অভাবের সংসারে মেয়ে নিয়ে কোন ভাবে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছিলাম আমরা। গত ৫ মাস পূর্বে কক্সবাজার চকরিয়া এলাকার এক পরিচিত বশর মারফৎ বান্দরবানের নিউ গুলশানের সোলাইমানের বাসায় কাজ করার জন্য দিয়েছিলাম। কথা ছিল মেয়েকে ভালো মন্দ খাওয়াবে, পড়াবে এবং বিয়ের উপযুক্ত হলে বিয়ে দিবে। ভেবেছিলাম কাজের বিনিময়ে মেয়েটা অন্তত দুবেলা খেতে পারবে কিন্তু তারা এভাবে মেয়েটিকে শারীরিক অত্যাচার-নির্যাতন করবে ভাবতে পরিনি। কথাগুলো বলছিলেন, বান্দরবান শহরের নিউগুলশান এলাকায় নির্যাতিতা গৃহকর্মী শিশু নাহিদা আক্তারের (১১) পিতা ফারুক আহমেদ।
বান্দরবান নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ কার্যালয়ের লক্ষী দাশ জানান, গত শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) নাহিদা আক্তারকে কিছু লোক চোর চোর বলে দৌড়াচ্ছিল। দৌড়ানি খেয়ে সে ভয়ে আমার বাড়িতে ঢুকে পড়ে। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে তার উপর ঘটে যাওয়া অমানবিক নির্যাতনের ঘটনা বর্ণনা করে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় নির্যাতনের ক্ষত চিহ্ন দেখান।
সে জানান, শহরের নিউগুলশান এলাকার সোলাইমানের বাসায় কাজ করতো সেখানে সোলাইমানের স্ত্রী উর্মি প্রতিনিয়ত তার উপর নির্যানর চালাতো।
এদিকে আজ শনিবার (২৫ জানুয়ারি) সকালে নাহিদা আক্তারকে বান্দরবান সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। নির্যাতনের শিকার গৃহকর্মী নাহিদা আক্তার জেলার থানচি উপজেলার বলিবাজার ইউনিয়নের ১নং পোষ্ট এলাকার ফারুক আহমেদ এর সন্তান।
নির্যাতনের শিকার গৃহকর্মী নাহিদা আক্তার জানান,কথায় কথায় গৃহকর্ত্রী ঊর্মি আমাকে ঝাঁড়ু দিয়ে প্রতিনিয়ত মারধর করতো এবং কয়েকদিন আগে গৃহকর্ত্রী ঊর্মি গলা চেপে ধরেছিল, তাতে আমার শ্বাস বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। তাই আর তাদের নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে পালিয়ে যাচ্ছিলাম।
এদিকে নির্যাতনের শিকার গৃহকর্মীর পিতা ফারুক আহমেদ বলেন, মেয়ের প্রতি অমানবিক নির্যাতনের বিচার চেয়ে আমি বাদী হয়ে থানায় গৃহকর্ত্রী ঊর্মির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করবো।
এই ব্যাপারে বান্দরবান সদর থানা পুলিশ কর্মকর্তা (ওসি) শহীদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, অভিযুক্ত গৃহকর্ত্রী ঊর্মি কে থানায় ডাকা হয়েছে, সঠিক তদন্ত স্বাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।