দূর্গম জনপদের স্বপ্নবাজ একদল শিশু ফুটবল যোদ্ধা। তাদের ছোট্ট দুটি পায়ের ফুটবল শৈলিতে মুগ্ধ সবাই। একে একে ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা ও বিভাগ পর্যায়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ফুটবল টূর্নামেন্টের শিরোপা ঘরে তুলে তারা পাহাড়ের প্রতিনিধিত্ব করছে। বলছি, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী আলী মিয়া পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মহিলা ফুটবল দলের কথা।
ক্ষুদে শিশুরা (নারী) চট্টগ্রাম বিভাগের প্রতিনিধি হয়ে এখন বঙ্গবন্ধু ষ্টেডিয়ামের স্বপ্নের সবুজ মাঠ মাতাতে তারা ঢাকায়। টূর্নামেন্টের প্রথম প্রতিপক্ষ ঢাকা বিভাগের টাঙ্গাইল জেলা, তারা মুখোমুখি হবে আজ।
স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রবিন চাক জানান, শিক্ষকরা তাদের সব উজাড় করে স্কুল মহিলা ফুটবল দলকে সার্বিক সহযোগীতা করেছেন। পড়ালেখার পাশাপাশি ফুটবল মাঠে বল নিয়ে দৌড়ানো এবং কিভাবে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করে সহজে জিততে হয় এর প্রশিক্ষন দেয়া হয়। তিনি স্থানীয় সাবেক ফুটবলার এবং স্কুলের দপ্তরী কাম প্রহরী অংক্যালা মার্মাকে ধন্যবাদ জানান। যার অক্লান্ত পরিশ্রমে ইউনিয়ন পেরিয়ে এখন পাহাড়ের এই শিশুরা রাজধানী ঢাকায়। এ সাফল্যে তিনি এলাকার রাজনৈতিক, সামাজিক, গণমাধ্যমকর্মীসহ ফুটবলপ্রেমীদের ধন্যবাদের পাশাপাশি সকলের নিকট দোয়া কামনা করেছেন।
সহকারী শিক্ষক মোঃ ইদ্রিস পাহাড়বার্তাকে জানান, চট্টগ্রাম বিভাগীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর দীর্ঘদিন প্রশিক্ষন সামগ্রীর অভাবে খেলার বাহিরে ছিল দলটি। সহকারী শিক্ষকরা নিজেদের উদ্দ্যেগেই তাদেরকে ফুটবল ক্রয় করে দেন এবং নিয়মিত প্রশিক্ষন করার সুযোগ করে দেন।
এদিকে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ক্যাচিও মার্মা পাহাড়বার্তাকে বলেন, দীর্ঘদিন এক সাথে খেলার মধ্যে থাকায় তাদের মধ্যে একটি ইউনিটি তৈরী হয়েছে। সেই ইউনিটিই প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে সক্ষম বলে জানালেন তিনি। তিনি আশা করেন, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ফুটবল টূর্নামেন্টের দেশ সেরা হবেন বাইশারীর আলী মিয়া পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মহিলা ফুটবল দল।
দলের অধিনায়ক ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী নায়েচাই মার্মা পাহাড়বার্তাকে বলেন, দূর্গম জনপদের ইট-পাথুরে ভরা মাঠে অভ্যস্থ আমরা। সবুজ মাঠে খেলতে অভ্যস্থ না হলেও দলের খেলোয়াড়দের মাঝে ব্যাপক সমঝোতা এবং স্পিরিট রয়েছে। তাছাড়া দলের সবাই সবুজ মাঠে খেলতে উম্মুখ হয়ে আছে। তবে লক্ষ্য চ্যাম্পিয়ন বলে জানালেন অন্যান্য খেলোয়াড়রাও।
প্রশিক্ষক সহকারী শিক্ষক হারুনুর রশিদ পাহাড়বার্তাকে বলেন, তিনি ক’দিন পূর্বে স্কুলে যোগদান করেছেন এবং ফুটবলারদের তেমন ভাবে দেখার সুযোগ হয়নি, তবে তাদের মাঝে টেকনিক্যাল স্পিরিটটা বেশী।