পরিবারের সাথে ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে চট্টগ্রাম থেকে পানছড়িতে বাড়ি আসার সময় এক মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘটনায় প্রাণ হারানো এরশাদ আলী (৩৭)। মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে খাগড়াছড়ির জেলা সদরের আলুটিলা নামক এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। এই খবরে এরশাদ আলীর মোহাম্মদপুরস্থ বাড়িতে দেখা যায় শোকের মাতম। ছেলে-মেয়ের কান্নায় পরিবেশ যেন নিস্তব্দ। সান্তনা দেবার ভাষা যেন হারিয়ে ফেলেছে এলাকাবাসী। পরিবারের একমাত্র উপার্জনশীল ব্যক্তির মৃত্যুতে মর্মাহত পুরো গ্রামবাসী। সরেজমিনে মোহাম্মদপুর গ্রামে গিয়ে এরশাদ আলীর চাচা আ: রশিদ ও আ: মালেকের সাথে কথা বলে জানা যায় পরিবারটির করুণ দশার কাহিনী। তারা জানায়, এরশাদ আলী পানছড়ি মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাশ করে। গরীব পরিবারের সন্তান বলে লেখাপড়ার বেশী দুর না গিয়ে ঢুকে পড়ে কর্মজীবনে। ২০০৩ সালেও একবার গভীর নলকুপ বসানোর কাজ করতে গিয়ে প্রায় ষাট ফুট উচু থেকে পড়ে গিয়ে মরতে মরতে বেঁচে যায় এরশাদ। তখন তার কোমর ভেঙ্গে যায়। ভাঙ্গা কোমর নিয়ে চট্টগ্রাম শহরে পাড়ি দিয়ে রিকসা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ শুরু করে। পারিবারিক জীবনে তার এক ছেলে ও দুই মেয়ে। ছেলে অনিক পানছড়ি বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর মানবিক বিভাগে, মেয়ে লীজা-লিমা উত্তর মোহাম্মদপুর আনন্দ স্কুলের শিক্ষার্থী ও স্ত্রী ইয়াছমিন গৃহকর্মীর কাজ করে কোন রকমে সংসারে দু’বেলা চুলো জ্বালায়। এলাকাবাসী জানায়, তাদের নিজস্ব কোন জায়গা-জমি নেই, গনি মিয়ার বাসায় ভাড়াটিয়া হিসেবে কোন রকম মাথা গোজার ঠাই নিয়েছে। এই নীরিহ পরিবারের এতিম সন্তানদের লেখা-পড়া এখন অনিশ্চিত বলে অনেকেই জানায়। এলাকাবাসী সার্বিক সহযোগিতা দিয়ে তাদের লেখা-পড়া চালিয়ে নিতে হবে বলে জানান ইউপি সদস্য মো: মতিউর রহমান। তিনি আরো বলেন, এরশাদের মরদেহ পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।