্যা জানান, বেচাবিক্রি না থাকায় তার এলাকার কৃষকের উৎপাদিত পণ্য নষ্ট হচ্ছে, ফলে চরম আর্থিক দৈন্যতায় দিন কাটছে এদের, তিনি সীমিত আকারে হাটবাজার চালু করার জন্য প্রশাসনের প্রতি আবেদন জানান।

৫ নং ওয়াগ্গা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান চিরন্জিত তংচঙ্গ্যা পাহাড়বার্তাকে জানান, তাঁর এলাকার অধিকাংশ জনগণ কৃষির উপর নির্ভরশীল। কৃষিপণ্য বিক্রি করে তাদের সংসার চলে। তিনিও সাপ্তাহিক হাটবাজার সীমিত আকারে চালু রাখার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

এই ব্যাপারে কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশ্রাফ আহমেদ রাসেল পাহাড়বার্তাকে জানান, সরকার করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধকল্পে সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করণের লক্ষে সাপ্তাহিক হাটবাজার বন্ধ রেখেছে, কারন হাটবাজারে প্রচুর ক্রেতা বিক্রেতা আগমন ঘটলে এই ভাইরাসের বিস্তার ঘটতে পারে, তবে তিনি কৃষকদের সাপ্তাহিক হাটবাজার দিন ছাড়া পচনশীল দ্রব্য নিদিষ্ট দুরত্ব বজায় রেখে বাজারে বিক্রি করার পরামর্শ দেন।

আরও পড়ুন