রাঙামাটি জেলার বিলাইছড়ি উপজেলার দূর্গম ফারুয়া ইউনিয়ন। উপজেলার সদর হতে নৌপথে ৩ ঘন্টা পাড়ি দিয়ে ফারুয়া ইউনিয়নে পৌঁছাতে হয়। আবার শুষ্ক মৌসুমে পানি না থাকলে প্রায় ৪ ঘন্টার বেশি সময় লাগে ইউনিয়নে যেতে। সড়ক যোগাযোগ নাই বললেও চলে, উপজেলা সদর হতে যেটুকু পথ আছে, তার অবস্থা খুবই নাজুক। ফলে নৌ পথই একমাত্র ভরসা। তাই অনেক ক্ষেত্রে ওই ইউনিয়নের লোকজন সরকারি দাপ্তরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হয়। তাই ইউনিয়ন পর্যায়ে বঞ্চিত এলাকায় উপজেলার সকল কার্যক্রম নিশ্চিত করণার্থে বিলাইছড়ি উপজেলার প্রশাসনের উদ্যোগে ব্যতিক্রমি উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
গত বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিলাইছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীরোত্তম তঞ্চঙ্গ্যা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে দূর্গম ৩ নং ফারুয়া ইউনিয়নে সরকারি বিভিন্ন কর্মকান্ড পরিদর্শন করা হয়েছে। এই সময় উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান উৎপলা চাকমা, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ রশ্মি চাকমা সহ উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।
পরিদর্শন টিম ফারুয়া ইউনিয়ন পরিষদ পরিদর্শন, উপজেলা স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা দপ্তরের অধীন বাস্তবায়ধীন বিভিন্ন প্রকল্পসমূহ পরিদর্শন করা হয়। সেই সাথে দূর্গম ফারুয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন স্কুলসমূহের শ্রেণী কার্যক্রমও পরিদর্শন করা হয়।
বিলাইছড়ি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীরোত্তম তঞ্চঙ্গা জানান, কৃষি, স্বাস্থ্য, অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ সরকারি বিভিন্ন সেবামূলক কার্যক্রম কিভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে এবং এই কার্যক্রমগুলোকে আরো গতিশীল করার লক্ষ্যে আজকে আমাদের দূর্গম ফারুয়া ইউনিয়নে পরিদর্শন।
ইউএনও মোঃ মিজানুর রহমান জানান, বিলাইছড়ির দুর্গম ফারুয়া ইউনিয়নে উপজেলার সকল দপ্তরের কর্মকর্তাদের সমন্নয়ে গঠিত উপজেলা টিম ফারুয়া ইউনিয়নে অফিসিয়াল ক্যাম্পেইন ও পরিদর্শন কার্যক্রম পরিচালনা করে।
যেমন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে ফারুয়া ইউনিয়ন পরিষদ, ফারুয়া উচ্চ বিদ্যালয়, বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ পরিদর্শন করা হয়। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিবার কর্মকর্তার নেতৃত্বে একটি মেডিকেল ক্যাম্প পরিচালিত হয় ও বিনামূল্যে ঔষধ বিতরণ করা হয়। উপজেলা কৃষি অফিস কৃষক সমাবেশ করে। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বিভিন্ন স্কুল পরিদর্শন ও অভিভাবক সমাবেশ করে। ইন্সট্রাক্টর, ইউআরসি তার পরিদর্শন ও একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনা করে। উপজেলা প্রকৌশলী ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ পরিদর্শন করেন। বিলাইছড়ি থানা বিট পুলিশিং ক্যাম্পেইন পরিচালনা করে।
এভাবে সকল দপ্তর প্রধানগণ ইউনিয়ন লেভেলে তার দপ্তরের সাথে সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম পরিচালনা করে। অত:পর উপজেলার সকল কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে এলাকার মানুষের সাথে গণশুনানির মাধ্যমে করণীয় সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। সবশেষে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা ও বরাদ্দের পরিপ্রেক্ষিতে তৃণমূল পর্যায়ের কর্মীদের সমন্বয়ে তাদের উদ্বুদ্ধ করণার্থে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সকল কর্মকর্তাদের একসাথে দুর্গম ইউনিয়নটিতে সেবামূলকভাবে পেয়ে ফারুয়াবাসী অত্যন্ত খুশি হয়।