বান্দরবানের রুমা- বগালেক রাস্তায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতেদর রেমাক্রীপ্রাংসা ইউনিয়নের নিজ গ্রাম দুর্গম থাইক্ষ্যং পাড়ায় দাফন করা হবে।
বুধবার (২২ মার্চ) বিকালে মা মেয়েসহ পাঁচ নারীকে খ্রিষ্ট ধর্ম ও সামাজিক নিয়ম অনুযায়ী কবর দেয়া হবে। এ তথ্য নিশ্চিত করেন রেমাক্রীপ্রাংসা ইউপি চেয়ারম্যান জিরা বম।
মুঠোফোনে ইউপি চেয়ারম্যান জিরা বম বলেন বুধবার (২১ মার্চ) সকালে মুনলাই পাড়া থেকে নিহত আত্মীয় স্বজন ও পাড়াবাসীরা রাস্তার একটি অংশে কাঁধে বহন করে এবং চাঁদের গাড়িতে করে রুমা সদর থেকে ২৮কিলোমিটার দূরে থাইক্ষ্যং পাড়ায় বিকাল ৪টায় লাশের কফিন পৌঁছান।
সূত্রমতে, রুমার রেমাক্রী প্রাংসা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিরা বম বলেন, আহত ও নিহতরা সবাই রেমাক্রী প্রাংসা ইউনিয়নের ৩নম্বর ওয়ার্ড এলাকার বাসিন্দা এবং তারা রুমা সদরে ভিজিডি কর্মসূচি আওতায় জমাকৃত সঞ্চয় ফেরত টাকা উত্তোলন করতে আসছিল ।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সূত্রে জানা যায়, সোমবার(২০ মার্চ) বান্দরবানের রুমা বগালেকের ঝুঁকি পূর্ণ ঢালু রাস্তায় যাত্রীবাহী দুটি টিএস গাড়ী (মিনি ট্রাক) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আরেকটি ট্রাকে ধাক্কা দিলে খাদের নীচে পড়ে গেলে ঘটনাস্থলে পাঁচ নারীসহ ছয়জন নিহত হন।
নিহত পাঁচ নারী হলেন- থাইক্ষ্যং পাড়ার বাসিন্দা লালমুনায়াত বম’র স্ত্রী নুনথারময় বম(৩৫), সানসোয়ালের মেয়ে লিমময় বম(২৩), স্বামী জৌমুনরেম বমের স্ত্রী লালভারকিম (৪০) ও তার মেয়ে জিংঠাতসিয়াম(১৫) ও মুনথাং বমের স্ত্রী জিংহোম বম(৪৫) ।
নিহত শ্রমিক হ্লাগ্যপ্রু খিয়াং(৪৫) বান্দরবান সদর উপজেলায় কুহালং ইউনিয়নের গুংগুড়ো পাড়ার বাসিন্দা বলে জানা গেছে। নিহতের লাশ সোমবার রাত সাড়ে তিনটার দিকে গুংগুড়ো পাড়ায় নিজ বাড়িতে পৌছেন।
কুহ্লালং ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের সদস্য উসামং খিয়াং বলেন, আজ বুধবার (২২ মার্চ) বিকালে সামাজিক নিয়মে পাড়ার কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
সূত্রমতে, এই সড়ক দুর্ঘটনায় আরো ১৪ জন আহত হন। তাদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তিনজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে এবং চারজনকে বান্দরবানে সদর হাসপাতালে পাঠানো হয় বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বামংপ্রু।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মামুন শিবলী বলেন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আশঙ্খাজনক তিনজনের একজনকে সফল অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। আরও দুইজনকে আজ কালের মধ্যে অস্ত্রোপচার করা হবে বলে সংশ্লিষ্টরা তাঁকে জানিয়েছেন। এ কথা বলেন- ইউএনও মামুন শিবলী ।
থানচি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান উহ্লাচিং মারমা বলেন, এর আগে রুমা উপজেলায় কোনো সড়ক দুর্ঘটনায় একসাথে এতো কখনো প্রাণ হারায়নি।
স্থানীয়রা সুত্রে জানা যায়, গত ২০ মার্চ বান্দরবানের রুমার রেমাক্রীপ্রাংসা ইউনিয়নের সুনসং পাড়া ও থাইক্ষ্যং পাড়া থেকে ট্রাক গাড়িতে করে রুমা বাজারে আসছিল। যাত্রী বোঝাই ট্রাকটি বগালেক ও কমলাবাজার ঠিক মাঝামাঝি এলাকায় পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ ঢালুতে নামার সময় রুমার দিক থেকে মালবোঝাই পেছনে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হাড়িয়ে সামনে থাকা গাড়িকে সজোড়ে ধাক্কা দিলে দুটি গাড়ি পাহাড়ের গভীর খাদে পড়ে। এতে পাঁচজন নারী ও একজন শ্রমিকসহ ঘটনাস্থলে ছয়জন নিহত এবং ১৪জন আহত হন।