নাইক্ষ্যংছড়ির ইউপি নিবার্চনে আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ

NewsDetails_01

আসছে ১৪ অক্টোবর বান্দরবানের নাইংক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তিনটি ইউপি নির্বাচনের ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু এবারের নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহন না করায় আওয়ামীলীগ প্রার্থীর প্রতিপক্ষ হয়ে লড়ছেন ক্ষোদ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। এর ফলে সীমান্তবর্তী উপজেলার তৃণমুলের নেতাকর্মীদের মধ্যে বাড়ছে কোন্দল। দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাইতে গিয়ে প্রতিপক্ষ হিসেবে মুখোমুখি হতে হচ্ছে নিজ দলের নেতা কর্মীদের। এসময় দলীয় প্রার্থীর পক্ষ থেকে হুমকিও পাচ্ছে বলে অভিযোগ বিদ্রোহী আ.লীগ প্রার্থীর।

জানা গেছে, নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ও সোনাইছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর প্রতিপক্ষ খোদ আওয়ামীলীগ নেতা। এ ২টি ইউনিয়নে বিএনপি বা অন্য কোন রাজনৈতিক দলের প্রার্থী নেই। ফলে এ ২টি ইউপিতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীদের মধ্যে দ্বিমুখী লড়াই চলছে। আর এই কারনে সাধারণ ভোটাররাও মুখ খুলছেন না।

নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান তসলিম ইকবাল চৌধুরী তার প্রতিপক্ষ বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল আবছার ইমন আনারস প্রতীক নিয়ে ভোট যুদ্ধে অবর্তীণ হয়েছেন। বিদ্রোহী প্রার্থী যুবলীগ নেতা নুরুল আবছার ইমন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যাপক শফিউল্লাহ আপন খালাতো ভাই, তাই শফিউল্লাহ দলীয় প্রার্থীর পক্ষে মাঠে না নেমে কক্সবাজারের নিজ বাসায় অবস্থান করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

যুবলীগ নেতা নুরুল আবছার ইমন অভিযোগ করে বলেন,কর্মী সমর্থকদের নানা ধরনের হুমকি ধমকি দিচ্ছেন প্রতিপক্ষ প্রার্থীর লোকজন। এ বিষয়ে তিনি প্রশাসনকে অবহিত করেছেন। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে তিনি বিপুল ভোটে জয়ী হবেন বলে প্রত্যাশা করেন।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থী তসলিম ইকবাল চৌধুরী বলেন, তার দলের কোন কর্মী সমর্থক কাউকে কোন ধরনের হুমকি ধমকি দেয়নি, এটি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আগামী ১৪ অক্টোম্বর নৌকা মার্কাকে ভোট দিয়ে জয় যুক্ত করবেন এলাকার ভোটাররা এমনটাই প্রত্যাশা তার।

তবে নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে আসলেও এখনও নির্বাচনী ক্যাম্প গুলোতে সমর্থকদের উৎসবমূখর উপস্থিতি তেমন একটা দেখা যাচ্ছে না। সাধারণ মানুষের মধ্যে তেমন কোন উৎসাহ, উদ্দীপনা বা আমেজ এখনো ফুটে উঠেনি। যার কারণে ভোটারদের মন গলাতে প্রার্থীদের ঘাম ঝরছে।

NewsDetails_03

উপজেলা সদরের একাধিক ব্যবসায়ী জানান,সরকারী কোন অনুষ্ঠান ছাড়া উপজেলা সদরে নির্বাচন কেন্দ্রিক তেমন মানুষের সমাগম হয় না। যার কারনে চায়ের টেবিলে নির্বাচনী আলোচনা নেই বললেই চলে। তবে কয়েক দিনের মধ্যে এই আমেজ বাড়তে পারে বলে তাদের ধারনা।

চাকঢালা এলাকার কয়েকজন ভোটার জানান, বিগত নির্বাচন সমূহের তুলনায় এবার ইউপি নির্বাচনী প্রচারণায় তেমন কোন উত্তাপ নেই। বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নেয়ায় আ.লীগ প্রাথীর প্রতিপক্ষ আ.লীগ তাই স্থানীয় রাজনীতির কৌশলগত কারনে সাধারণ ভোটাররাও আগের মতো প্রকাশ্যে নিজেদের মত প্রকাশ করতে চান না।

এদিকে সোনাইছড়ি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যানিং মার্মা। এই আওয়ামীলীগ প্রার্থীর বিরুদ্ধে ইউএনডিপিসহ সরকারি চাকরী দেওয়ার নামে নেতাকর্মীদের অর্থ আত্মসাত এর অভিযোগ রয়েছে।

অন্যদিকে তার সাথে কোন ধরণের আর্থিক লেনদেন থেকে বিরত থাকতে বিবৃতি দেন পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান তথা জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ক্যশৈহ্লা। তার বিপরীতে নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি বর্তমান চেয়ারম্যান বাহান মার্মা। তবে ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজের প্রতিপক্ষ হিসেবে লড়ছেন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী রশিদ আহমদ।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অনেক নেতা বিএনপি’র প্রার্থীর পক্ষে গোপনে কাজ করছেন বলেও অভিযোগ করেছে আ.লীগ প্রার্থী। তবে বিগত পাঁচ বছরে মানুষের সেবা ও উন্নয়নের কারনে জনগণ আবারো তাকে ভোট দিয়ে জয়ী করবেন বলে মনে করছেন আ.লীগ প্রার্থী জাহাঙ্গীর আজিজ।

তবে নির্বাচনের এখনো ১০ দিন বাকী থাকলেও নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ও সোনাইছড়ি ইউনিয়নে নির্বাচনী সভা সমাবেশ তেমন চোখে পড়ছে না। উপজেলা সদরে প্রার্থীদের পোষ্টার দেখা গেলেও নির্বাচনী আমেজ নেই বললেই চলে।

রির্টানিং অফিসার আবু জাফর ছালেহ বলেন,ভোটাররা যাতে নিরাপদে ভোট দিতে পারেন এবং প্রার্থীরা প্রচার প্রচারণা চালাতে পারেন সে জন্য সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এখনো পর্যন্ত আচরণবিধি লঙ্ঘনের কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি শান্তিপূর্ণভাবে সবাই নির্বাচনী প্রচারনা চালাচ্ছেন।

আরও পড়ুন