দৈনিক পূর্বকোন পত্রিকার সংবাদের প্রতিবাদ জানালো বান্দরবান আওয়ামী লীগ

গত ৩০ জুলাই ২০১৯ ইং তারিখে দৈনিক পূর্বকোণের ১ম পাতা ও ১১ পৃষ্ঠার ৪র্থ কলাম জুড়ে প্রকাশিত “সশস্ত্র সংঘাতে অশান্ত বান্দরবান” শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ২য় প্যারায় কারো সুনির্দিষ্ট বরাত ছাড়াই “অভিযোগ উঠেছে মগ লিবারেশন পার্টি(এমএলপি) নামে দলটির উত্থানের পেছনে বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ক্যশৈহ্লার পৃষ্ঠপোষকতা রয়েছে” বলে যে তথ্য জুড়ে দেয়া হয়েছে তা সম্পূর্ণ অসত্য এবং বাস্তবতা বিবর্জিত।

বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সাদেক হোসেন চৌধুরী প্রেরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়,বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মতো একটি প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক সংগঠনের জেলা শাখার সভাপতিকে কোন সশস্ত্র সংগঠনের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে তথ্য পরিবেশনের মাধ্যমে শুধু একজন ব্যক্তিকে হেয় করা হয়নি। সংগঠন হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তিও বিনষ্ট হয়েছে।

বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের সভায় এ বিষয়ে আলোচনা ও নিন্দা জ্ঞাপণ করা হয়েছে। একই সাথে দৈনিক পূর্বকোন এর বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি মিনারুল হক’কে অবহিত করে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানানো হয়।

সুনির্দিষ্ট তথ্য উপাত্ত ছাড়া এভাবে একটি শসস্ত্র সংগঠনের পৃষ্ঠপোষকতার দায় একজন ব্যক্তি এবং একটি জাতীয় রাজনৈতিক দলের জেলা শাখার সভাপতির উপর চাপানোর আগে যথেষ্ট যাচাই বাচাইয়ের প্রয়োজন ছিল কিনা সেটা আমাদের প্রশ্ন?

আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি, এ ধরনের বিভ্রান্তিমূলক অসত্য তথ্য পরিবেশনের পর সেটা মহল বিশেষ তাদের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি বিনষ্টের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের চেষ্টায় তৎপর হয়ে উঠেছে। এ থেকে প্রতীয়মান হওয়াটাই স্বাভাবিক, কারো বিভ্রান্তি বা ষড়যন্ত্রের হীন উদ্দেশ্য এরুপ অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।

NewsDetails_03

তিনি আরো জানান,পার্বত্য জেলা বান্দরবানে যে শান্তি ও সম্প্রীতি বিদ্যমান রয়েছে তা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অসাম্প্রদায়িক চিন্তা-চেতনা এবং সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সুদীর্ঘ ত্যাগ-তিথিক্ষার ফসল। এজন্য পার্বত্য বান্দরবানের পাহাড়ি-বাঙ্গালী তথা আপামর জনগোষ্ঠী টানা ৬ বার ধারাবাহিকতা রেখে আওয়ামী লীগকে ম্যান্ডেট দিয়ে আসছে।

পাহাড়ে শান্তি বিনষ্টের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ এবং জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে ক্যশৈহ্লা সব সময় তৎপর। সকল ধরনের সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে তার কঠোর ভূমিকা এবং সংগঠনের পক্ষ থেকে নেতাকর্মীদের নিয়ে কঠোর অবস্থানের পর ষড়যন্ত্র দ্রুত ডালপালা প্রসারিত করতে শুরু করে। আর সন্ত্রাস বিরোধী অবস্থানের কারণে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই টার্গেটে পরিণত হওয়া শুরু হয়েছে। যার অংশ হিসেবে বান্দরবানে একের পর এক অপহরণ-গুম ও হত্যার শিকারে পরিণত হচ্ছে আওয়ামী লীগের নেতা ও সংগঠকরা।

চলতি বছরের ১৯ মে আওয়ামী লীগ নেতা ক্যহ্লা চিং মার্মা’কে গুলি করে হত্যা, ২০ মে অপর আওয়ামী লীগ নেতা ক্যচিং থোয়ায় মার্মা’কে গুলি করে হত্যা, ২৩ মে পৌর আওয়ামী লীগ নেতা চথোয়াই মং মার্মা’কে অপহরণের পর গুলি করে হত্যা। ২৫ জুন অংসিংচিং মার্মা’কে রোয়াংছড়ি উপজেলায় গুলি করে হত্যা,২২ জুলাই রোয়াংছড়ি উপজেলার তারাছা ইউপি আওয়ামী লীগের সভাপতি মং মং থোয়াই মার্মা’কে গুলি করে হত্যা,২৩ জুলাই লামা উপজেলার সড়ই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক আলমগীর সিকদারকে রাতে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। শুধু চলতি বছরের ৫ মাসে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের ৬ নেতাকর্মীকে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়েছে।

বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ক্যশৈহ্লার নেতৃত্বে ৭ টি উপজেলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের যে সুসংগঠিত,আদর্শিক রাজনীতিতে বিশ্বাসী বিশাল কর্মী বাহিনী রয়েছে,তাকে আবার মগ বাহিনীর মতো কথিত কোন সন্ত্রাসী সংগঠনের পৃষ্ঠপোষকতা করতে হবে কেন?

আমরা মনে করি,সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ ব্যতিরেকে এ ধরনের স্পর্শকাতর বিষয়ে বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ক্যশৈহ্লাকে জড়িয়ে যে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রেখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পার্বত্য চট্টগ্রামে উন্নয়নের যে মহাসমারোহ চলছে তা বাঞ্চাল করার হীন উদ্দেশ্য নিহিত রয়েছে।

ক্যশৈহ্লার নেতৃত্বে বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগ ও সকল সহযোগী সংগঠন যে কোন ত্যাগ তিথিক্ষার বিনিময়ে এই অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও উন্নয়নে বদ্ধ পরিকর। আমরা বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এই ধরনের বিভ্রান্তিমূলক, মনগড়া, উদ্দেশ্য প্রণোদিত প্রতিবেদনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

আরও পড়ুন