২০০৫ সালে পড়াশোনার উদ্দেশ্যে আমার পাকাপোক্ত ভাবে ঢাকায় আসা। ঢাকা আমার জন্য তখন একেবারে নতুন একটা শহর। একদিনের ঘটনা…. মিরপুরের এক চায়ের দোকানে বসে আছি;
ঠিক আমার পাশেই একটা লোক “তিনি কোনো একটা প্রসঙ্গে বান্দরবান নিয়ে কথা বলছিলেন, বিস্তারিত না বলে সোজাসাপ্টা উনার কথার সারমর্ম হচ্ছে “বান্দরবানে দিনে দুপুরে মানুষ অপহরণ করা হয়, চাঁদাবাজি নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা, ওখানকার মানুষ গুলোও ভীষণ হিংস্র প্রকৃতির …।
অনেক্ষন ধরে উনার কথা সহ্য করলাম, তারপর শুধু জিজ্ঞেস করলাম আপনি কি বান্দরবান কোনদিন গেছেন? উনি বললেন, না যাইনি। তাহলে জানলেন কেমনে? শুনেছি …।উনার উত্তর শুনে কিছুটা কবিতার সুরে বললাম “চিলে কান নিয়ে গেছে শুনেই চিলের পিছে না দৌড়ে আগে নিজের কানে হাত দিয়ে কান টা জায়গা মত আছে কিনা সেটা জেনে নেয়া টা বুদ্ধি মানের কাজ হতোনা!?
এবার একটু পেছনের দিকে ফিরে যাই, সাল টা সম্ভবত ২০০১ সাল। (সাল টা আসলে আমার সঠিক মনে নেই) । বান্দরববান রাজার মাঠে আওয়ামী লীগের বিশাল জনসভা হচ্ছে, সেখানে সেদিন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় বড় বড় সব নেতারা উপস্থিত। প্রধান বক্তা ছিলেন নুরে আলম সিদ্দিকী ..। উনার দেওয়া বক্তৃতার কয়েকটি লাইন আজো মনের মধ্যে গেঁথে আছে। উনি বলেছিলেন আমি যখন বান্দরবানের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হচ্ছি আমার স্ত্রী তখন জায় নামাজে বসে আল্লাহর কাছে আমার জন্যে দোয়া করছেন, কারণ তার ধারণা “বান্দরবান খুব মারাত্মক জায়গা ” । কিন্তু এখানে এসে আমি কি দেখলাম, আমি তো বাংলদেশের অনেক জায়গায় ঘুরে বেড়িয়েছি, বান্দরবানের মত এত চমৎকার সৌহার্দ্যপূর্ণ জায়গা আমি আর কোথাও দেখিনি …। আমি আমার ঢাকার বন্ধুদের এবং বাংলদেশের বাকি ৬৩ জেলার সব মানুষকে গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি আপনি যদি এককোটি টাকা হাতে নিয়ে বান্দরবান শহরে সারাদিন ঘুরেন ছিনতাই তো দূরের কথা কেউ সে টাকার দিকে ফিরেও তাকাবে না….. আমি আপনাদের দ্বিধাহীন কণ্ঠে বলতে চাই বান্দরবান বাংলদেশের সব থেকে নিরাপদ এক জনপদের নাম… । বিশ্বাস না হলে নিজেই এসে দেখে যেতে পারেন।