থানচিতে নারীদের অংশগ্রহণে নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা

বান্দরবানে থানচির সাঙ্গু নদে হয়ে গেলে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ ও সাঁতার প্রতিযোগিতা। শতাধিক ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী নারী এতে অংশ নেন। বৈঠার ছন্দ আর মাঝি মাল্লাদের হৈ হুল্লোড়ে উৎসবমুখর হয়ে উঠে নদী তীরবর্তী এলাকা। নদীর তীরের শত শত দর্শকরা উপভোগ করেছেন প্রতিটি পাল।

শনিবার(৮ মার্চ) সকালে বান্দরবানের থানচি উপজেলার বলীপাড়া ইউনিয়নের নাইংক্ষ্যং পাড়ার সাঙ্গু নদীর ঘাটে এ নৌকা বাইচ ও সাঁতার প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা ‘বলীপাড়া নারী কল্যাণ সমিতি'(বিএনকেএস) আয়োজনে দাতা সংস্থা ডিয়াকোনিয়া বাংলাদেশ অর্থায়নে এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন বান্দরবান জেলা পরিষদের সদস্য এ্যাডভোকেট উবাথোয়াই মারমা।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন থানচি থানা অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) নাছির উদ্দিন মজুমদার, প্রেসক্লাবের সভাপতি মংবোওয়াচিং মারমা, সাধারণ সম্পাদক চ হ্লা মং মার্মা প্রমূখ।

বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য উবাথোয়াই মার্মা বলেন, নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা আমাদের ঐতিহ্যে। বহুদিন পর এ প্রতিযোগিতা হচ্ছে। এর মাধ্যমে হারিয়ে যাওয়া এ সংস্কৃতি আবার পুনরুদ্ধার হবে বলে আশা করছি।

তিনি আরো বলেন, নারীরাও প্রতিযোগিতায় টিকতে পারে।আর সব জায়গাতে নারীদের বিচরণ ছিল। কিন্তু পুরুষতান্ত্রিকতার কারনে তারা তাদের কাজের স্বীকৃতি পাইনি।

NewsDetails_03

বিএনকেএস বান্দরবান এর উপ-নির্বাহী পরিচালক উবানু মার্মা বলেন, নারীদের সমতা ন্যাযতার কথা বলছি আমরা। এ আয়োজনের মাধ্যমে দেখাতে চাই আমাদের আদিবাসী নারীরা কোন অংশে কম নয়। আমরা দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টালে পুরুষের মত নারীরাও সব কিছুতে অংশগ্রহণ করতে পারে।

থানচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছির উদ্দীন মজুমদার বলেন, ভিন্নমাত্রায় নারীরা অংশগ্রহণে করছে। নারীরা যাতে এগিয়ে যায় তাদের পাশে আছি।

সাঁতার প্রতিযোতিায় অংশ নেওয়া ইয়াছা মারমা বলেন, অনেক ভালো লাগছে। সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছি। প্রতি বছরই এরকম আয়োজন করা উচিত।

কিশোরীদের সাঁতার প্রতিযোগীতায় প্রথম স্থান অর্জনকারী মাপ্রæচিং মারমা বলেন, নারী দিবসের “বিএনকেএস”র এমন মহৎ উদ্যোগের জন্য সাধুবাদ জানাই। আমি অনেক খুশি এবং প্রথম স্থান ও অর্জন করেছি।

নৌকা বাইচের প্রথম স্থান অর্জনকারী নাইক্ষ্যং পাড়া দলনেতা মাউসাং মারমা বলেন, নৌকা প্রতিযোগিতায় আমার দল প্রথম স্থান অধিকার করেছে। পুরস্কার পেয়ে অনেক ভালো লাগছে

এ বাইচ প্রতিযোগিতায় পাহাড়ে বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী বিভিন্ন বয়সের নারীরা লাল, হলুদ, সবুজ এবং নীল রঙের গ্যাঞ্জি এবং ঐতিহ্যবাহীপোশাক পরিধান করে নৌকা প্রতিযোগিতায় ৪ টি দল অংশ নেয়। আর সাঁতারে ২টি দল প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। প্রতিটি দলে ছিলেন ১০ জন করে নারী। ]

প্রতিযোগিতা শেষে প্রধান অতিথি বিজয়ীদের হাতে নগদ অর্থ তুলে দেন।

আরও পড়ুন