অনুসন্ধানে জানা যায়, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সীমান্তবর্তী আশারতলী জারুলিয়াছড়ি গ্রামের আমির হোসেনের মেয়ে আমিনা খাতুন ও একই এলাকার আবুল হাশেমের ছেলে আরিফ উল্লাহর প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারী গোপনে বিয়ে করেন। ছেলের পরিবার বিয়ে মেনে না নেওয়ার কারনে তারা চট্টগ্রাম শহরে ভাড়া বাসায় থাকত। সংসার চালাতে মাঝে মধ্যে যৌতুকের টাকার জন্য আমিনা খাতুনকে তার পিতার বাড়িতে পাঠিয়ে দিতেন স্বামী আরিফ উল্লাহ। পরিবারের পক্ষ থেকে বার বার যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় এক মাস পিতার বাড়িতেই অবস্থান করে আমিনা। গত ৬ জুন আমিনাকে তার পিতার বাড়ি থেকে নিয়ে যায় স্বামী আরিফ উল্লাহ। এর পর থেকে আমিনার আর খোঁজ পাওয়া যায়নি।
নাইক্ষ্যংছড়ি ৭নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য আলী হোসেন জানান, আমিনা খাতুন ও আরিফ উল্লাহ গোপনে বিয়ে করেছিল কিন্তু ছেলের পরিবার তাদের মেনে নেয়নি, সম্প্রতি আমিনা খাতুন নিখোঁজ রয়েছে বলে শুনা যাচ্ছে।
আরো জানা গেছে, সর্বশেষ গত ১১ জুলাই স্থানীয় হামিদা বেগম, নুর আংকিস নামে দুই নারী বাড়ির পাশের পাহাড়ী ঝিরিতে বোরকা, ব্যাগ, কাপড় চোপড় দেখতে পেয়ে স্থানীয়দের খবর দেয়। আমিনার পরিবার তার মেয়ের ব্যবহৃত জিনিসপত্রের পরিচয় নিশ্চিত হয়ে গত ২৯ জুলাই নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় গেলে পুলিশ তদন্তের স্বার্থে উদ্ধারকৃত আলামত থানায় রেখে দেয় এবং বিষয়টি তদন্ত করবে বলে আমিনার বাবাকে আশ্বাস দেন।
নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় লিপিবদ্ধ জিডি’র তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মনির জানান, আমিনার বাবার আবেদনের প্রেক্ষিতে একটি জিডি লিপিবদ্ধ করা হয়েছে, কর্তৃপক্ষের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে।
পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ায় আমিনার বাবা আমির হোসেন বাদী হয়ে গত ১৮ আগস্ট বান্দরবান নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে সংশ্লিষ্ট আইনের ২০০০ এর ১১ (ক)/৩০ প্যানেল কোড ৩৬৪ ধারায় মামলা দায়ের করেন। আর নিখোঁজ ও হত্যার বিষয়টি প্রকাশ হওয়ায় নাইক্ষ্যংছড়ি জুঁড়ে আলোচনার জন্ম দেয়।
আমিনা খাতুনের বাবা আমির হোসেন জানান, স্বামীর সহায়তায় আবুল হাসেম ও আজু মেহেরসহ অন্যান্য লোকজন আমার মেয়েকে হত্যা করে লাশ গুম করেছে। তিনি আরো বলেন, মামলা দায়েরের পর বিষয়টি সমঝোতা না করার কারনে বর্তমানে আমাকে হুমকি দিচ্ছে।
এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তৌহিদ কবির জানান, বিজ্ঞ আদালতের একটি মামলার কপি পেয়েছি, বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত চলছে।