বান্দরবান মিয়ানমার সীমান্ত উপজেলায় নাইক্ষ্যংছড়িতে পুলিশের ধারাবাহিক অভিযানে গত এক মাসে সাড়ে চার লাখেরও বেশি ইয়াবা উদ্ধার করেছে পুলিশ। যার আনুমানিক মূল্য ১৩ কোটি টাকারও বেশি। যা পূর্বের সব রেকর্ডকে ভঙ্গ করে ফেলেছে।
বান্দরবানের সঙ্গে মিয়ানমারের সীমান্ত থাকায় মাদক পাচারকারীরা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি, আলীকদম ও থানচি সীমান্তকে ইয়াবা পাচারের রুট হিসেবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সম্প্রতি মিয়ানমার থেকে ইয়াবা পাচার অনেক বেড়েছে। রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও জনপ্রতিনিধিদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা অবাধে কাজ করছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
আইন শৃংখলা বাহিনীর দেয়া তথ্যমতে, গত ২ আগস্ট ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা মূল্যে ১ হাজার ৯৫০ ইয়াবাসহ বশির আহমদ, ৩ আগস্ট ৯শ ৩০ ইয়াবাসহ রবিউল আলম, ১৩ আগস্ট ৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা মূল্যের ১ হাজার ৯শত ইয়াবাসহ রোহিঙ্গা রহমত উল্লাহ, ১৫ আগস্ট ২ লাখ ৮২ হাজার টাকা মূল্যের ৯শ ৪০ ইয়াবাসহ রোহিঙ্গা জুবাইর, ১৬ আগস্ট ১ কোটি ৩৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের ৪৬ হাজার ৫শ ইয়াবাসহ ছৈয়দ উল্লাহ, ছৈয়দ আলম, আবুল কাশেম, রোহিঙ্গা ছাবের আহমদ, রোহিঙ্গা ইব্রাহিম খলিল, ২০ আগস্ট ৫ কোটি ১৩ লাখ টাকা মূল্যের ১ লাখ ৭০ হাজার ইয়াবাসহ সোনাইছড়ি যুবলীগ সভাপতি উছালা মার্মা পিন্টু এবং সর্বশেষ ২৫ আগস্ট ৪ কোটি ৫ লাখ টাকা মূল্যের ১ লাখ ৩৫ হাজার ইয়াবাসহ রোহিঙ্গা আনোয়ারকে আটক করে পুলিশ।
সর্বসাকুল্যে গত এক মাসে ৩ লাখ ৫৭ হাজারও বেশি ইয়াবা উদ্ধার করে পুলিশ। যার আনুমানিক মূল্য ১০ কোটি ৭৪ লাখ টাকারও বেশি। আটক ব্যক্তিদের মাঝে রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি সরকারী দলীয় লোকজনও রয়েছে। সর্বশেষ গত শুক্রবার সকালে উপজেলার ঘুমধুমে ৮৯ হাজার ৫শ ইয়াবা উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় একটি প্রাইভেট কার (চট্টমেট্টো-ঘ-১২-৪৭৬১) সহ আব্দুর রহিম (৫৭) নামের এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। আটক ব্যক্তি কক্সবাজারের ইসলামপুর ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ছৈয়দ আহমদের ছেলে। উদ্ধার করা ইয়াবার মূল্য দুই কোটি টাকা।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে আরো জানা গেছে, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত নাইক্ষ্যংছড়ির বিভিন্ন এলাকা দিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে ইয়াবা পাচারের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় বিজিবি, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের তৎপরতা বাড়িয়েছে।
এই বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ওসি মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন জানান, মিয়ানমার থেকে বান্দরবানে ইয়াবা পাচার বন্ধে আমরা কঠোর অবস্থানে। প্রতিদিন কোন না কোন সংস্থার হাতে ধরা পড়ছে ইয়াবার চালান।
তিনি আরো বলেন, আমরা চাই যে কোন উপায়ে ইয়াবা পাচার বন্ধ হউক। মাদকের বিরুদ্ধের অভিযান অব্যাহত থাকবে।