ভারতের মহারাষ্ট্রের নাগপুরের ২০ বছর বয়সী যুবক রোহান আগরওয়াল। যিনি ২ বছর আগে পায়ে হেঁটে পৃথিবী যাত্রার উদ্যোশে বেরিয়েছেন। ৮ শত দিনে কখনও তিনি পায়ে হেঁটে, আবার কখনও লিফট নিয়ে ১৫ হাজার কিঃ মিঃ ভ্রমণ করে এখন তিনি রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলা অবস্থান করছেন।
প্লাস্টিক এর ব্যবহার, পরিবেশ সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরি করা, ভালোবাসা, শান্তির বার্তা দেওয়া, এবং বৈচিত্র্যের প্রচার করা তাঁর উদ্যোশ বলে তিনি সাংবাদিক, সরকারি কর্মকর্তা, পরিবেশকর্মী এবং নানা শ্রেণী মানুষকে বিষয়টি অবহিত করেন।
আজ মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) সকালে তিনি কাপ্তাই উপজেলা উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভুমি) মারজান হোসাইন এর দপ্তরে তাঁর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন এবং ভ্রমন সম্পর্কে অবহিত করেন। এইছাড়া তিনি কাপ্তাই প্রেস ক্লাব সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সাথে বিষয়গুলো সম্পর্কে মতবিনিময় করেন। এইসময় কাপ্তাই ফোরামের এডমিন এ আর লিমন, কাপ্তাই প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ঝুলন দত্ত, যুগ্ম সম্পাদক আলমগীর কবির, সাংস্কৃতিক কর্মী উজ্জ্বল মল্লিক উপস্থিত ছিলেন।
কথা হয়, এই প্রতিবেদকের সাথে রোহান আগরওয়ালার। তিনি জানান, আজ হতে ২ বছর আগে ভারতের উত্তর প্রদেশ হতে আমি এই বার্তা নিয়ে হেঁটে যাত্রা শুরু করেছি। এরপর ভারতের ঝাড়খণ্ড,বিহার, উড়িষ্যা, তেলেঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, অরুনাচল, আসাম এবং ত্রিপুরা রাজ্য ঘুরে সপ্তাহখানেক আগে বাংলাদেশে এসেছি। সফরের অংশ হিসেবে আমি ফেনি, চট্টগ্রাম ও রাঙামাটির বিভিন্ন জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে প্লাস্টিক এর নেতিবাচক ব্যবহার, পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতা, ভালবাসা, শান্তির বার্তা দেওয়া, এবং বৈচিত্র্যের প্রচার করা বিষয়ে মতবিনিময় করেছি।
তিনি আরোও জানান, প্রতিটি জায়গায় আমি তাঁদের স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া পেয়েছি। এরপর আমি বান্দরবান জেলা, কক্সবাজার জেলা ঘুরে মায়ানমার, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম এবং পরে সাইবেরিয়ার ওমিয়াকমে হেঁটে যাব, যেখানে তাপমাত্রা ৭২ ডিগ্রি এবং এটি পৃথিবীর সবচেয়ে শীতল স্থান। স্থলপথে ভারত থেকে সেখানে পৌঁছানো প্রথম দক্ষিণ এশীয় হিসাবে আমি গিনেস বুকে রেকর্ড করবো। যেখানে হেঁটে যেতে সময় লাগবে ৫ বছর।
এক প্রশ্নের জবাবে রোহান আগরওয়াল জানান, কোন রকম সরকারি বা কোন কর্পোরেট কোম্পানির সহযোগিতা ছাড়া আমি এই বিশ্ব পরিভ্রমনে বের হয়েছি। কোন সময় না খেয়েও ছিলাম, তবে বিভিন্ন জায়গায় কিছু কিছু মানুষ আমাকে আর্থিক এবং মানসিকভাবে সহযোগিতা করেছেন।
এই প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে, কাপ্তাই উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মারজান হোসাইন জানান, প্লাস্টিক দুষণ, পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতা এবং শান্তির বার্তা নিয়ে রোহান আগরওয়াল কাপ্তাইয়ে এসেছেন। এটি একটি মহৎ উদ্যোগ। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বর্তমানে পরিবেশের উপর যেই বিরুপ প্রভাব পড়েছে এবং প্লাস্টিকের যত্রতত্র ব্যবহারের ফলে পরিবেশের যেই ক্ষতি হচ্ছে, তাঁর এই সফর দেশ, সমাজ এবং পৃথিবী রক্ষা পাবে।
কাপ্তাই ফোরামের এডমিন এ আর লিমন জানান, কর্ণফুলি নদীতে প্লাস্টিক ফেলার ফলে দুষণের মাত্রা বেড়ে গেছে, এটা ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে গেছে। এই মুহূর্তে কর্ণফুলি নদী সহ পরিবেশকে বাঁচাতে হলে রোহান আগরওয়াল যেই বার্তা নিয়ে এদেশে এসেছে, তাঁর সাথে সকলকে একাত্মতা হতে হবে।