পাহাড়ের জীবনজীবিকার অর্থনীতির প্রধান উৎস পর্যটনখাতকে বাঁচাতে পর্যটক ভ্রমনে নিরুৎসাহী করা সরকারি সিদ্ধান্ত তুলে নেয়ার অনুরোধ জানিয়েছে পর্যটন সংশষ্ট ব্যবসায়ীবৃন্দ।
আজ মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে রাঙামাটি সদরের মগবান এলাকায় অবস্থিত বার্গি লেক রেস্টুরেন্টে পর্যটন সংশ্লিষ্ট অংশীজনের সাথে মতবিনিময় সভায় তারা এ অনুরোধ জানান।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান, পুলিশ সুপার ড. এস এম ফরহাদ হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও পৌর প্রশাসক নাসরীন সুলতানা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রিসোর্ট ওনার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি তনয় দেওয়ান।
সভায় জেলা প্রশাসক মোঃ মোশারফ হোসেন খান বলেন, পর্যটন শিল্পের সাথে এ অঞ্চলের জীবনজীবিকা জড়িত। যেকারণে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে, সেটা যাতে দীর্ঘায়িত না হয় সে চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এখানকার মানুষের জীবনজীবিকা যাতে স্থবির হয়ে না পড়ে সেটা মাথায় নিয়ে পর্যটন উন্নয়নে কাজ করছি। পর্যটকদের জন্য ইনফরমেশন সেন্টার খোলার চেষ্টা চলছে। রাঙামাটি শহরকে সৌন্দর্য্যমন্ডিত শহর করার পরিকল্পনা রয়েছে।
পুলিশ সুপার ড. এস এম ফরহাদ হোসেন বলেন, গত পনের বছরের পুলিশের দায়িত্ব আমরা নিব না, এখন কিছু হলে সেটা দেখা হবে। পাহাড়ের পর্যটন শহরের নিরাপত্তাসহ অন্যান্য সমস্যা সমাধানে পুলিশ প্রশাসন আন্তরিক রয়েছে। আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি, যতদুুুত সম্ভব পর্যটকরা যেন রাঙামাটি ভ্রমনে আসতে পারে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও পৌর প্রশাসক নাসরীন সুলতানা বলেন, পাহাড়ের যে প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য, এখানকার অর্থনীতি হওয়া উচিত পর্যটন কেন্দ্রিক। নানা সীমাবদ্ধতায় তা হয়ে উঠছে না। পর্যটন উন্নয়নে পর্যটনবান্ধব ব্যবসা, এন্টারটেইন গড়ে তোলা উচিত। পাহাড়, প্রকৃতি,হ্রদকে কেন্দ্র করে এটি হতে পারে। দায়িত্ব নেওয়ার পর পর্যটন শহর ব্যবস্থাপনায় হতাশ হয়েছি। পর্যটন শহরের নাগরিকরা সভ্য, শৃঙ্খলিত সচেতন না হলে পর্যটন উন্নয়ন বাধাগ্রস্থ হবে। পৌর শহরকে পর্যটন বান্ধব গড়ে তুলতে বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।
রাঙামাটি জেলা লঞ্চ মালিক সমিতি সভাপতি মঈন উদ্দিন সেলিম বলেন, পর্যটন ব্যবসা বন্ধ থাকলে আমাদের অপুরনীয় ক্ষতি হয়ে যাবে। এ অঞ্চলে প্রতিটি সেক্টর পর্যটন ব্যবসার সাথে জড়িত। দীর্ঘদিন ধরে এ খাতে অস্থিরতা চলছে। এ অস্থিরতা কাটিয়ে সহসা পর্যটক ভ্রমন অনুমতি, এছাড়া নিরাপত্তা ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটাতে হবে।
রিসোর্ট ওনার্স এসোসসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ললিত সি চাকমা বলেন, হঠাৎ করে পার্বত্য চট্টগ্রামে পর্যটক ভ্রমনে নিষেধাঞ্জা মনে হচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রামে যূদ্ধাংদেহী পরিস্থিতি চলছে। সরকারের এ সিদ্ধান্তে পাহাড়ের খেটে খাওয়া মানুষ ক্ষতির মূখে পড়েছে। তিনি সরকারের প্রতি এ সিদ্ধান্ত বিবেচনা করা হবে।
আবাসিক হোটেল মালিক সমিতর যুগ্ম সম্পাদক মোঃ মোস্তফা কামাল বলেন, আবাসিক রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীরা দিনের পর দিন লোকসান গুনছে। পর্যটক নাই, ব্যবসা মন্দা চলছে। যতদ্রুত সম্ভব এর থেকে পরিত্রান পাওয়া দরকার।
সভায় পর্যটন সমবায় সমিতির সভাপতি মোঃ সাইফুল ইসলামৎ, লঞ্চ মালিক সমিতির প্রতিনিধি মোঃ মামুন, অটোরিক্সা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক মিজানুর রহমান বাবু, তাত শিল্প সমিতির সভাপতি বাবলা মিত্র, রাঙামাটি জেলা হাউস বোট এসোসিয়েশন সাধারন সম্পাদক মোঃ মিজানুর রহমান, ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশন প্রতিনিধি পারভেজ আহমেদ প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
মতবিনিময় সভায় পর্যটন সংশ্লিষ্ট ১৩টি সংগঠনের প্রতিনিধি, প্রিন্ট ও ইলেকট্রিক মিডিয়ার সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।