নামেই সরকারি বিদ্যালয় : লামার কম্পোনিয়া পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়

NewsDetails_01

লামার কম্পোনিয়া পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
রয়েছে ছাত্র-ছাত্রী কিন্তু নেই পর্যাপ্ত শ্রেণীকক্ষ, শিক্ষক ও বেঞ্চ। শ্রেণীকক্ষে শিক্ষার্থীর জায়গা না হওয়ায় বিদ্যালয় মাঠে ও গাছ তলায় চলে পাঠদান। আসবাবপত্র বিহীন ছোট একটি কক্ষে চলে শিক্ষকদের দাপ্তরিক কার্যক্রম। ২০১৩ সালের ১লা জুলাই বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ হলেও পাচ্ছেনা কোন সুযোগ সুবিধা। ঘটনাটি বান্দরবানের লামার সরই ইউনিয়নের কম্পোনিয়া পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আবুল হোসেনসহ এলাকার কিছু শিক্ষানুরাগী বিদ্যালয়টি স্থাপন করেন ২০০৭ সালে। পরে স্থানীয় চিংহ্লামং মার্মা নামের এক ব্যক্তি বিদ্যালয়ের জন্য ৩৩শতক জমি দান করেন। বর্তমানে প্রাক প্রাথমিক থেকে ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত ২৫১ জন শিক্ষার্থী ও ৩ জন শিক্ষক আছে। বিদ্যালয়ের নামে সর্বমোট দুই একর জমি আছে। ৫ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে আর কোন বিদ্যালয় না থাকায় পাহাড়ি এলাকার দরিদ্র ও সুবিধা বঞ্চিত শিশুরা অনেক দূর দূরান্ত থেকে গিয়ে ওই বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করে। দুর্গম পাহাড়ি এলাকার প্রায় ১০ গ্রামের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্টি ও বাঙ্গালী কোমলমতি শিশুদের এটিই একমাত্র ভরসা।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা নাফিজা আক্তার বলেন, বিদ্যালয়টি অনেক জরাজীর্ণ,এছাড়া বসার বেঞ্চ ও টেবিল নাই। কক্ষগুলো ছোট ছোট হওয়ায় গরমে অস্থির হয়ে পড়ি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.ওয়াজকুরুনী বলেন, শিক্ষামূলক কর্মকান্ডে বিদ্যালয়টি এগিয়ে থাকলেও ভবন না থাকায় দূর্ভোগে শিক্ষার্থীরা। প্রাক্ প্রাথমিক শ্রেণীসহ কমপক্ষে ৬ জন শিক্ষক প্রয়োজন হলেও প্রধান শিক্ষকসহ ৩ জন শিক্ষক দিয়ে শ্রেনী কার্যক্রম চলছে। তাছাড়া বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণী চালু করা হলে ঝরে পড়া শতভাগ রোধ হবে বলে তিনি গুরুত্বারোপ করেন।
আরো জানা গেছে, স্থানীয়দের অনুদান ও সরকারী মেরামতের সামান্য বরাদ্দের টাকা দিয়ে নির্মিত ৭০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১০ প্রস্থের একটি টিনশেড ঘর ও ছোট ছোট তিনটি শ্রেণী কক্ষে চলে এ পাঠদান কার্যক্রম। আবার বৃষ্টি হলেই বাধ্য ঘোষনা করতে হয় বিদ্যালয়ের ছুঁটি। এমন জরাজীর্ণ অবস্থা বিদ্যালয়টিতে।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি খলিলুর রহমান জানায়, আমাদের বিদ্যালয়টি সবচেয়ে সুবিধা বঞ্চিত। এটি সরকারী হলেও সরকারী কোন সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেনা। সরকারীভাবে একটি ভবন পর্যন্ত নির্মাণ করা হয়নি। নতুন ভবন তৈরি, শ্রেণীকক্ষ সম্প্রসারন, আসবারপত্র, পয়নিস্কাসন ব্যবস্থার সমস্যা, পানীয় জলের নানা সমস্যা সমাধানে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
সরই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফরিদ উল আলম জানান, দুর্গম পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় আশপাশে আর কোন বিদ্যালয় নেই। তবে বিদ্যালয়ে নানা সমস্যা বিরাজ করছে, একটি ভবনের অতি প্রয়োজন।
সমস্যা সমাধানে শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপ কামনা করে দ্রুত বিদ্যালয় ভবন নির্মাণের দাবী করেছেন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও বিদ্যালয়টির শিক্ষকরা।
লামা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা যতীন্দ্র মোহন মন্ডল বলেন, বিদ্যালয়ের নানান সমস্যার বিষয়ে আমরা অবগত আছি। কিন্তু নতুন ভবন না আসা পর্যন্ত কষ্ট করতে হবে।

আরও পড়ুন