থমকে আছে লামার শীলেরতুয়া ব্রিজের কাজ : দূর্ভোগে স্থানীয়রা

purabi burmese market

বান্দরবানের লামা উপজেলার শিলেরতুয়া-রূপসী পাড়া সড়কের মাতামুহুরী নদীর ওপর ব্রিজ নির্মাণ কাজ চলছে কচ্ছপ গতিতে। গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর ব্রিজের নির্মাণকাজ শেষ করার কথা থাকলেও ব্রিজের কাজ হয়েছে মাত্র ৬০ভাগ। শুধু তাই নয়, শুরু থেকে ঠিকাদার এ কাজে নিন্মমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে নির্মিতব্য ব্রীজের কাজের গুনগত মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকাবাসী। মেয়াদের মধ্যে কাজ শেষ না হওয়ায় চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন ব্রিজের এপার ওপারের হাজার হাজার মানুষ।

জানা যায়, লামা পৌরসভা ও রুপসীপাড়া ইউনিয়নের পূর্ব শীলের তুয়া এলাকার মানুষের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করার লক্ষে পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপির প্রচেষ্টায় ব্রীজটি নির্মাণের উদ্যোগ নেন। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প পার্বত্য চট্টগ্রাম দ্বিতীয় পর্যায়ে গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১১ কোটি ৩৬ লাখ ৫৪ হাজার টাকা ব্যয়ে ১৮৪ মিটার পিসি এবং আরসিসি গার্ডার ব্রীজ নির্মাণের জন্য ঠিকাদার নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এতে তমা কন্সট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজটি পেয়ে গত বছরের ১৪ এপ্রিল ব্রিজের নির্মাণকাজ শুরু করে। কাজটি তদারকি করছে উপেেজলা প্রকৌশল অধিদপ্তর। কার্যাদেশ মতে ২০২০ সালের বছরের সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে এ কাজ শেষ করার কথা।

এ বিষয়ে রুপসীপাড়া ইউনিয়নের ব্যবসায়ী রহিম জানান, মাতামুহুরী নদী লামা পৌরসভা ও রুপসীপাড়াকে দুই ভাগে বিভক্ত করে রেখেছে। সেতুর কাজ শেষ না হওয়ায় ব্যবসায়ীদের প্রায় ছয় সাত কিলোমিটার দূরে গিয়ে ট্রাক বোঝাই করে উৎপাদিত কৃষিপণ্য আনতে হয়।

স্থানীয়রা অভিযোগ তুলেছেন, সিলেটি পাথর ও বালুর পরিবর্তে ব্যবহার করেছেন স্থানীয় নিন্মমানের পাথরের কংকর ও বালু। এছাড়া গত সেপ্টেম্বর মাসে কাজ সম্পন্নের কথা থাকলেও গত দেড় বছরে শেষ করেছেন মাত্র ৬০ ভাগ কাজ। বর্তমানে কাজ করছেন কচ্ছপ গতিতে। গত বছরের প্রথম দিকে ব্রীজের কাজ সরেজমিন পরিদর্শনের সময় নিম্মমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার ও কাজের গুনগত মান খারাপ হওয়ার কারণে ঠিকাদারের লোকজনের ওপর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী জিল্লুর রহমান ক্ষিপ্ত হন বলে জানান স্থানীয়রা।

রূপসী পাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাচিং প্রু মার্মা জানান, যে গতিতে কাজ চলছে, তাতে মনে হচ্ছে আরো এক বছরেও ব্রিজের নির্মাণকাজ শেষ হবে না। দ্রুত ব্রিজের কাজ সম্পন্ন করতে সংশ্লিষ্টদের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

dhaka tribune ad2

জানা যায়, দুই পাশের উইং ওয়াল ও চারটি পিলার নির্মাণের কাজ করা হয়েছে। নির্মাণাধীন সেতুর পূর্ব পাশে একটি বাঁশের সাঁকো দিয়ে আশপাশের প্রায় সাত-আটটি গ্রামের লোকজন যাতায়াত করেন। ছয়-সাত মাস ধীর গতিতে নির্মান কাজ চললেও মাঝে মধ্যে আবার কাজ বন্ধও থাকে। এতে আমরা চরম দুর্ভোগে আছেন স্থানীয়রা।

এদিকে রূপসী পাড়া ইউনিয়নের পূর্ব শীলেরতুয়া এলাকার জসিম উদ্দিন, ইসমাইলসহ আরো অনেকে জানান, ব্রিজের নির্মাণ কাজের শুরুতেই স্থানীয় নিম্নমানের পাথর দিয়ে সব ফাইলিং নির্মাণ করা হয়েছে। তারা আরও বলেন, এখন নৌকা দিয়েই নদী পার হতে হয়। বর্ষা কাল আসলে প্রায় সময় নৌকাও চলেনা, তখন ভোগান্তীর শেষ থাকেনা।

নির্মাণকাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. জাকির হোসেন মোল্লা জানিয়েছেন, মাঝখানে ব্রিজের কাজে কিছুটা বিঘ্ন ঘটেছিল, বর্তমানে কাজের অগ্রগতি ৬০%।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক এম এ জাহের সাংবাদিকদের বলেন, ব্রিজের নির্মাণকাজে ভূমি জটিলতাসহ স্থানীয়ভাবে কিছু সমস্যার সৃষ্টি হয়েছিল, বর্তমানে দ্রুত গতিতে ব্রিজের কাজ চলছে।

এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের লামা উপজেলা প্রকৌশলী মো. নাজিম উদ্দিন জানায়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করেনি,বর্তমানে ব্রিজের গার্ডারের কাজ চলছে।

আরও পড়ুন
আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশিত হবে না।